আর নয় মাদক
মাদক বাংলাদেশের জাতীয় জীবনের সমস্যাগুলোর অন্যতম একটি সমস্যা। মাদকসক্ত সমাজ জাতির পঙ্গুত্ব বরণের অন্যতম কারণ। আসুন মাদক সম্পর্কে জানি এবং মুক্ত আলোচনা করি।
মাদক কি?
মাদক দ্রব্য হলো একটি ভেষজ দ্রব্য যা ব্যবহারে বা প্রয়োগে মানবদেহে মস্তিস্কজাত সংজ্ঞাবহ সংবেদন হ্রাসপায় এবং বেদনাবোধ কমায় বা বন্ধ করে। মাদক দ্রব্যের বেদনানাশক ক্রিয়ার সাথে যুক্ত থাকে তন্দ্রাচ্ছন্নতা, আনন্দোচ্ছাস, মেজাজ পরিবর্তন, মানসিক আচ্ছন্নতা, শ্বাস প্রশ্বাস অবনমন, রক্তচাপ হ্রাস, বমনেচ্ছা ও বমি, কোষ্টবদ্ধতা ও মূত্ররাস দেখা দেয়।
মাদক দ্রব্যকে সহজভাবে বলা যায় যা গ্রহণে মানুষের স্বাভাবিক শারীরিক ও মানসিক অবস্থার উপর প্রভাব পড়ে এবং যে দ্রব্য আসক্তি সৃষ্টি করে, তাই মাদকদ্রব্য।
মাদকাসক্তি কি?
মাদকাসক্তি হলো মানুষের এমন একটি অবস্থা যা ব্যবহারে মানুষ অভ্যস্থ হয়ে পড়ে এবং নির্দিষ্ট সময় অন্তর মাদক গ্রহণের অভ্যাস্থ হওয়াই মাদকাসক্ত। মাদকাসক্ত আক্রান্ত যে কেউ হঠাৎ মাদক গ্রহণ না করতে দিলে নানান ধরণের উপসর্গ দেখা দেয়।
মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে সাধারণত ১৫ থেকে ৩৫ বছরের বয়সের মানুষ যার হার ৭০ ভাগ। অন্যদিকে মাদক গ্রহণের গড় বয়স ২২ বছর।
মাদকাসক্তির কারণঃ
মাদকাসক্তি একটি সমাজিক ব্যাধি তাই কি কারণে এর প্রভাব ব্যাক্তি জীবনে প্রতিয়মান হয় তা বলা খুবই কঠিন।
সাধারণ তিনটি কারণে মাদক গ্রহণের প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিতঃ
ক) হতাশাঃ হতাশার গ্রস্ত ব্যক্তিদের মাঝেই মাদক গ্রহনের প্রবণতা লক্ষ করা যায়।কোন করণে মানুষের স্বপ্ন ভঙ্গ হলে মানুষ হতাশা গ্রস্থ হয় আর তখনই মাদক গ্রহণে উৎসাহী হয়ে উঠে।
খ) কৌতূহল নিবারণ ও প্রবল আগ্রহেঃ মানুষ সৃষ্টিশীল তাই তাই কৌতূহুল থাকে সবসময়। নতুনকে জানার ইচ্ছে এবং আগ্রহ মাদকের সাথে পরিচয় ঘটায় এবং এভাবেই মাদক গ্রহণে অভ্যস্থ করে তুলে।
গ) কুসংগঃ কুসংগ মানুষকে বিপদগামী করে তাই মাদক গ্রহনে কুসংগই একটি বড় ভূমিকা পালন করে।
মাদকাসক্তি স্বাস্থ্যের উপর প্রভাবঃ
মানসিক অবস্থার অবনতি তথা মানসিক রোগ সৃষ্টি সহ একাধিক রোগ সৃষ্টির জন্য মাদক গ্রহণই দায়ি যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।মদক গ্রহণকারীরা একাধিক ব্যক্তি একই সিরিঞ্জ ব্যবহার করে যার ফলে মরণ ব্যাধি এইডস হওয়ার সঙ্কা থাকে। এছাড়া হেপাটাইটিস, ফুসফুসে ক্যান্সার, ক্যান্সার, স্ট্রোক, হৃদরোগ সহ যকৃত,মস্তিস্ক ও মেরুদন্ডে রোগ হতে পারে।
মাদকাসক্তি সমাজ ও পরিবারের জন্য হুমকিঃ
যে কোন পরিবার এবং সমাজের জন্য মাদকসক্ত ব্যক্তি হুমকি স্বরুপ। পরিবাবারের সদস্যদের সাথে কথায় কথায় মনমালিন্য ছাড়াও অতিরিক্ত টাকা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন উপায় বের করে আসক্তি যে কেউ। টাকা না পেলে ছিনতাই, ধর্ষন, খুন সহ নানাবিধি অপরাধ সংগঠিত করে মাদকাসক্ত ব্যক্তি। যা সমাজে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি সহ শৃঙ্খলা নষ্ট করতে যথেষ্ট ভুমিকা রাখে। তাই কোন পরিবার তথা সমাজ তথা জাতির জন্যই মাদকাসক্ত অভিশাপ।