ইপিজেডে মায়ের প্রেমিকের হাতে খুন হলো দুই বছরের শিশু

দুই বছরের শিশু ওমর ফারুকের গায়ে সিগারেটের আগুনের ছোপ ছোপ দাগ। নির্মমভাবে পেটানো হতো তাকে। একদিন দেয়ালের সঙ্গে সজোরে ধাক্কা দেওয়ার পর জ্ঞান হারায় ছোট্ট শিশু ফারুক। পরে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েও বাঁচানো যায়নি ফারুককে। মায়ের কথিত প্রেমিকের বিভৎস নির্যাতনেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে শিশু ফারুক।

এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামের ইপিজেড থানাধীন আকমাল আলী রোডের পকেট গেইট এলাকায়।

শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় শিশু ফারুকের।

এই ঘটনায় শিশু ফারুকের মায়ের কথিত প্রেমিক মো. ইয়ামিনকে গ্রেপ্তার করেছে ইপিজেড থানা পুলিশ।

ইয়ামিন গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানার আবছার আলীর ছেলে।

মামলার নথি ও পুলিশ সূত্র জানা গেছে, আকমল আলী রোড এলাকায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন ফারুকের মা রওশন আরা বেগম ও তার কথিত প্রেমিক মো. ইয়ামিন। বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) রওশন আরা তার ছেলেকে বাসায় রেখে গার্মেন্টসে যান। ওইদিন সাড়ে ১২টার দিকে বাসায় থাকা প্রেমিক ইয়ামিন শিশু ফারুককে মারধর করে। মারধরের একপর্যায়ে দুই বছরের শিশু ফারুকের চোয়াল ধরে দেয়ালে ধাক্কা দেয় ইয়ামিন।

Yakub Group

এরপর জ্ঞান হারায় ফারুক। পরে রাতে রওশন আরা বাসায় দেখে তার ছেলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। পরে ফারুককে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যায় রওশন আরা। সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। চট্টগ্রাম মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ বেড খালি না থাকায় পাচলাইশ এলাকার হলি হেলথ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় শিশু ফারুককে। সেখানেই শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফারুকের মৃত্যু হয়।

ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হোছাইন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ঘটনা পর অভিযুক্ত ইয়ামিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ভিকটিম ফারুকের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় সিগারেটের আগুনে পোড়া দাগ রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর ইয়ামিন জানায়, বিভিন্ন সময় শিশু ফারুককে নির্যাতন করতেন সে। ৬ ডিসেম্বরও ফারুকের গায়ে সিগারেটের আগুন দেয় ইয়ামিন। কী কারণে ইয়ামিন এমন কাজ করেছে সেটি নিয়ে তদন্ত চলছে।’

এ ঘটনায় রোববার (১০ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ উপর পুলিশ কমিশনার (বন্দর) শাকিলা সুলতানা।

তিনি বলেন, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল রওশন আরা ও ইয়ামিনের মাঝে। রওশন আরার আগের ঘরের ছেলে ফারুক। বিভিন্ন সময় ফারুকের ওপর নির্যাতন করতো ইয়ামিন। এসব বিষয় পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে ইয়ামিন।

আরএম/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!