চট্টগ্রামে কাস্টমস গোয়েন্দার হাতে ধরা খেল ঢাকার পোশাক কারখানার জালিয়াতি

৭ কন্টেইনার পণ্য আটক

ঢাকার মোল্লার টেকের ‘সাবিহা সাইকি ফ্যাশনের’ ৯টি চালান তদন্ত করে জালিয়াতি করে রপ্তানি চালানের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের সত্যতা পাওয়া গেছে। এসব পণ্য চালান রপ্তানিতে ওই প্রতিষ্ঠান ১৫টি বিল অব এক্সপোর্ট দাখিল করেছিল। কাগজপত্র যাচাই করে জালিয়াতির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া পেয়েছে চট্টগ্রামের শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।

তদন্তে দেখা গেছে, জালিয়াতির মাধ্যমে পণ্য মালয়েশিয়া, সুদান, ইউএই, ত্রিনিদাদ, টোবাগো নেওয়ার কথা বলে রপ্তানি করলেও এর বিপরীতে পর্যাপ্ত টাকা দেশে আসেনি। এর ফলে বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) অভিযান চালিয়ে ৪০ ফুট দীর্ঘ ৭ কন্টেইনার পণ্য আটক করেছে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর।

চালানগুলোর রপ্তানি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। ৯ চালানে ১১৮ মেট্রিক টন পণ্য বিদেশে পাঠানো হচ্ছিল। যার ঘোষিত মূল্য ৩ কোটি টাকা। তবে কি পরিমাণ টাকা ওই প্রতিষ্ঠান পাচার করেছে, তার সঠিক তথ্য দিতে পারেনি কাস্টমস হাউস।

আটক চালানে টিশার্ট ও লেডিস ড্রেস রপ্তানির ঘোষণা থাকলেও কায়িক পরীক্ষায় বেবি ড্রেস, জিন্স প্যান্ট, শার্ট, লেগিন্স, শালসহ ঘোষণা বহির্ভূত অসংখ্য পণ্য পাওয়া গেছে। যার ওজন ১১৮ টন এবং এর ঘোষিত মূল্য ৩ কোটি টাকা।

দক্ষিণ হালিশহরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট লাইম্যাক্স শিপার্স লিমিটেড এসব চালানগুলো বিদেশে পাঠানোর দায়িত্বে ছিল।

এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি উত্তর পতেঙ্গার এসএপিএল (ওসিএল) কন্টেইনার ডিপোতে অভিযান করে চট্টগ্রামের শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সাবিহা সাইকি ফ্যাশনের চালানের কাগজপত্র জব্দ করে। এর প্রেক্ষিতে তদন্তে নামে শুল্ক গোয়েন্দা দপ্তর।

Yakub Group

কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. শাকিল খন্দকার বলেন, ‘বৃহস্পতিবার এসব রপ্তানি চালানের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। সার্বিক অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের যুগ্ম পরিচালক মো. সাইফুর রহমানকে আহ্বায়ক করে ৮ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

এর আগে ৩১ জানুয়ারি জব্দ করা এসব দলিল যাচাই করার জন্য অগ্রণী ব্যাংকে চিঠি দেওয়া হয়। এর জবাবে ব্যাংকটির প্রধান শাখা থেকে জানানো হয় সাবিহি সাইকি ফ্যাশন তাদের গ্রাহক না এবং বিল অব এক্সপোর্ট সংশ্লিষ্ট ইএক্সপিগুলো এই ব্যাংকের অন্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের নামে ইস্যু করা। এরপর গোয়েন্দা কর্মকর্তারা নিশ্চিত হন ভুয়া ইএক্সপি এবং এলসি কিংবা সেলস কন্ট্রাক্ট ব্যবহার করে পণ্য রপ্তানি করা হচ্ছিল।

রপ্তানি চালানগুলোর বিপরীতে কোনো বৈদেশিক মুদ্রা বৈধ পন্থায় দেশে না আসায় মানি লন্ডারিং সংঘটিত হয়েছে। এরপর চালানগুলোর কায়িক পরীক্ষার জন্য সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট লাইম্যাক্স শিপার্স লিমিটেডকে চিঠি দিলেও সহযোগিতা করেনি তারা। প্রতিষ্ঠানটির ১৫টি চালানের মধ্যে ৯টি ডিপোতে পাওয়া যায়। বাকিগুলো বিদেশে চলে গেছে।

২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে একই রপ্তানিকারকের ৯৪টি চালানের খোঁজ মিলেছে। এর মধ্যে ৮৫টি বিদেশে চলে গেছে। যার পরিমাণ ৮৮২ মেট্রিক টন, ঘোষিত মূল্য ২২ কোটি টাকা।

এএস/আরএ/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm