s alam cement
আক্রান্ত
৯৪৮৪৮
সুস্থ
৬০৯৩৪
মৃত্যু
১১২১

চট্টগ্রামে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের প্রথম রোগী জটিল অপারেশনের পর ভালোই আছেন

আইসিইউ থেকে আনা হল কেবিনে

0

জরুরি অপারেশনের পর চট্টগ্রামে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী ফেরদৌস বেগমের শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে। গত ৩১ জুলাই থেকে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের একমাত্র ওষুধ ‘অ্যামফোটেরিসিন-বি’ ইনজেকশন দেওয়া শুরু হয় ওই নারীকে।

এদিকে সোমবার (৯ আগস্ট) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওরাল এন্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি বিভাগের নেতৃত্বে ইএনটি ও চক্ষু বিভাগের সহযোগিতায় ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত এই রোগীর অপারেশন সফলভাবে শেষ হয়।

আইসিইউতে দুদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) থেকে অবস্থার উন্নতি হওয়ায় বর্তমানে তাকে কেবিনে নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে রেখেই তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রোগীর মেজ ছেলে বেলাল হোসাইন।

এর আগে ওই রোগীর চিকিৎসার তত্ত্বাবধানে থাকা ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষ জয় জানিয়েছিলেন, রোগীর সংক্রমণ এখন পর্যন্ত চোখেই সীমাবদ্ধ থাকলেও এটি যাতে তার নাক ও মুখে নতুন করে না ছড়ায় সেজন্য দ্রুত একটি জটিল অপারেশন করার কথা ভাবছেন তারা।

জানা গেছে, গত সোমবারের (৯ আগস্ট) জটিল ওই অপারেশনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ওরাল এন্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. আকরাম পারভেজ এবং এসোসিয়েট প্রফেসর ডা. আজম খান। দীর্ঘ চার ঘন্টার সেই অপারেশনে ফেরদৌস বেগমের মুখের ওপরের বাম পাশের চোয়াল ও আশপাশের টিস্যু অপসারণ করা হয়।

অপারেশনে অংশগ্রহণ করেন ইএনটি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোস্তফা মাহফুজুল আনোয়ার, মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষ জয়, ডা. সুযত পাল, ডা. এম এ হাসান।

Din Mohammed Convention Hall

জটিল এই অপারেশনে এছাড়া আরও ছিলেন ডা. আশফাক আহমেদ, ডা. মনজুর-ই-মাহমুদ, ডা. সঞ্জয় দাশ, ডা. জাবেদ-বিন-আয়ুব সাগর, ডা. তারান্নুম আফরীন, ডা. আশফাক আহমেদ, ডা. সুপ্রণ বিশ্বাস, প্রস্থোডন্টিক্স বিভাগের ডা. কামাল উদ্দিন, চক্ষু বিভাগের ডা. তনুজা তানজীন, ডা. মেজবাহ ও এনেসথেসিয়া বিভাগের ডা. হারুন অর রশিদ, ডা. আজিজ ও ডা. সত্যজিত।

রোগীর ছেলে বেলাল হোসাইন জানান, তার মায়ের চিকিৎসার জন্য যে ‘অ্যামফোটেরিসিন-বি’ নামের দুষ্প্রাপ্য যে ইনজেকশনটি প্রয়োজন, বিভিন্ন উৎস থেকে তার কিছু কিছু সংগ্রহ করে এখন ডাক্তাররা তার মায়ের শরীরে প্রয়োগ করছেন।

দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়ার বাসিন্দা ৬০ বছর বয়সী ওই নারী ৩ জুলাই করোনা আক্রান্ত হয়ে করোনামুক্ত হন গত ১৫ জুলাই। তবে এরপর তার দাঁতের ইনফেকশন দেখা দেওয়ায় তাকে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিছুদিন পরে তার চোখে ইনফেকশন দেখা দেয়। পরে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এমএ হাসান ওই রোগীকে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপসর্গ থাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বারডেম হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। এর মধ্যেই করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ২৩ জুলাই সিএসসিআর হাসপাতালে মারা যান ওই নারীর স্বামী। এটি ছাড়াও লকডাউন পরিস্থিতির কারণে কিছুটা দেরিতে গত ২৫ জুলাই ওই নারীকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পরে গত ২৮ জুলাই রাতে মেডিকেল বোর্ড বসিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন, ষাটোর্ধ ওই নারী ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত।

এদিকে গত ৬ আগস্ট চট্টগ্রামে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত আরও এক রোগীর খোঁজ মেলে। এবারের রোগী ৪০ বছর বয়সী এক পুরুষ, যার চোখে এ ছত্রাক বাসা বাঁধে। তিনিও বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। কর্ণফুলী উপজেলার বাসিন্দা ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী এ রোগী করোনার দুই ডোজ টিকা দিয়েছেন এবং আগে কখনও করোনা আক্রান্তও হননি। তবে আগে থেকেই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও অ্যাজমার জটিলতা ছিল রোগীর। মুখের এক পাশে দাঁতের ব্যথাজনিত জটিলতায় তাকে প্রথমে চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়। ডাক্তারের পরামর্শে তাকে ২৫ জুলাই চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর মুখের একপাশ ফুলে যায় তার। এ অবস্থায় নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়। পরে ৬ আগস্ট জানা যায় রোগী ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত। এরপর তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষ জয় জানান, ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের দ্বিতীয় এই রোগীকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাকেও সার্জারি করাতে হবে। তবে সেটি রোগীর শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করবে। এছাড়া এর আগে রোগীকে কিছু ইনজেকশন ও ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।’

সিপি

ManaratResponsive

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।

ksrm