চিটাগংয়ের বোলিংয়ে তছনছ রাজশাহী, হারলো ১১১ রানে
দলনেতা হিসেবে বিপিএলের এবারের আসরে শুরুটা সুখকর হলো না তাসকিনের। ম্যাচ শুরুর আগে আনামুল হক বিজয়কে সরিয়ে তাসকিনকে দায়িত্ব দিলেও, চিটাগংয়ের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ‘বিজয়’ পায়নি দুর্বার রাজশাহী। টুর্নামেন্টের মাঝপথে অধিনায়ক বদলানো নতুন কিছু নয়। তবে চিটাগংয়ের কাছে ১১১ রানের বিশাল হার, ছন্নছাড়া ফিল্ডিং—দলনেতা পরিবর্তনের এমন সিদ্ধান্তকে কিছুটা হলেও প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাবে।

চিটাগং কিংসের ১৯২ রানের জবাবে খেলতে নেমে শুরু থেকেই খেই হারিয়ে ফেলে রাজশাহীর ব্যাটসম্যানরা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তারা। বিনুরা ফার্নান্ডোর করা প্রথম ওভারেই রাজশাহীর ওপেনার মোহাম্মদ হারিসের দুটি ক্যাচ ছাড়েন খালেদ। কিন্তু সেই ব্যর্থতাকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেননি ফার্নান্ডো। ওভারের শেষ বলে তিনি ফেরান আরেক ওপেনার জিসানকে (৪)। দ্বিতীয় ওভারে আরাফাত সানি এসে তুলে নেন হারিসের (৯) উইকেট।
আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান আনামুল হক বিজয় দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনিও ব্যর্থ হন। ব্যাটিংয়ে মনোযোগী হওয়ার জন্য তাকে দলনেতার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলেও তিনি ২১ রান করে ফিরে যান সাজঘরে। তবে এর আগে ইয়াসির আলী (৫) ও আকবর আলীকে (১০) ফেরান শরিফুল।
৫৯ রানে ৫ উইকেট হারানো রাজশাহী আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। দলের খাতায় ২১ রান যোগ করতে বিদায় নেন বাকি ৫ ব্যাটসম্যান।
ব্যাট হাতে হাফ সেঞ্চুরি করা নাঈম বল হাতেও দুর্দান্ত ছিলেন। তিন ওভার বল করে তিনি ৬ রান খরচায় তুলে নেন ২ উইকেট। এছাড়া শরিফুল ২টি এবং ফার্নান্ডো, আরাফাত সানি, রাহাতুল, ফেরদৌস ও শামীম প্রত্যেকে ১টি করে উইকেট নেন।
এর আগে সোমবার (২০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে জিতে চিটাগং কিংসকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় দুর্বার রাজশাহী। শুরুতে তাসকিনের প্রথম ওভারে নাঈমের ক্যাচ ছাড়েন সানজামুল। পরের ওভারে জিসান আলমের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে ফিরে যান উসমান খান (৭)। এরপর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে নাঈম ইসলাম ও গ্রাহাম ক্লার্ক দেয়াল হয়ে দাঁড়ান রাজশাহীর বোলারদের সামনে। দু’জন ওভারপ্রতি ভালো রানরেট তুলছিলেন। দলের সংগ্রহ যখন ৯২ রান, তখনই ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে বিদায় নেন ক্লার্ক। মোহর শেখের থ্রোতে আউট হওয়ার আগে ক্লার্ক ২৮ বলে খেলেন ৪৫ রানের ইনিংস, যেটিতে ছয় ছিল ৩টি ও চার ছিল দুটি।
তৃতীয় উইকেটে নাঈম ও মিথুনের জুটি উইকেটে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দলের খাতায় ১১৯ রান হতেই সানজামুলের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান নাঈম। যাওয়ার আগে তিন ছয় ও পাঁচ চারে খেলেন ৫৬ রানের ইনিংস।
মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান হায়দারকে সঙ্গে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে মিথুন ১১ বলে তুলে নেন ২৫ রান। এরপর দু’বার ‘জীবন’ পাওয়া দলনেতা মিথুন আউট হয়ে গেলেও হায়দার আলী অপরপ্রান্ত আগলে রাখেন। মিথুন আউট হওয়ার আগে ২০ বলে দুই ছয় ও দুই চারে ৩২ রানের মারকুটে ইনিংস খেলেন। এর আগে ক্যাচ ফেলে ১৩তম ওভারে ইয়াসির রাব্বি এবং ১৫তম ওভারে জিশান মিথুনকে দু’বার ‘জীবন’ দেন।
হায়দারের ১৪ বলে ২৫ রানের ঝড়ো ইনিংস ও নিচের সারির ব্যাটসম্যান রাহাতের ১৬ রান শেষে ২০ ওভারে চিটাগংয়ের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ১৯১। তবে বার্ল যদি ১৯তম ওভারে হায়দারের ক্যাচটি নিতে পারতেন, তাহলে হায়দার শেষ ওভারে তিন বলে ১৬ রান তুলে নিতে পারতেন না।
দুর্বার রাজশাহীর এটি টানা দ্বিতীয় হার। এ পরাজয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় পাঁচে রয়েছে তারা।
এদিকে চিটাগং কিংসের এটি দ্বিতীয় বড় জয়। ২০১৩ সালে সিলেট রয়েলসের বিরুদ্ধে ১১৯ রানের জয়টি তালিকার শীর্ষে আছে। বিপিএলের হিসেবে তৃতীয়। তবে এবারের আসরে দ্বিতীয়বারের মতো শতরানের বেশি ব্যবধানে জয় পেয়েছে চিটাগং। বরিশালকে পেছনে ফেলে ১০ পয়েন্ট নিয়ে আবারও তালিকার দ্বিতীয়তে উঠেছে এসেছে তারা।
এমএহক