বান্দরবানের লামা উপজেলার লামা-ফাইতং সড়কের পাশে গাছ ও পাহাড় কেটে কটেজ নির্মাণ করছেন গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও লামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাথোয়াই চিং মারমা। পরিবেশ অধিদপ্তর এবং প্রশাসনের অনুমতির তোয়াক্কা না করেই দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ের গাছ এবং পাহাড় কেটে রাস্তা ও কর্টেজ নির্মাণ করছেন তিনি। দিনের পর দিন প্রকাশ্যে পাহাড় কাটলেও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি আইনি কোনো ব্যবস্থা। ফলে আরও বীরদর্পে কটেজ নির্মাণকাজ এগিয়ে নিচ্ছে তিনি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যান পাহাড় কাটছে। কিন্তু প্রশাসন জেনেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সরেজমিন গিয়েও উপজেলা প্রশাসন পাহাড় কেটে রাস্তা ও কটেজ নির্মাণের বিষয়ে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেয়নি। চেয়ারম্যানের রোষানল এড়াতে মুখ বন্ধ রেখেছেন স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরাও।
তারা আরও বলেন, প্রতিদিনই খননযন্ত্র (এস্কেভেটর) দিয়ে উঁচু পাহাড় কেটে মাটি অপসারণ করে সমতল করা হচ্ছে।
সরেজমিন আরও দেখা গেছে, লামা-ফাইতং সড়কের বদর টিলা নামের পাহাড়ের ওপর কটেজ নির্মাণের জন্য পাহাড়ের গাছ কেটে সাবাড় করা হয়েছে। খনন যন্ত্রের সাহায্যে পাহাড় কেটে সমতল করা হচ্ছে। নির্মাণ করা হয়েছে বাঁশের ঘর। পাহাড়ের বুক চিড়ে তৈরি করা হয়েছে রাস্তা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াই চিং মার্মা বলেন, ‘আমি এই মুহুর্তে ডেঙ্গু আক্রান্ত। কারও সঙ্গে কথা না বলতে চিকিৎসকের নিষেধ আছে। তাই বিষয়ে এখন কথা বলতে পারব না।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তফা জাবেদ কায়সার বলেন, ‘ঘটনাস্থলে একটি অভিযান পরিচালনা করেছি। মাটি কাটার যন্ত্র নষ্ট করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে কেউ উপস্থিত না থাকায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে জেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ের আগে কে বা কারা পাহাড় কাটছে জানতাম না। পরিবেশ অধিদপ্তরকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’
বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ফখর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হবে। তবে চেয়ারম্যান ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ায় এই মুহুর্তে যাওয়া সম্ভব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যানের পাহাড় কাটার বিষয় জানতে চাইলে চেয়ারম্যান একেক সময় একেক কথা জানিয়েছেন। সরেজমিন গিয়ে পাহাড় কাটার প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ডিজে