চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) পদে বড় রদবদল হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা ছয়জন কর্মকর্তাকে সিএমপির বাইরে বদলি করা হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রামের বাইরে থেকে আসছেন দুজন কর্মকর্তা। বদলি হওয়া কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে একই কর্মস্থলে ছিলেন ঘুরেফিরে। এদের একজন প্রায় নয় বছর ধরে সিএমপিতেই ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে উপসচিব মো. মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ বদলি করা হয়।
সিএমপি ছাড়তে হচ্ছে যাদের
প্রজ্ঞাপন অনুসারে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (সরবরাহ) মো. তারেক আহম্মেদকে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশে (এসএমপি), উপপুলিশ কমিশনার মো. মোখলেছুর রহমানকে ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার হিসেবে এবং আরেক উপপুলিশ কমিশনার জয়নুল আবেদীনকে অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করা হয়েছে। তারা তিনজনই সুপারনিউমারারি অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত।
এদিকে উপপুলিশ কমিশনার শাকিলা সোলতানাকে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে পুলিশ সুপার, উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশে (আরএমপি) এবং উপপুলিশ কমিশনার এএএম হুমায়ুন কবীরকে অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
সিএমপিতে নতুন মুখ
অন্যদিকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার আলমগীর হোসেন আসছেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার হিসেবে। এছাড়া ঠাকুরগাঁও ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট (পুলিশ সুপার) আমিরুল ইসলাম আসছেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার হিসেবে।
ঘুরেফিরে তারা সিএমপিতেই ছিলেন
সিএমপিতে উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে মোখলেছুর রহমানেরও টানা আট বছর সাত মাস পার করেছেন। ২০২৩ সালে তিনি অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে সিএমপিতে যোগ দেন মোখলেছুর রহমান। ওই বছরের ১৮ জুলাই থেকে ২০১৮ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সিএসবি), একই বছরের ৩১ আগস্ট থেকে ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সরবরাহ ও পরিবহন) এবং ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের ২৩ মার্চ পর্যন্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চলতি বছরের ২৪ মার্চ থেকে উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) পদে যাওয়ার পর আবার ৯ সেপ্টেম্বর থেকে উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
সিএমপিতে উপ-পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) হিসেবে তারেক আহম্মেদের দায়িত্বকাল ছয় বছর নয় মাস হয়েছিল। ২০১৮ সালের ২৬ জুন থেকে ২০১৯ সালের ২১ জুন পর্যন্ত তিনি উপ-পুলিশ কমিশনার (পিওএম) এবং ২০১৯ সালের ২১ জুন থেকে ২০২১ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-বন্দর) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এরপর ২০২১ সালের ২ মার্চ থেকে টানা কর্মরত ছিলেন উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-পশ্চিম) পদে। ২০২৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে উপ-পুলিশ কমিশনার (সরবরাহ) হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।
উপ-পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) জয়নুল আবেদীনও ৪ বছর ৭ মাস পার করেন সিএমপির এক পদেই। ২০২০ সালের ২৯ জুন থেকে ২০২১ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-পশ্চিম), ২০২১ সালের ১ মার্চ থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) এবং ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর থেকে একই বছরের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সরবরাহ ও পরিবহন) পদে কর্মরত ছিলেন। এরপর ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর থেকে উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) হিসেবে টানা কর্মরত ছিলেন।
সিএমপিতে এক পদে চার বছর আট মাস কাটিয়েছেন উপ-পুলিশ কমিশনার শাকিলা সোলতানা। ২০২০ সালের ২৯ জুন থেকে ২০২১ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত তিনি উপ-পুলিশ কমিশনার (পিওএম-বন্দর) এবং ২০২১ সালের ১ মার্চ থেকে ২০২২ সালের ১৪ আগস্ট পর্যন্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-বন্দর) পদে কর্মরত ছিলেন। ২০২২ সালের ১৪ আগস্ট থেকে দীর্ঘদিন উপ-পুলিশ কমিশনার (বন্দর) পদে কর্মরত থাকার পর গত বছরের ২৮ নভেম্বর তিনি দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার নিযুক্ত হন।
সিপি