s alam cement
আক্রান্ত
৫৬৬৩৩
সুস্থ
৪৮৩৭৪
মৃত্যু
৬৬৫

‘হিজড়া’ সেজে মাদক সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রক, চাঁদা না দিলে চলে নির্যাতন

0

চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার মোহরা এলাকার বাসিন্দা ইয়াছিন আরাফাত (১৯)। তার গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলায়, তবে ছোটকাল থেকে মৌলভী বাজার সংলগ্ন পোল এলাকার বস্তিতে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করছেন তিনি।

ইয়াছিন আরাফাত একজন স্বাভাবিক প্রকৃতির ছেলে হলেও চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা করতে রুপ পরিবর্তন করে হিজড়া বনে যান ইয়াছিন আরাফাত। চাঁদাবাজিকালে তাকে সবাই বিজলী রাণী হিসেবে চেনেন।

মোহরা থেকে বহদ্দারহাট এলাকায় হিড়জা রুপে দাপিয়ে বেড়ান এই ইয়াছিন। তার চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন ওই এলাকার দোকানদার, স্থানীয় বাসিন্দাসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ।

অভিযোগ রয়েছে, ইয়াছিন আরাফাতের পুরো পরিবার মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সন্ধ্যার পর পোল এলাকায় বসে রমরমা মাদকের আসর। হিজড়া হিসেবে তার এই পরিচয় থাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে সাহস করে না।

পোল এলাকার বস্তিতে মাদকের অভয়ারণ্য স্থান হিসেবে চিহ্নিত হলেও দীর্ঘদিন নেই সেখানে পুলিশের অভিযান। পুলিশের নীরবতায় মাদক বেচাকেনা ও সেবনের রাজ্য পরিণত হয়েছে পোল বস্তি।

জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে আগে মৌলভী বাজারের ওয়ালটন শো-রুমের সামনে থেকে বিয়ের বরযাত্রী নিয়ে বৌকে আনতে গিয়েছিলেন কামরুল হাসান। ওই সময় তার গাড়ি আটকিয়ে চাঁদা দাবি করেন ৫ হাজার টাকা। পরে দুই হাজার টাকা দেয়ার কথা জানালেও সেখানে ওই টাকা না নিয়ে বরযাত্রীর গাড়ি ভাংচুর করেছিল ইয়াছিন আরাফাত।

Din Mohammed Convention Hall

খবর পেয়ে এসেই দুই পক্ষকে সরিয়ে দেয় চান্দগাঁও থানা পুলিশ। তবে হিজড়া পরিচয়ধারী চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি আইনগত কোনো পদক্ষেপ।

সুত্র জানায়, ২০২০ সালের ১২ অক্টোবরের দিকে মোলভী বাজারের ৯ নম্বর পোল এলাকায় মাদক ব্যবসার অভিযোগ পেয়ে ইয়াছিন আরাফাতের ভাই হানিফকে আটক করে র‌্যাব সদস্যরা। এ খবর পেয়ে অবরোধ করে হানিফকে সেখান থেকে ছাড়িয়ে নেন হিজড়াদের একটি দল।

স্থানীয়রা জানান, ইয়াছিন আরাফাতের বাবা লোকমান, ভাই হানিফ ও বোন নাজু সবাই মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। মৌলভী বাজারের পোল বস্তি সহ মোহরা এলাকা মাদককারবার নিয়ন্ত্রণ করতে ইয়াছিন আরাফাতকে সুকৌশলে হিড়জা বানিয়েছে তার পরিবার।

প্রতিদিন হিজড়া রুপ নিয়ে এলাকায় জোর করে টাকা তোলেন ইয়াছিন। কেউ কিছু বললে সবার সামনে উলঙ্গ হয়ে পড়েন। মানুষ বাধ্য হয়ে তাকে টাকা দেয়।

জানা যায়, চান্দগাঁও থানার উত্তর মোহরা অর্ধেক অংশ, পশ্চিম মোহরা পুরো অংশ, মৌলভী বাজারের পোল বস্তি সহ সেখানে অধিকাংশ এলাকায় হাতের নাগালে মিলছে ইয়াবা সহ বিভিন্ন প্রকারের মাদক। অল্প বয়সের যুবকরা জড়িয়ে পড়ছেন এসব মাদকে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৫ নম্বর মোহরা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাজী নুরুল আমিন মামুন বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডের বেশ কিছু জায়গা মাদক ব্যবসা চলছে এটা একেবারে সত্য। এসব কারবারি বেশির ভাগই বাহির থেকে এসে এখানে ব্যবসা করছে। তার মধ্যে উত্তর মোহরা অর্ধেক অংশ, পশ্চিম মোহরা পুরো এলাকা সহ ওয়ার্ডের বেশ কিছু এলাকায় রমরমা মাদক ব্যবসা চলছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে এখানকার সহকারী কমিশনার ও চান্দগাঁও থানার ওসিকে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানিয়েছি। অদ্যাবধি তার কোনো সুফল মিলেনি। বারবার স্থানীয়দের কাছ থেকে এবিষয়ে অভিযোগ আসলেও কোনো সমাধান পাচ্ছি না।’

এবিষয়ে জানতে চাইলে চান্দগাঁও থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ইয়াছিন আরাফাতের মাদককারবার সহ সব কিছু খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।’

অভিযোগের জানতে চাইলে ইয়াসিন আরাফাত বলেন, ‘আমি কোনো মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত না। অভিযোগটি মিথ্যা। ভিক্ষা করতে করতে দিন চলে যাই কেমনে করব এ ব্যবসা। সময় কোথায়।’

একপ্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘আমি যদি স্বাভাবিক প্রকৃতির মানুষ হতাম তাহলে বিয়ে সংসার করতাম এতােদিন। ভিক্ষা করতাম না।’

মুআ/কেএস

ManaratResponsive

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।

ksrm