চট্টগ্রামে জন্ম নিবন্ধনে জালিয়াতির ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন হ্যাকার।
১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিন দিনের অভিযানে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি) তাদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মো. সাগর আহমেদ জোভান (২৩), শেখ সেজান (২৩), মেহেদী হাসান (২৩), মোঃ শাকিল হোসেন (২৩), ও মোঃ মাসুদ রানা (২৭)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে জালিয়াতি কর্মকান্ডে ব্যবহৃত ২টি সিপিইউ, ২টি মনিটর, ৩টি ল্যাপটপ, ১টি ট্যাব, ১টি প্রিন্টার এবং ৬টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
চট্টগ্রাম, নড়াইল, ঢাকা, গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার এ পাঁচজনের মধ্যে তিনজন ‘হ্যাকার’ বলে জানিয়েছেন সিটিটিসির অতিরিক্ত উপ কমিশনার আসিফ মহিউদ্দিন।
গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন এই চক্রসহ আরো একাধিক গ্রুপ দেশব্যাপী জন্ম নিবন্ধন জালিয়াতি করে আসছে। এ পর্যন্ত তারা কয়েক হাজার ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি ও বিতরণ করেছে। প্রতিটি ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করতে তারা ১২শ থেকে ১৫শ টাকা আদায় করতো। হ্যাকাররা অবৈধভাবে জন্মনিবন্ধন সার্ভারে প্রবেশ করে জাল জন্ম সনদ প্রস্তুত করে।’
চলতি বছরের ৮ থেকে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত অবৈধভাবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৩৮, ১১, ১৩, ৩২, ৪০ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে অবৈধভাবে ৭৯৬টি জন্ম নিবন্ধনের ঘটনা ধরা পড়ে।
এর মধ্যে ১০, ১৮ ও ২২ জানুয়ারি শুধু ১১ নম্বর ওয়ার্ডে অবৈধভাবে মোট ৪০৯টি জন্ম নিবন্ধন হয়। আর ১৪ নম্বর লালখান বাজার ওয়ার্ডে ধরা পড়ে ২৪৯টি ভুয়া জন্ম নিবন্ধনের ঘটনা।
এসব অবৈধ জন্ম নিবন্ধনের ঘটনায় নগরীর বিভিন্ন থানায় সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় থেকে সাধারণ ডায়েরি ও ১৩ নম্বর পাহাড়তলী, ১৪ নম্বর লালখান বাজার ওয়ার্ডের ঘটনায় খুলশী থানায় দুইটি এবং ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডের ঘটনায় হালিশহর থানায় একটিসহ তিনটি মামলা করা হয়।
পরে ২৩ জানুয়ারি নগরীর পতেঙ্গা এলাকা থেকে এক কিশোরসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যাদের মধ্যে তিন জন আদালতে ১৪৪ ধারায় জবান্দবন্দি দিয়েছিলেন।
এরপর ২৫ জানুয়ারি এক নারী ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ে জন্মনিবন্ধনের ‘মূল সনদ’ সংগ্রহ করতে গেলে সেখানকার দায়িত্বরতরা জানতে পারেন, ওই কার্যালয়ে অবৈধভাবে হওয়া ৪০৯টি জন্মনিবন্ধনের একটি ছিল ওই নারীর।
পরে তার দেওয়া তথ্যে ইপিজেড এলাকা থেকে এক কম্পিউটার দোকানিকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
আরএম/এমএফও









