৯ তলার অনুমোদন নিয়ে ১২ তলা ভবন, দুদকের অভিযানের পর ভাঙার নির্দেশ সিডিএর

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তপক্ষ (সিডিএ) থেকে ৯ তলার অনুমোদন নিয়ে ১২ তলা ভবন নির্মাণ করায় বাড়তি অংশ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সিডিএতে অভিযান চালিয়ে ভবন নির্মাণের কাগজপত্র যাচাই করে। পরে বাড়তি অংশ নির্মাণের সত্যতা পেলেই সিডিএ কর্মকর্তাদের নিয়ে ওই জায়গায় অভিযান চালায় দুদক।

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুর ১ থেকে বিকালে ৫টা পর্যন্ত দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর উপপরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাতের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম এই অভিযান পরিচালনা করেন।

এর আগে ভবনে অনুমোদনহীন বাড়তি অংশ নির্মাণ ও জোর করে জায়গা দখলের অভিযোগ এনে প্রথমে সিডিএতে চিঠি দেন প্রবাসী হাফেজ মোহাম্মদ জামাল নামের ভুক্তভোগী। পরে সিডিএ কোনো ব্যবস্থা না নিলে তিনি দুদকের দ্বারস্থ হন।

দুদকের দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় ৩৫১ নম্বর প্লটে সিডিএর অনুমোদন ছাড়া নকশা বহির্ভূতভাবে একটি ভবন নির্মাণের অভিযোগ দেন প্রবাসী হাফেজ মোহাম্মদ জামাল। ‘চউক চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা’য় ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা প্লট নম্বর ৩৫২, জমির পরিমাণ ৫.৫৭৮ কাঠার প্লট কিনেন হাফেজ মোহাম্মদ জামাল। মোহাম্মদ জামাল প্রবাসে থাকায় তিনি তার প্লটে ভবন নির্মাণকাজ শুরু করতে পারেননি এখনও। পাশের প্লট ৩৫১ এর মালিকরা নিয়ম না মেনে তার প্লটের ১৫ ইঞ্চি জায়গা জোর করে দখল করে নেয়। পরে সেখানে ৯ তলা ভবনের অনুমোদন নিয়ে ১২ তলা পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়।

আরও জানা গেছে, অবৈধভাবে ভবনটি নির্মাণের সিডিএ’র অথরাইজড-১ অফিসার মোহাম্মদ হাসানের মৌখিক নির্দেশনায় নকশা বহির্ভুতভাবে ১২ তলা ভবন নির্মাণ করা হয়। প্রায় দু’মাস আগে সিডিএ’র সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দেওয়ার পরও সেখানকার স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা আফরোজ চৌধুরী, অথরাইজড অফিসার-০১ এর মোহাম্মদ হাসান কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।

জানা গেছে, প্রতিকার না পেয়ে জামাল অভিযোগ দেন দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করে অবৈধভাবে ১২ তলা ভবন নির্মাণ সত্যতা পেয়েছে দুদক। তাৎক্ষণিক সিডিএ’র নকশা বহির্ভুত ভবনটির অতিরিক্ত অংশ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয় সিডিএ।

এর আগে অভিযোগের সত্যতা জানতে দুপুরে সিডিএ’র কার্যালয়ে গিয়ে ওই ভবনটির কাগজপত্র যাচাই করতে পরিদর্শন করে দুদক এনফোর্সমেন্ট টিম। পরে সিডিএ’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার ৩৫১ নম্বর প্লটে পরিদর্শন করে দুদক টিম।

দুদকে দেওয়া অভিযোগে অভিযুক্তরা হলেন চট্টগ্রামের আনোয়ারা থানার চাতুরী এলাকার কাজী আবদুল কাদেরের ছেলে কাজী মাহাবুবুর রহমান, তার মেয়ে জান্নাতুন নুর, কাজী আবুল মনসুর, মেয়ে কাজী রেহেনা আকতার, মেয়ে কাজী লুৎফুন্নেসা, ছেলে কাজী খোরশেদুল আলম, ছেলে কাজী আবু জাহেদ ওরফে আবু ইউসুফ, ছেলে কাজী খোরশেদুল আলম ওরফে আবু রাশেদ, ছেলে কাজী ফরহান হায়দার ওরফে ফজলুল কাদের। বর্তমানে সবাই চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানার আন্দরকিল্লা রয়েল রোডের ৩২০/৬৫ তে বসবাস করছেন।

দুদক কর্মকর্তা জানান, দুদক এনফোর্সমেন্ট টিম ও সিডিএ’র কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে গিয়ে নকশা বহির্ভূত ভবনটির অতিরিক্ত অংশ ভেঙে ফেলার তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেয় সিডিএ।

এমএ/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!