অনলাইনে সহজের ‘কঠিন’ প্যাঁচ, টাকা কেটে নিলেও মিলছে না ট্রেনের টিকিট

টিকিট না পেয়ে স্টেশনে মানুষের ভিড়

ডা. রেহনুমা জামান ঈদে ঢাকায় যেতে রেলওয়ের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে ঢুকে সাতজনের টিকিট কাটেন। আগামী ১৯ এপ্রিলের জন্য টিকিট কাটলে সাতজনের ভাড়া বাবদ তার বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেয়। কিন্তু টাকা কাটলেও মেলেনি টিকিট। এরপর ২০ এপ্রিলের জন্য তিনি আবারও টিকিট কাটেন। কিন্তু এবারও সেই একই অবস্থা। টাকা কেটে নিলেও রেহনুমা পাননি টিকিট।

এভাবে গত এক সপ্তাহ ধরে ঈদে ভ্রমণের টিকিট কাটতে গিয়ে চরম ভোগান্তি শিকার হচ্ছেন গ্রাহক। প্রায় গ্রাহকের টাকা কেটে নিলেও দেওয়া হচ্ছে না টিকিট। ফলে টাকার সঙ্গে ট্রেনে বাড়ি যাওয়ার আশা হারাচ্ছেন তারা। এসব ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে রেলের টিকিট কাটার ওয়েবসাইটের সমালেচনা করছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।

তবে সহজের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যাদের টাকা কেটে নিয়েছে কিন্তু টিকিট পাননি তাদের ওই টাকা আট কর্মদিবসের মধ্যে ফেরত যাবে বিকাশ বা নগদ অ্যাকাউন্টে।

s alam president – mobile

মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, অনলাইনে টিকিট না পেয়ে মানুষের দীর্ঘ লাইন কাউন্টারে ও সহজ সিনেসিস ভিনসেন জেভির দপ্তরে। প্রায় মানুষ এসেছেন টাকা কেটে নেওয়ার পরও টিকিট না পাওয়ার অভিযোগ নিয়ে।

আরও দেখা গেছে, এমন ভোগান্তি পোহানো যাত্রীরা ছুটছেন এক কাউন্টার থেকে আরেক কাউন্টারে। চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের দ্বিতীয় তলায় সহজের অফিসে প্রতিদিন বহু টিকিট প্রত্যাশী গ্রাহক ধর্ণা দিচ্ছেন, কিন্তু তাতেও কাজ হচ্ছে না।

রেলস্টেশনে কয়েকজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টাকা কেটে নিলেও টিকেট পাননি তারা। টাকা কখন ফেরত পাবে তা নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। ফলে ট্রেনে চেপে বাড়ি ফেরাও অনেকটা অনিশ্চিত তাদের।

Yakub Group

জানা গেছে, গত ১ মার্চ রেলওয়ে এনআইডি কার্ডসহ নিবন্ধন করে টিকিট ক্রয় করার নতুন সিস্টেম চালু করে। টিকিট কালোবাজারি বন্ধে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তা এখন বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে গ্রাহকদের জন্য।

এদিকে অনেক ফোনে এসএমএস নিবন্ধন করেও অনলাইনের পুনরায় নিবন্ধন না থাকায় টিকিট কিনতে পারছেন না। পরে অনলাইনে নিবন্ধনের চেষ্টার করলেও সার্ভার জটিলতায় তা হচ্ছে না। তাছাড়া অনেক নিরক্ষর মানুষেরও এসব বিষয়ে তেমন ধারণা নেই।

তৌফিক ইমাম (৫০) নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘সহজের হয়তো দক্ষ আইটি স্পেশালিস্ট নেই। একসঙ্গে বহু টিকিট প্রত্যাশী অনলাইনে লগইন করলে সার্ভার হ্যাং হয়ে যায়।’

টাকা কাটার পরও টিকিট না পাওয়া প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন মাস্টার জাফর আলম বলেন, ‘শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের এমন সমস্যার সমাধান কাউন্টারে মিলবে না।’

চট্টগ্রাম স্টেশনে সহজের দায়িত্বরত কর্মকর্তা কাওসার হোসেন ভোগান্তির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘যারা টিকিট ক্রয় করেছেন (বিকাশ বা নগদে) কিন্তু টিকিট পাননি, এই টাকা আট কর্মদিবসের মধ্যে তাদের অ্যাকাউন্টে ফেরত পাবেন। না পেলে সহজ অফিসে প্রমাণসহ অভিযোগ করতে হবে।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!