s alam cement
আক্রান্ত
৯৫০৪৪
সুস্থ
৬১৫০২
মৃত্যু
১১২৮

উদ্বোধনেই শেষ—চট্টগ্রাম বন্দর প্রাণী কোয়ারেন্টাইন, আমদানিকারকদের দুর্ভোগ

0

ছয় বছর ধরে তালাবদ্ধ চট্টগ্রাম বন্দরের প্রাণিসম্পদ কোয়ারেন্টাইন স্টেশন। নেই কোন কার্যক্রম। অবকাঠামো, ল্যাবসহ জরুরি ইক্যুইপমেন্ট স্থাপন করা হলেও অজানা কারণে চালু করা যাচ্ছে না স্টেশনটি। কেন চালু করা যাচ্ছে না, সেটিও সংশ্লিষ্ট কেউই বলতে পারছেন না।

তবে, প্রাণিসম্পদ কোয়ারেন্টাইন স্টেশনের যাবতীয় কাজ হচ্ছে জেলা প্রাণীসম্পদ কার্যালয় থেকেই। এ ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যস্ততম কাজের সামাল দিয়ে আবার জেলার প্রাণীসম্পদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তাদের। অপরদিকে বন্দরেই এ কার্যক্রমের সুবিধা না থাকায় দুভোগ পোহাতে হচ্ছে আমদানিকারকদের।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে প্রতি মাসে ৩ শত চালান আসে প্রাণীখাদ্য, আ্যনিম্যাল এন্ড ফিস ফিট হিসেবে। প্রত্যেকটি চালানের ল্যাব পরীক্ষণ সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয় পণ্য চালান খালাসের জন্য। চালান আসা মাত্রই স্যাম্পল পাঠিয়ে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকেই ল্যাব পরীক্ষা করাতে হচ্ছে।

আ্যনিম্যাল এন্ড ফিস ফিট আমদানিকারক ওয়ারিশা এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ সরওয়ার আলম বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে দশ কিলোমিটার দূরে নগরের খুলশীস্থ জেলা প্রাণীসম্পদ কার্যালয়ে স্যাম্পল জমা দিয়ে সার্টিফিকেট নিতে হয়। এটি ব্যবসায়ীদের জন্য হয়রানিমূলক। অথচ, চট্টগ্রাম বন্দরেই প্রাণিসম্পদ কোয়ারেন্টাইন স্টেশন আছে সেখান থেকে ল্যাব পরীক্ষার সার্টিফিকেট পেলে ব্যবসায়ীদের উপকার হতো। বন্দর থেকে কনটেইনার ডেলিভারি নেওয়া আরও দ্রুত হতো।

চট্টগ্রাম বন্দরের তিন নং গেইটের পাশেই অবস্থিত প্রাণীসম্পদ কোয়ারেন্টাইন স্টেশনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তিনতলা ভবনের নিচতলায় ফাঁকা স্থান রাখা আছে। পাশে দুটি কক্ষ। উপরের দুই ও তিনতলায় ল্যাব ও কর্মকর্তাদের বসার স্থান। নিচের একটি কক্ষে বন্দর থানা এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তার দাপ্তরিক কাজ করা হচ্ছে।

ডাক্তার ফেরদৌসি আক্তার নামের এ চিকিৎসক বলেন, কোয়ারেন্টাইন স্টেশনের কোন কাজ না থাকায় বন্দর থানা এলাকার প্রাণী সম্পদের চিকিৎসার কাজ করছি। কোয়ারেন্টাইন চালু হলে আমরা অন্য স্থানে চলে যাবো। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে লিয়াঁজো করে আমরা কাজ চালাবো।

Din Mohammed Convention Hall

তিনি বলেন, প্রাণিসম্পদ কোয়ারেন্টাইন স্টেশনের কোন কাজ এখানে হয় না। জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে কোয়ারেন্টাইন ল্যাব থেকে পরীক্ষার কাজ হচ্ছে। বিদেশ থেকে আসা পশুপাখি ও প্রাণিজ খাদ্য পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য কোয়ারেন্টাইন স্টেশনটি নির্মাণ করা হয়।

ডাক্তার ফেরদৌসি আক্তার জানান, স্টেশনে প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্রপাতি রয়েছে। কোয়ারেন্টাইন শেডে প্রাণী ও প্রাণিজ খাদ্য পরীক্ষার জন্য ল্যাব রয়েছে। কিন্তু কেন যে চালু হচ্ছে না তা আমাদের অজানা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, প্রায় এক কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত চট্টগ্রাম বন্দরের তিন নং গেইট এলাকায় (ফকিরহাটে) প্রাণিসম্পদ কোয়ারেন্টাইন স্টেশন। ২০১৫ সালে উদ্বোধনের পর থেকে একদিনের জন্যও ব্যবহার হয়নি স্টেশনের কোন যন্ত্রপাতি। এ স্টেশনের বিদেশ থেকে আসা পশুপাখি ও প্রাণিজ খাদ্যের মাধ্যমে প্রাণী ও মানুষের দেহে রোগ সংক্রমণ প্রতিরোধে পরীক্ষা নিরীক্ষা হওয়ার কথা।

২০১৪ সালে প্রাণিসম্পদ কোয়ারেন্টাইন স্টেশন নির্মাণ করা পর ২০১৫ সালে কোয়ারেন্টাইন স্টেশনটি উদ্বোধন করা হয়। এরপর প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করা হলেও নিয়োগ দেয়া হয়নি জনবল। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ল্যাব টেকনিশিয়ান, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, ল্যাব অ্যাটেনডেন্টসহ ১১টি পদ শূন্য। এমন পরিস্থিতিতে নষ্ট হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির কোটি টাকার সম্পদ।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার রেয়াজুল হক বলেন, প্রাণীসম্পদ কোয়ারেন্টাইন স্টেশনটি মুলত জনবলের অভাবে চালু করা যাচ্ছে না। আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর বারবার চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। কিন্তু সরকার জনবল না দেওয়াই চালু হয়নি স্টেশনটি। উক্ত স্টেশন চালু হলে ওখান থেকেই চট্টগ্রাম বিমান বন্দর ও চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর দিয়ে বিদেশ থেকে আসা সব পণ্য, খাদ্য, পাখি প্রাণী সব কিছুর পরীক্ষা নিরীক্ষা হতো।

কেএস

ManaratResponsive

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।

ksrm