করোনার ভয়ঙ্কর থাবায় থর থর করে কাঁপছে চট্টগ্রাম। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে নতুন করে করোনায় শনাক্ত হয়েছেন ৩২৭ জন। আগের দিনের তুলনায় শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮.৪১ শতাংশে।
রোববারও (২৭ জুন) চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩০০ জন। শনাক্তের হার ছিল প্রায় ২২.০৫ শতাংশ। শনিবার (২৬ জুন) চট্টগ্রাম করোনা শনাক্ত হয়েছিল ২১৬ জনের। মৃত্যু হয়েছিল তিন জনের। শনাক্তের হার ছিল ২০.৮২ শতাংশ। শুক্রবার (২৫ জুন) চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ২৭৪ জন। মৃত্যু হয়েছিল পাঁচ জনের। শনাক্তের হার ছিল ২৮.০৭ শতাংশ।
এ নিয়ে চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭ হাজার ৯৯৭ জন। শনাক্তদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর ৪৫ হাজার ৩৫৭ জন। আর বিভিন্ন উপজেলার ১২ হাজার ৬৪০ জন রয়েছেন। অন্যদিকে, করোনা আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত মোট ৬৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৪৬৯ জন চট্টগ্রাম নগরের। আর বিভিন্ন উপজেলায় মারা গেছেন ২১৯ জন।
সোমবার (২৮ জুন) চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি ১০টি ও কক্সবাজারে একটি ল্যাবে এক হাজার ১৫১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩২৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে ৫৮ জনের দেহে করোনার জীবাণু পাওয়া যায়। এর মধ্যে ২৬ জন নগরের, ৩২ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।
চট্টগ্রামের প্রধান করোনা পরীক্ষাগার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) ২১৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে করোনা শনাক্ত হন ২০ জন। যাদের মধ্যে ১৫ জনই নগরের। বাকি ৫ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৯১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ২২ জনই নগরের, বাকি ৭ জন উপজেলার।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ২১১ জনের করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে দিনের সর্বোচ্চ ৬৯ জনের দেহে করোনার উপস্থিতি পাওয়া যায়। এদের ৩৯ জন নগরের এবং ৩০ জন বিভিন্ন উপজেলার রোগী।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরি (আরটিআরএল) ল্যাবে ৬৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৪ জনের দেহে করোনা পজিটিভ এসেছে। এদের মধ্যে ২৩ জনই নগরের এবং ১ জন উপজেলার।
পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপজেলার ৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯ জনের নমুনায় করোনার জীবাণু পাওয়া গেছে।
এছাড়া, নগরীর বেসরকারি করোনার ল্যাবগুলোর মধ্যে ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে ১৫৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪১ জনের দেহে করোনার জীবাণু পাওয়া যায়। এদের মধ্যে ৩৮ জনই নগরের, বাকি ৩ জন উপজেলার। শেভরণ ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ১৯২ জনের নমুনা পরীক্ষা নগরের ৩৯ জন ও উপজেলার ৮ জনের দেহে করোনার জীবাণু পাওয়া যায়। ইপিক হেলথ কেয়ার ল্যাবে ৪০ নমুনা পরীক্ষায় ১৬ জন করোনা পজিটিভ হন। এদের মধ্যে ১১ জন নগরের এবং বাকি ৫ জন উপজেলার বাসিন্দা। চট্টগ্রাম মেডিকেল সেন্টারে ৩০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নগরের ১৪ জনের দেহে করোনা পজিটিভ আসে। এদিন বেসরকারি করোনা পরীক্ষাগার চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
এছাড়া, কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে সেটিতে করোনা নেগেটিভ আসে।
উপজেলায় করোনা আক্রান্তদের মধ্যে আনোয়ারা উপজেলায় সর্বোচ্চ ২০ জন করোনা শনাক্ত হন। এছাড়া, হাটহাজারী উপজেলায় ১৮ জন, রাউজানে ১৭ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ১২ জন, পটিয়ায় ১১ জন, সীতাকুণ্ডে ৮ জন, বোয়ালখালীতে ৫ জন, মিরসরাইয়ে ৪ জন, সন্দ্বীপে ২ জন এবং সাতকানিয়া, বাঁশখালী ও ফটিকছড়িতে ১ জন করে শনাক্ত হয়েছেন।
এমএহক