চট্টগ্রামে ইলিশ ধরছে ১৯ জনের চক্র, নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই বড় বাণিজ্য
বোটপ্রতি ৮-১৩ হাজার টাকা চাঁদা কমিটির পকেটে
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই চট্টগ্রামে চলছে ইলিশ আহরণ। দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে জেলেরা এসে ভাসান জাল ফেলে ইলিশ মাছ ধরছে। এতে প্রতিদিনই বিপুল পরিমাণের জাটকা ইলিশসহ অসংখ্য ছোট মাছ ধরা পড়ছে। টাকা নিয়ে এসব জেলেদের মাছ ধরার সুযোগ করেছে দিচ্ছে ১৯ জনের একটি চক্র। এক সপ্তাহ ধরে এভাবে মাছ আহরণ চললেও একদিনের অভিযান চালিয়েই দায় সেরেছে জেলা মৎস্য অফিস কর্তৃপক্ষ।
অথচ মাছের প্রজনন, উৎপাদন বৃদ্ধি, সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য চলতি বছরের ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় সব ধরনের মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গার মুসলিমাবাদ এলাকায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরার জন্য ১৯ জনের একটি কমিটি করা হয়েছে। এ কমিটির লোকজনকে টাকা দিয়ে চট্টগ্রামের বাঁশখালী, নোয়াখালীর হাতিয়াসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে বোট করে জেলেরা এসে মাছ ধরছে। এজন্য স্থানীয় জেলেদের কাছ থেকে বোটপ্রতি ৮ হাজার টাকা এবং অন্য জেলার জেলেদের কাছ থেকে বোটপ্রতি ১৩ হাজার টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।
আরও জানা গেছে, সম্প্রতি মুসলিমবাদ সাগরপাড়ে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে অন্তত ২৫০টি বোট এসেছে। স্থানীয় প্রায় ২০০ জন জেলে ইলিশ ধরছে প্রতিদিন।
১৯ সদস্যের কমিটিতে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নেতৃত্বে রয়েছে মনির সওদাগর ও নির্মল দাশ। তাদের এ কমিটি গঠন করা হয় গত ১৯ জুন।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সরেজমিন মুসলিমাবাদ সাগরপাড়ে গেলে কথা হয় একাধিক মাঝির সঙ্গে। তারা জানান, আমরা প্রতি বছর এভাবে মাছ ধরতে আসি। এখানকার স্থানীয় ব্যক্তিদের একটি কমিটি রয়েছে। মূলত তাদের ম্যানেজ করে মাছ ধরছি। কখনও সমস্যা হয়নি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাশ বলেন, ‘কোনো কমিটিও করিনি, এই ধরনের কোনো টাকাও নিইনি।’
ওই কমিটির সভাপতি মো. মনির সওদাগর বলেন, ‘আমাদের এখানে সাকিব আছে। এগুলো নিয়ে আমি মাথা ঘামায় না’।
কে এই সাকিব—জানতে চাইলে মনির কোনো উত্তর না দিয়ে মুঠোফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
চট্টগ্রাম জেলার মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, ‘নিয়ম অমান্য করে সাগরে যেসব জেলে মাছ ধরছে, তাদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বুধবার (১০ জুলাই) পতেঙ্গায় অভিযান চালিয়ে ৯টি মাছ ধরার বোট আটক করেছি। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
ডিজে