চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ আহত ৭, ককটেল বিস্ফোরণ

চট্টগ্রামে কোটাবিরোধী আন্দোলনে সাংবাদিকসহ সাতজন আহত হয়েছেন। এ সময় আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ হয়। একইসঙ্গে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণেরও ঘটনা ঘটে।

সোমবার (১৫ জুলাই) বিকাল ৫টায় মুরাদপুর এলাকার কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল)সামনে কোটা আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

এর আগে রোববার রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি)কোটাবিরোধীদের ওপর চড়াও হয় ছাত্রলীগ। তাই ষোলশহরে সোমবারের কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ হামলা করতে পারে—এমন খবর ছিল কোটা আন্দোলনকারীদের কাছে। সে বিষয়ে সাংবাদিকদের ম্যাসেজের মাধ্যমে ঘটনার দু’ঘণ্টা আগে জানান কোটা আন্দোলনের নেতা মাহমুদ রাসেল আহমেদ।

বিকাল ৪টার দিকে নগরীর ষোলশহর রেলস্টেশনে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে শহর অভিমুখী শাটল ট্রেন আটকে রাখায় চবি শিক্ষার্থীদের বড় অংশ সেখানে উপস্থিত হতে পারেননি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের আন্দোলন ব্যাহত করতেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শাটল ট্রেন আটকে রাখে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ষোলশহর রেলস্টেশনে অবস্থানের সময় ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী সেখানে গিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের ধাওয়া দেয়। স্টেশনে প্রায় আধাঘণ্টা অবস্থানের পর শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সামনে সড়কে আসেন। মিছিলটি কেজিডিসিএল অফিসের সামনে আসলে দ্বিতীয় দফা তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের পাঁচজন শিক্ষার্থী এ ঘটনায় আহত হয়েছে। এছাড়া ইটের আঘাতে সারাবাংলার আলোকচিত্রী শ্যামল নন্দী, দীপ্ত টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান রুনা আনসারিসহ আরও কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ হামলার পেছনে আন্দোলনকারীরা ছাত্রলীগকে দায়ী করলেও কারও নাম প্রকাশ করতে রাজি হয়নি।

অপরদিকে চবিতে কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রোববার থেকে উত্তপ্ত ছিল ক্যাম্পাস। এ সময় ক্যাম্পাসের কাটা পাহাড় এলাকায় ছাত্রলীগের হামলায়ও নারীসহ পাঁচ শিক্ষার্থী আহত হয়।
তারই রেশ ধরে সোমবার দুপুর আড়াইটায় শাটল ট্রেনে করে আন্দোলনকারীরা ষোলশহর আসার চেষ্টা করলে সেই ট্রেনের চাবি ছিনতাই করার অভিযোগ ওঠে চবি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এমনকি আন্দোলনের অন্যতম নেতা খান তালহা মাহমুদ রাফিকে তুলে নিয়ে গেছে বলেও জানায় আন্দোলনকারীরা।

তবে দুটি অভিযোগই অস্বীকার করে চবি ছাত্রলীগের নেতা সাদাফ খান বলেন, ‘আমরা শাটলের চাবি নিইনি। বরং আন্দোলনকারীরাই চাবি নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে দোষ দিচ্ছে।’

রাফিকে তুলে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা কাউকে তুলে নিয়ে যাইনি। বরং সে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বাজে কথা বলেছে। তাই তার ভর্তি বাতিলের জন্য প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়।’

এদিকে ষোলশহরে সংঘর্ষের পর মাঠে নামে যুবলীগ। কোটার বিপক্ষে মাঠে নামেন নগর যুবলীগ নেতারা। সোমবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম কোটার বিপক্ষে সমাবেশের আয়োজন করেন।

বিএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!