চট্টগ্রাম নগরীর খুলশীর জালালাবাদে নির্মাণাধীন এক সাততলা ভবনের মালিককে নিজের পরনের লুঙ্গি দিয়ে হাত-পা বেঁধে খুনের পর ওই ভবনের পাশেই ফেলে রাখা হয়। তার নাম নেজাম পাশা। তিনি ফটিকছড়ি পৌরসভার ধুরুং হাদী বাপের বাড়ির বাসিন্দা।
দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে ছিলেন দুই পুত্র ও তিন কন্যা সন্তানের এই জনক। তার দুই পুত্রও বর্তমানে প্রবাসে। নেজাম পাশার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর।
নেজাম পাশার পরিবারের সদস্যরা জানান, তিনি ফটিকছড়ি থেকে প্রায়ই নগরীর জালালাবাদ এলাকার ভিআইপি রোডের পাশে নির্মাণাধীন সাত তলা ভবনের কাজ দেখতে যেতেন। অন্য সময়ের মতো রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালেও নেজাম পাশা জালালাবাদে যান। এদিন তিনি নির্মাণাধীন ভবনের কর্মচারীদের বেতনও দেন। কিন্তু সকাল ১০টা থেকে তার ফোনটি ধরা হচ্ছিল না। এমনকি একপর্যায়ে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। বাড়ির কাজ দেখাশোনার জন্য সেখানে হাসান নামের যে কেয়ারটেকার আছেন, তার কাছে নেজাম পাশার খোঁজ চাইলে তিনিও অসংলগ্ন কথা বলতে থাকেন।
রোববার সন্ধ্যা পার হওয়ার পরও নেজাম পাশার কোনো হদিস না পাওয়ায় তার বড় মেয়ে বড় মেয়ে নাজমুন শবনম নগরীর খুলশী থানায় জিডি করেন।
সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভোর ৫টার দিকে জালালাবাদের স্থানীয় মসজিদের মুসল্লিরা নির্মাণাধীন ভবনের প্রায় ৪০ গজ দূরে উলঙ্গ অবস্থায় হাত-পা বাঁধা একটি লাশ দেখতে পান। সেই খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা এসে নেজাম পাশার লাশ শনাক্ত করেন।
নেজাম পাশা স্বজনরা বলছেন, ২০১৯ সালে জালালাবাদের ভবনটি তোলার শুরু থেকে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা চাঁদা চেয়ে আসছিল। কিন্তু নেজাম পাশা তাদের কোনো দাবিই কখনও মানেননি। কাউকে এক টাকা চাঁদা দিতেও রাজি ছিলেন না তিনি। এ কারণে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা তাকে খুন করতে পারে বলে স্বজনদের সন্দেহ।
অন্যদিকে জালালাবাদের নির্মাণাধীন ভবন দেখাশোনার জন্য যে কেয়ারটেকার রাখা হয়েছিল, তার সঙ্গেও নেজাম পাশার মনোমালিন্য ছিল। নির্মাণাধীন ভবনের বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। আবার নেজাম পাশার লাশ উদ্ধারের পর থেকে হাসান নামের সেই কেয়ারটেকার পলাতক রয়েছে।
সিপি