s alam cement
আক্রান্ত
১০২৩১৪
সুস্থ
৮৬৮৫৬
মৃত্যু
১৩২৮

চোরচক্রের ‘গডফাদার’ বাকলিয়ার সোহেল এবার ধরা র‌্যাবের হাতে

0

চট্টগ্রাম নগরীতে সক্রিয় চোরের দলের ‘গডফাদার’ কথিত শ্রমিক লীগ নেতা সোহেল আহমেদ সেলু ওরফে রানা (৩৫) আবার আটক হয়েছেন র‌্যাব-৭ এর হাতে।

বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) বিকেল তিনটার দিকে অভিযান চালিয়ে সোহেলকে (৩৫) নগরীর বাকলিয়া এক্সেস রোড থেকে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে পাওয়া গেছে একটি ওয়ান শ্যুটারগান ও দুই রাউন্ড গুলি। সোহেল কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর ধন্যারপাড়ের মৃত মোহন মাঝির ছেলে এবং বাকলিয়ার শান্তিনগর বগারবিলে থাকেন।

সোহেল আহমেদ সেলু ওরফে রানা দীর্ঘদিন ধরে বাকলিয়া এলাকায় ছিনতাই, চাঁদাবাজি চালিয়ে আসছে। তার বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় অন্তত আটটি মামলা রয়েছে। সোহেল নিজেকে শ্রমিক লীগ নেতা পরিচয় দিয়ে গত ৮ বছর ধরে নগরে চোরের একটি চক্র পরিচালনা করে আসছে।

চোরচক্রের ‘গডফাদার’ বাকলিয়ার সোহেল এবার ধরা র‌্যাবের হাতে 1

র‌্যাব জানিয়েছে, বাকলিয়া এক্সেস রোড ইউনুছ সওদাগরের নির্মাণাধীন ভবনের ভেতর সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সোহেল অবস্থান করছে— গোপনে এমন খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) বিকেল তিনটার দিকে সোহেলকে আটক করা হয়। এরপর তাকে বাকলিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়।

এর আগে ২০১৯ সালের ২৮ আগস্ট বাকলিয়ার বগারবিল এলাকা থেকে সোহেলকে কোতোয়ালী থানা পুলিশ আটক করে। তখন পুলিশ জানায়, সোহেল চট্টগ্রাম নগরীতে সক্রিয় চোরের দলের ‘গডফাদার’। তার দলের সদস্যরা নগরীর দুর্ধর্ষ সব চুরি ডাকাতি ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত।

ওই সময় কোতোয়ালী থানা পুলিশ চোরচক্রের তিনজনকে গ্রেপ্তার করার পর তাদের একজন আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে জানান, বাকলিয়ার সোহেল তাদের ‘বড় ভাই’। এ বড় ভাইয়ের নির্দেশেই নগরীর বাসাবাড়িতে চুরি করে তারা। জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল চকবাজার-বাকলিয়া এলাকায় প্রভাবশালী বিভিন্ন ব্যক্তি তাকে শেল্টার (আশ্রয়) দেয় বলে পুলিশকে জানায়।

জানা যায়, সোহেলের ছত্রচ্ছায়ায় ৮ থেকে ১০ জন কিশোর ও তরুণের একটি চক্র নগরের বিভিন্ন এলাকায় চুরি করে। তারা চুরি করে চোরাই মালামাল সোহেলকে দিত। সোহেল সেগুলো বিক্রি করতো। সোহেল এই ছেলেগুলোকে নিয়মিত ইয়াবা সেবনের টাকা দেয়। ইয়াবা খাইয়ে তাদের দিয়ে চুরি করায়।

আনোয়ার মালিঙ্গা, মাসুদ আলি, শাকিল প্রকাশ রেন্ডি, হৃদয়সহ কমপক্ষে ১০ জন শিশু-কিশোর আছে, যারা কুড়িয়ে পাওয়া পরিত্যক্ত জিনিস সোহেলের দোকানে বিক্রি করে। সোহেল নিজেই ফুসলিয়ে এসব শিশু-কিশোরকে চোর বানিয়েছে। সোহেল তাদের টাকা দেয়, সেই টাকা দিয়ে তারা ইয়াবা সেবন করে। কখনও কারও হাতে টাকা না থাকলে সোহেল তাকে টাকা দিয়ে সহযোগিতা করে। পরে তারা যখন চুরির মালামাল বিক্রি করতে আসে, তখন সেখান থেকে টাকা কেটে নেয়।

জানা গেছে, সোহেল মূলত চোরাই মালামাল কেনে এবং বিক্রি করে। শ্রমিক লীগের পরিচয়ের পাশাপাশি চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে যুবলীগ নেতা আমজাদ হোসেন ‘বড় ভাই’ হিসেবে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় সোহেলকে। আমজাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় পাবার জন্য তাকে প্রতিদিন এক হাজার টাকা করে দিতে হয়। আমজাদ পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাসুদ করিম টিটুর অনুসারী ছিলেন আগে। শহিদুল আলম পশ্চিম বাকলিয়ার কাউন্সিলর মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই তার সঙ্গে ভিড়ে যান তিনি।

২০১৯ সালে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা ও ঈদ মোবারক জানিয়ে বাকলিয়া এলাকায় পোস্টার সেঁটেছিলেন সোহেল আহমেদ সেলু ওরফে রানা। তার নামের পাশে রাজনৈতিক পরিচয় ছিল বাকলিয়া থানা শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। ওই পোস্টারে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের ছবি ছাড়াও মেয়রের দুই অনুসারী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা হাজী শফিকুল ইসলাম ও মাসুদ করিম টিটুর ছবিও ছিল।

সিপি

ManaratResponsive

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।

ksrm