কক্সবাজার সদরের দক্ষিণ মুহুরীপাড়ায় ছিনতাইকারীর সঙ্গে পুলিশের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আহত হয়েছেন পরিদর্শকসহ পুলিশের সাত সদস্য। অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিন ছিনতাইকারীকে।
শুক্রবার (৪ আগস্ট) ভোরে কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরীপাড়ার হেফাজত উদ্দিনের বাড়িতে এ অভিযান চালানো হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন— জসিম উদ্দিন সোহেল ওরফে সোহেল রানা (৩৫), আব্দুর রাজ্জাক ওরফে আজিজ (২৩) ও মোহাম্মদ এহেছান ওরফে লালু (২১)। এদের মধ্যে আহত সোহেল রানাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন পরিদর্শক দুর্জয় বিশ্বাস, এস এম শাকিল হাসান, উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, মাসুম ফরহাদ, সৈয়দ সফিউল করিম, কনস্টেবল জাহাঙ্গীর আলম ও মেহেদী হাসান।
বিকেল ৫টায় কক্সবাজার সদর থানায় সংবাদ সম্মেলনে সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মিজানুর রহমান জানান, বুধবার (২ আগস্ট) সকালে চট্টগ্রাম টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থী ও কক্সবাজার শহরের বাসিন্দা শেখ সামির ইসলাম বাড়ি ফিরছিলেন। ভোর ৬টায় শহরের কলাতলী মোড় থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশাযোগে সার্কিট হাউজ সড়কের ম্যাজিস্ট্রেট কলোনির সামনে পৌঁছালে চারজন অজ্ঞাতপরিচয় ছিনতাইকারী তার গতিরোধ করে। তারা সামির সঙ্গে থাকা মোবাইল, মানিব্যাগ ও মালামালের ব্যাগ ছিনিয়ে নিতে চাইলে তিনি বাধা দেন। এতে ছিনতাইকারীরা তাকে ছুরিকাঘাত করে সবকিছু ছিনিয়ে নেন। এসময় সামির চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যান। পরে তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এ ঘটনায় বুধবার (২ আগস্ট) শেখ সামিরের মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় চার ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। সেই সূত্র ধরে পুলিশ মাঠে নামে। শুক্রবার ভোরের দিকে কক্সবাজার সদরের ঝিলংজার দক্ষিণ মুহুরীপাড়ার জনৈক হেফাজত উদ্দিনের বাড়িতে ছিনতাইকারীরা অবস্থান করছেন খবর পেয়ে পুলিশের একটি বিশেষ দল অভিযান চালায়।
পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ছিনতাইকারীরা ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে লাফিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে থাকেন। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে চিহ্নিত ছিনতাইকারী জসিম উদ্দিন ওরফে সোহেল রানাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হলেও বাকিরা পালিয়ে যান।
পরে গ্রেপ্তারকৃতদের দেহ তল্লাশি করে দেশীয় তৈরি একটি বন্দুক এবং তিনটি ছোরা উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে সোহেল রানার হাতে ও পেটে গুলি লেগেছে। তবে ছিনতাইকারীচক্রের গুলিতেই সোহেল আহত হন বলে দাবি করেছেন এএসপি মিজানুর।
এএসপি মিজান দাবি করেছেন, তারা সংঘবদ্ধ একটি অপরাধী চক্রের সদস্য। এদের প্রধান জসিম উদ্দিন সোহেল ওরফে সোহেল রানা। তারা নানা কৌশলে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘটনের সঙ্গে জড়িত।
সোহেল রানার বিরুদ্ধে ছিনতাইসহ নানা অভিযোগে ১০টির বেশি মামলা রয়েছে। অন্যরা ছিনতাইকারী দলের সক্রিয় সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।