প্রেমিকার যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের এক সাংগঠনিক সম্পাদক। তবে এই ঘটনা নিয়ে লুকোচুরি করছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
জিডি হওয়ার পর তা হাতে পৌঁছায়নি বলে দাবি করেন তদন্ত কর্মকর্তা। কিন্তু ওসির জানান, জিডি হওয়ার পর তা তদন্ত কর্মকর্তার হাতে না পৌঁছার কোনো সুযোগ নেই।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) নগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ আলম মানিক পাঁচলাইশ থানায় নিজের প্রেমিকা ও তার মায়ের বিরুদ্ধে জিডি করেন।
জিডিতে অভিযুক্তরা হলেন মানিকের প্রেমিকা ফারিয়া চৌধুরী শামান্তা ও মেয়েটির মা লুৎফা চৌধুরী।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৬ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শামান্তার সঙ্গে পরিচয় হয় মানিকের। ফেসবুকের সেই পরিচয় রূপ নেয় ভালবাসায়। দীর্ঘ ৪ বছর প্রেম করার পর মানিক জানতে পারেন, শামান্তা প্রেম চলাকালীন সময়ে অন্য ছেলেদের সঙ্গে মেলামেশা ও ফোনে কথা বলতেন। সেই কারণে ২০২০ সালে সম্পর্কে ইতি টানেন মানিক।
জিডিতে আরও উল্লেখ করা হয়, দীর্ঘদিন যোগাযোগ না থাকার পর গত ২৪ সেপ্টেম্বর চকবাজারের বালি আর্কেড নামের শপিং সেন্টারে শামান্তার সঙ্গে দেখা হলে তিনি মানিককে বাজে মন্তব্য করেন। সেই সময় কোনো ধরনের উচ্চবাচ্য না করে স্থান ত্যাগ করেন মানিক।
ঘটনার দিনই রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর জিইসি মোড়ে আড্ডা দেওয়ার সময় শামান্তা তার মা লুৎফা চৌধুরীসহ এসে বন্ধুদের সামনে মানিককে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি ও মামলার ভয় দেখায় বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়।
তাই এমন অপরাধের শাস্তি ও ভবিষ্যতের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে থানায় জিডি করেন বলে জানান মানিক।
থানায় জিডি করার বিষয়টি স্বীকার করেন নগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ আলম মানিক। এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জিডিতে যা লেখা আছে, ওটাই আমার বক্তব্য।’
কিছু সময় পর প্রতিবেদকের ফোন নম্বরে আবারও কল দেন মানিক। এই সময় তিনি বলেন, ‘আপনি আমার জিডি বিষয়টি কিভাবে জানতে পেরেছেন? ওটাতো আমরা মীমাংসা করে ফেলেছি।’
এই বিষয়ে জানতে ফারিয়া চৌধুরী শামান্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ‘এক মিনিট পর’ এই প্রতিবেদককে ফোন দেবেন জানিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। এরপর আর যোগাযোগ করেননি শামান্তা।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে জিডির বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এই জিডির বিষয়টি এখনও আমার হাতে আসেনি।’
এসআইয়ের হাতে জিডি না পৌঁছানোর বিষয়ে জানতে চাইলে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ‘আদালত থেকে অনুমতি নিয়ে জিডির তদন্ত শুরু হতে কিছু সময় লাগে। তবে জিডি হওয়ার পর তা তদন্ত কর্মকর্তার হাতে না পৌঁছার কোনো সুযোগ নেই।’
বিএস/ডিজে