s alam cement
আক্রান্ত
১০০৩১৯
সুস্থ
৭৪২৩১
মৃত্যু
১২৫৫

রক্তাক্ত ছাত্রকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নিতেই লেগেছে ১ ঘন্টা, পথেই মৃত্যু (ভিডিও)

রাস্তায় জমা পানির যানজটে আটকে ছিল অ্যাম্বুলেন্স

1

চট্টগ্রামের টাইগারপাসের সড়ক থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী শচীন দত্তকে সময়মতো হাসপাতালে নিতে পারলে তাকে বাঁচানো যেতো। রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে অ্যাম্বুলেন্সে করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে সময় লেগেছিল এক ঘন্টারও বেশি।

এদিকে ২৩ বছর বয়সী শচীনের সুরতহাল রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, তার মাথার এক পাশে ফেটে যাওয়া ও শরীরের পেছনের দিক কোমরের নিচের অংশে আঁচড়ানো ছাড়া বড় কোনো আঘাত ছিল না। ফলে মাথার ফাটা অংশ থেকে অতিরিক্ত রক্তপাতের কারণেই শচীনের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সময়মতো তাকে হাসপাতালে নিতে পারলে শচীনকে বাঁচানো যেতো বলেই মনে করছেন তার বন্ধু ও পরিবারের সদস্যরা।

রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় হওয়া বৃষ্টির কারণে তৈরি হওয়া জলাবদ্ধতার ফলে শহরের বেশিরভাগ সড়কেই ছিল যানজট। ফলে সিআরবি থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাড়ে ৪ কিলোমিটার দুরত্বে পৌঁছাতে এক ঘন্টারও বেশি সময় লাগে। আর এই এক ঘন্টার বেশিরভাগ সময়েই যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন শচীন— এমনটাই বক্তব্য শচীনকে হাসপাতালেই নিয়ে যাওয়া পথচারী আলমগীর হোসেনের। একপর্যায়ে ছটফট করতে করতে নিস্তেজ হয়ে যান শচীন। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শচীনকে উদ্ধার করে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া পথচারী আলমগীর হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা যখন উনাকে পাই তখন তিনি রাস্তায় পরেছিলেন। ছটফট করছিলেন, কোন কথা বলতে পারছিলেন না। কতক্ষণ আগে তিনি আহত হয়েছিলেন সেটি জানি না। তবে তাৎক্ষণিকভাবে একটা অ্যাম্বুলেন্স পাই আমরা। আমাদের অনুরোধে অ্যাম্বুলেন্সচালক রাজিও হন উনাকে হাসপাতাল পৌঁছে দিতে৷ কিন্তু উনি বলেন কেউ একজন সাথে যেতে হবে। তখন আমিও সাথে যাই। রাস্তায় প্রচন্ড জ্যাম ছিল। উনাকে হাসপাতাল নিতে আমাদের একঘন্টারও বেশি সময় লাগে।’

অ্যাম্বুলেন্স চালকের বরাত দিয়ে শচীনের বন্ধু অমিদুল হাসান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্সচালক আমাদের বলছিলেন প্রচন্ড জ্যামে অসহায়ের মত বসে থাকা ছাড়া আসলে আমাদের আর কিছুই করার ছিল না। সন্ধ্যায় বৃষ্টির পর রাস্তায় পানি জমে পুরা পথেই জ্যাম ছিল।’

Din Mohammed Convention Hall

শচীনের আরেক বন্ধু অনুপম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘শরীরে গুরুতর কোন আঘাত না থাকলেও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। হয়তো সময় মত তাকে হাসপাতাল নেয়া গেলে তাকে বাঁচানো যেত।’

শচীনের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট সম্পর্কে কোতোয়ালী থানার উপ পরিদর্শক শিমুল চন্দ্র দাশ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘উনার মাথায় আঘাত ছিল। নাক-মুখ রক্তাক্ত ছিল। এছাড়া শরীরের পেছনের অংশে ছেড়ড়ানোর আচড় ছাড়া আর বড় কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তিনি লালখানবাজার থেকে টাইগারপাস মুখি ছিলেন। টাইগারপাস মোড়ের আগে যে বাঘের মূর্তি আছে, সেটার সামনে ডিভাইডারের সাথে তার রক্তও পাওয়া গেছে। সবমিলিয়ে ধারণা করছি পেছন থেকে ভারী কোনো যানবাহনের ধাক্কায় তিনি ছিটকে গিয়ে ডিভাইডারের সাথে মাথায় আঘাত পান।’

এই ঘটনায় শচীনের চাচা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা এক চালকের বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন উপ পরিদর্শক শিমুল চন্দ্র দাশ।

নিহত শচীন দত্ত চট্টগ্রামের পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়।

এআরটি/সিপি

ManaratResponsive

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

1 মন্তব্য
  1. মো: শাহীন বলেছেন

    আহা..! চট্টগ্রাম এখন অনেক বাণিজ্যিক, হু হু করে মাথাপিছু আয় বাড়ছে, দায়িত্ববান রা টেকনিক্যালি জ্যামের ভোগান্তি দিয়ে সেটাই প্রমাণ করতে চান হয়তো.!👎

    চট্টগ্রাম টা কে ঢাকার মতো জ্যামের শহর না বানানো পর্যন্ত সেসব কুকুর গুলো যেন থামবেই নাহ..🤧

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।

ksrm