s alam cement
আক্রান্ত
৫২৭৩৬
সুস্থ
৩৯১১২
মৃত্যু
৬০২

সিডিএ’র ভূয়া ইঞ্জিনিয়ারের আহামরি কাণ্ড—ইশারায় ওঠে ভবন, বন্ধ হয় নির্মাণ কাজ

উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে দুর্নীতি

0

‘আমি সিডিএর ইঞ্জিনিয়ার, তোমাদের বিল্ডিংটা দু’তলা থেকে পাঁচ তলা করে দিবো, আমার হাতের ইশারায় সিডিএ চলে’ -এরকম চমকপ্রদ আশার বাণী শুনিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়াকে নিজের নেশায় রূপান্তরিত করেছেন সিডিএর সিনিয়র প্রকৌশলী পরিচয় দানকারী এক ভূয়া প্রকৌশলী।

নাম তার কাকন শীল, থাকেন নগরীর উত্তর হালিশহরে। বাস্তবে তিনি বেসরকারি একটি কোম্পানির কর্মচারী, কিন্তু সিডিএর কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার আশকারায় তিনি হয়ে উঠেছেন সিডিএর মত স্বনামধন্য একটি স্বায়িত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের ‘ভূয়া ইঞ্জিনিয়ার’।

কাকন তার ব্যবহৃত মোটর বাইকেও (চট্টমেট্রো হ ১৬-৯৮০২) সিডিএর নাম ব্যবহার করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। শুধু তাই নয়, কাকন নিজেকে সিডিএর বড় অফিসার দাবি করে বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি নির্মাণের অনুমতি নিয়ে দেওয়ার নামেও চালাচ্ছেন চাঁদাবাজি। আর কেউ তার মাধ্যমে কাজ করাতে না চাইলে সিডিএতে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাদের হয়রানি করারও অভিযোগ রয়েছে কাকনের বিরুদ্ধে।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অথরাইজড অফিসার ও আরো কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার নাম ব্যবহার করে তিনি এই চাঁদাবাজি করছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগিদের।

এ বিষয়ের সত্যতা জানতে নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসানের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ‘কাকন আমাদের সিডিএ’র কোন ইঞ্জিনিয়ার না, আর আমার নামে সে যদি চাঁদাবাজি করে থাকে তবে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার অনুরোধ করছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘যেহেতু সে সিডিএর কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী না সেহেতু সে কোনভাবেই তার গাড়িতে সিডিএ‘র নাম লিখতে পারে না, যদি সে এরকম করে থাকে তবে সে অন্যায় করেছে।’

Din Mohammed Convention Hall

জানা যায়, কাকনের এক প্রতিবেশিকে পাঁচতলার সিডিএ প্ল্যান নিয়ে দেওয়ার বিষয়ে একটি মৌখিক চুক্তি হয়। চুক্তিতে পাঁচতলা ভবনের অনুমতি নিয়ে দিবে এই শর্তে এক লক্ষ টাকার চুক্তি করেন এবং চুক্তি অনুযায়ী কয়েক দফায় আশি হাজার টাকা অগ্রিম নেয়। কিন্তু সে পাঁচতলার পরিবর্তে তিনতলার একটি অনুমতিপত্র এনে দিলে কাকনের প্রতিবেশি বকেয়া বিশ হাজার টাকা দিতে অসম্মতি প্রকাশ করে। আর সেই বিশ হাজার টাকার জন্য কাকন তার প্রতিবেশির নির্মাণাধীন তিনতলা ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে।

সিডিএর অথরাইজ অফিসার-২ এর প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসানের স্বাক্ষরিত চিঠিতে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। ভুক্তভোগিরা জানান, কাকন ১৩ এপ্রিল সিডিএ’তে অভিযোগ করে এবং দুই ঘণ্টার মধ্যে আমাদের কাছে কাজ না করার চিঠি এসে পৌঁছায়, সিডিএর কোন ধরনের পরিদর্শন ছাড়া কিভাবে একটি মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে আমাদের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলো সেটাই মাথায় আসছে না।

মজার বিষয় হলো, কাকন যদিও ১৩ তারিখ অভিযোগ করে কিন্তু সিডিএ’র পাঠানো চিঠিটি ১২ তারিখে ইস্যু হয়। কিন্তু তিনি অভিযোগ দেওয়ার আগে কিভাবে চিঠি ইস্যু হয় সেটা ভাবার বিষয়।

এসব বিষয়ের সত্যতা জানতে কাকন শীলকে ফোন করা হলে, তিনি মন্তব্য না করে ব্যস্ততার অজুহাত দেখান এবং পরে রির্পোটারের সাথে কোথাও বসে কথা বলারও প্রস্তাব দেন।

সম্প্রতি হালিশহরের নাথ পাড়ায় এক সরকারি কর্মচারীর ছয় তলা বাড়ির অনুমতি নিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গে এক লাখ টাকার বিনিময়ে তিনি সিডিএ’তে তদবির চালাচ্ছেন, কাকনের এমন কার্মকাণ্ডে বিব্রত খোদ সিডিএর কর্মকর্তারা। সিডিএর নাম ব্যবহার করে সিডিএর মান নষ্ট করার জন্য কাকনের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন সিডিএ কর্মচারী লীগ ও সিডিএ এমপ্লয়িজ এসোসিয়েশনের নেতারা।

বিএস/কেএস

ManaratResponsive

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।

ksrm