s alam cement
আক্রান্ত
৮৯৫৮৮
সুস্থ
৫৬৮৮০
মৃত্যু
১০৪৪

আর নেই ড. গাজী সালেহ উদ্দিন, করোনা কেড়ে নিল চবি শিক্ষকের জীবনটা

0

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. গাজী সালেহ উদ্দিন আর নেই। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।

শুক্রবার (৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় ঢাকার গুলশানের শিকদার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। করোনা আক্রান্ত হয়ে ওই হাসপাতালের আইসিইউ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন থাকার সময়ে গত তিন দিন ধরে তিনি ছিলেন লাইফ সাপোর্টে।

অধ্যাপক ড. গাজী সালেহ উদ্দিনের ছেলে তানভীর সালেহীন গাজী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ৩০ জুলাই তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকার গুলশানের শিকদার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ৩ আগস্ট তাকে আইসিইউ ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটলে মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) বিকেলে ড. গাজী সালেহ উদ্দিনকে লাইফ সাপোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়।

আর নেই ড. গাজী সালেহ উদ্দিন, করোনা কেড়ে নিল চবি শিক্ষকের জীবনটা 1

এর আগে ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের সিআরবিতে হাসাপাতাল নির্মাণের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তিনি অনেক লোকজনের সংষ্পর্শে এসেছিলেন। এর পরদিন থেকেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ফলে সিআরবির ওই সমাবেশ থেকে তিনি সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন বলে ধারণা করছেন তার পরিবারের সদস্যরা।

Din Mohammed Convention Hall

সালেহিন তানভীর গাজী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেছিলেন, ‘গুলশানের শিকদার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উনাকে ভর্তি করা হয়েছে। সকালের দিকে অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে যাওয়ায় উনাকে অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে।’

কবে থেকে তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন— এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পেতে তো কিছুদিন সময় লেগেছে। তবে উনার উপসর্গ দেখা দেয় কোরবানির দিন থেকে (২১ জুলাই)। এর আগে তিনি সিআরবিতে বক্তৃতা করেছেন। সেখানে অনেক বেশি মানুষের সংষ্পর্শে এসেছেন। আমার ধারনা সেখান থেকেই হয়েছেন। তবে এটা যেকোন ভাবেই হতে পারে। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরও তিনি সিআরবির হাসপাতাল নিয়ে নিজের মত করে এলোমেলোভাবে বিভিন্ন কথা বলছেন। এটা নিয়ে বেশ কনসার্ন উনি।’

অধ্যাপক ড. গাজী সালেহ উদ্দিন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। চট্টগ্রামের প্রগতিশীল বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে সাহসী ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তার। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধীর বিচারের ক্ষেত্রে তার লেখা বইয়ের তথ্যকে দালিলিক সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছিল। এছাড়াও ১/১১ এর সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রেপ্তার হওয়ার পর এর প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক আবু ইউসুফের সাথে তাকেও পতেঙ্গা র‍্যাব কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে অপদস্ত করা হয়েছিল।

ড. গাজী সালেহ উদ্দিনের জন্ম ১৯৪৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর। পৈত্রিক নিবাস নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা ইউনিয়নের বদরপুর গ্রাম। শহীদ পরিবারের সন্তান ও মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. গাজী সালেহ উদ্দিন বড় হয়েছেন চট্টগ্রাম শহরের পাহাড়তলীর পাঞ্জাবী লেন-এ (বর্তমানে শহীদ লেন)।

তিনি মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদ আলী করিম এবং মাতা হুরমোজা বেগমের দ্বিতীয় পুত্র। পিতা রেলওয়ের কর্মকতা হওয়ার সুবাদে তিনি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেছেন পাহাড়তলী রেলওয়ে স্কুলে।

পরবর্তীতে চট্টগ্রাম কলেজ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর উপমহাদেশের প্রখ্যাত সমাজ বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. অনুপম সেনের গবেষণা নির্দেশনায় ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন ও প্রক্টর ছিলেন।

এআরটি/সিপি

ManaratResponsive

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।

ksrm