s alam cement
আক্রান্ত
১০২৩১৪
সুস্থ
৮৬৮৫৬
মৃত্যু
১৩২৮

করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ছে দ্রুত, বিশ্বজুড়ে সতর্কতা

0

করোনাভাইরাসের রূপান্তরিত ধরন ওমিক্রন দক্ষিণ আফ্রিকার পাশাপাশি আরও ৪ দেশ ও অঞ্চলে শনাক্ত হয়েছে। এই দেশ ও অঞ্চলগুলো হলো বেলজিয়াম, বতসোয়ানা, ইসরায়েল ও হংকং। ধরনটিকে ‘উদ্বেগজনক’ বলে আখ্যায়িত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। আর ভারতের বিখ্যাত অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এমস) জানিয়েছে, করোনার এই নতুন ভ্যারিয়েন্টে টিকা কাজ নাও করতে পারে।

করোনাভাইরাসের নতুন এই ধরনটি মূল ভাইরাস ও তার অন্যান্য রূপান্তরিত ধরনগুলোর চেয়ে অনেক দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়তে বা মানুষকে আক্রান্ত করতে সক্ষম বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। তাতে আরও বলা হয়, প্রাথমিক যেসব তথ্য পাওয়া গেছে সেসব পর্যালোচনা করে বোঝা যাচ্ছে- করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিরাও ওমিক্রনে আক্রান্ত হতে পারেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হয় বি.১.১৫২৯ নামের এই রূপান্তরিত ধরনটি, পরে গ্রিক বর্ণমালা অনুসারে যার নাম দেওয়া হয় ওমিক্রন। ইতোমধ্যে এই ধরনটি দক্ষিণ আফ্রিকার বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে এবং যদি দ্রুত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা না হয়, সেক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে এটির ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণ প্রায় অসম্ভব হবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন আন্তর্জাতিক মহামারিবিদরা।

যুক্তরাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নতুন শনাক্ত হওয়া রূপান্তরিত ধরনটির স্পাইক প্রোটিন মূল করোনাভাইরাসের চেয়ে অনেকটাই ভিন্ন। ফলে, মূল করোনাভাইরাস থেকে এর ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা অনেক বেশি- এমন শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়ার উপায় নেই।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা ও তার আশপাশের দেশগুলো থেকে ফ্লাইট আগমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। পাশাপাশি, যে ব্রিটিশ যাত্রীরা গত কয়েকদিনের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা বা তার পার্শ্ববর্তী কোনো দেশ থেকে যুক্তরাজ্যে ফিরেছেন, তাদের কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

একই আদেশ জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডাও। আগামী সোমবার থেকে দক্ষিন আফ্রিকার সঙ্গে ফ্লাইট যোগাযোগ স্থগিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশ দু’টির সরকার।

ভারত, জাপান, ইসরায়েল, তুরস্ক, সুইটজারল্যান্ড এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতও কঠোর করেছে তাদের ভ্রমণ বিষয়ক বিধিনিষেধ।

তবে এই ধরনটি দ্রুত শনাক্ত করার কৃতিত্ব দক্ষিণ আফ্রিকাকে দিতে চায় ডব্লিউএইচও। সংস্থার জরুরি অবস্থা বিভাগের পরিচালক মাইক রায়ান দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারি স্বাস্থ্য সংস্থার প্রশংসা করে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘যখন দক্ষিণ আফ্রিকার জীবাণুবিদরা প্রথম ওমিক্রনকে শনাক্ত করলেন, সে সময় দেশটিতে এই ধরনটিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা মাত্র ২২ জন।’

‘অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে তারা এটিকে শনাক্ত করতে পেরেছেন এবং আমাদেরকে অবহিত করেছেন। পাশপাশি রূপান্তরিত এই ধরনটির সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্যও দিয়েছেন তারা।’

তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই প্রশংসায় হতাশা কাটছে না দক্ষিন আফ্রিকার জীবাণুবিদ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। তাদের বক্তব্য- নতুন এই রূপান্তরিত ধরনটির উদ্ভবের মূল কারণ হলো দক্ষিন আফ্রিকাসহ পুরো আফ্রিকা মহাদেশের দেশগুলোতে টিকাদান কর্মসূচি যথাযথভাবে পরিচালিত না হওয়া।

তাদের হতাশার আর একটি কারণ- যেখানে উন্নত দেশগুলোর উচিত বিশ্বজুড়ে টিকাদানে সমতার বিষয়ে জোর দাবি তোলা- সেখানে তারা ব্যস্ত দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা নিয়ে।

দেশটির সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ রিচার্ড লেসেলস বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এ বিষয়ে বলেন, ‘যে সব অঞ্চলে টিকাদান কম হবে- সেসব অঞ্চলে এই ভাইরাসটির নিত্য নতুন ধরন বিকশিত হবে। এটিই করোনাভাইরাসের বৈশিষ্ট।’

‘দক্ষিণ আফ্রিকায় টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করা মানুষের সংখ্যা উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম। টিকার ডোজের অভাবে আফ্রিকার অনেক দেশে সেই অর্থে টিকাদান কর্মসূচি এখন পর্যন্ত শুরুই করা যায়নি।’

‘যেখানে উন্নত দেশগুলোর এ বিষয়ে (টিকাদানে সমতা) সোচ্চার হওয়া উচিত, সেখানে তারা এখন ব্যস্ত আফ্রিকার দেশগুলোর ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ নিয়ে।’

ManaratResponsive

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।

ksrm