s alam cement
আক্রান্ত
১০২৪১৫
সুস্থ
৮৬৮৫৬
মৃত্যু
১৩৩১

খাগড়াছড়িতে ঐতিহ্যবাহী রাজপূণ্যাহ

0

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মং সার্কেলের ঐতিহ্যবাহী রাজস্ব আদায় উৎসব রাজপূণ্যাহ্ সীমিত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপন হয়েছে। শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে খাগড়াছড়ি শহরের মধুপুর এলাকায় মং রাজবাড়ি প্রাঙ্গনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। করোনার প্রকোপের কারণে এবারও বড় ধরণের উৎসব এবং মেলা আয়োজন করা হয়নি।

সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে দিনব্যাপী পূণ্যাহ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। এতে মং সার্কেল চিফ (মং রাজা) রাজা সাচিংপ্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য ও ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি।

আলোচনা সভায় জাতীয় মহিলা সংস্থার জেলা কর্মকর্তা উথান চৌধুরীর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কর সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন- হেডম্যানদের কার্যালয়কে সম্মান করতে হবে, রাজার কার্যালয়কে সম্মানিত করতে হবে। হেডম্যান-কার্বারিদের নিয়েই আমাদের অনেকগুলো মামলা নিষ্পত্তি করতে পারি। কিন্তু আজ আমাদের নিষ্পত্তি করবার সুযোগটি হারিয়ে ফেলেছি। হেডম্যান-কার্বারিদের ভাতা বর্তমান সরকারই দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের আমলেই এই ভাতার স্বীকৃতি পেয়েছে। আপনাদেরকে মূল্য দেওয়া, আপনাদের সাথে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, সহকারী পুলিশ সুপার জিনিয়া চাকমা, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শানে আলম, খাগড়াছড়ি ও গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার জাহিদ হাসান প্রমুখ।

কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন শনিবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বার্ষিক রাজস্ব খাজনা আদায় অনুষ্ঠানে মং রাজা সাচিংপ্রু চৌধুরী দিনব্যাপী ৮৮টি মৌজা প্রধান বা হেডম্যান এবং ৭০১জন পাড়া প্রধান (কার্বারী)-এর কাছ খাজনা ছাড়াও বিভিন্ন উপঢৌকন গ্রহণ করবেন। এদিন রাজবাড়িতে হেডম্যান-কার্বারীদের মধ্যাহ্ন ভোজের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

রাজবাড়ি সূত্রে আরো জানা যায়, তৃতীয় দিন (১২ ডিসেম্বর) নারী হেডম্যান ও নারী কার্বারিদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সংরক্ষিত মহিলা এমপি বাসন্তী চাকমা প্রধান অতিথি এবং মং রানী উখ্যেংচিং চেীধুরী সভাপতিত্ব করবেন। এছাড়াও তৃতীয় দিনের আনুষ্ঠানিকতায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য শতরুপা চাকমা এবং ইউএনডিপি’র প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন।

রাজপূণ্যাহ উদযাপন কমিটির আহবায়ক ও পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য হিরনজয় ত্রিপুরা জানান, প্রতিবছর ঐতিহ্যবাহী এই আয়োজন পার্বত্যাঞ্চলের তিনটি সার্কেলে বিভক্ত বসতির সকল জনগণের কাছে একটি ভিন্নধর্মী আবেদন রাখে। রাজপূণ্যাহকে ঘিরে ব্যাপক উৎসব আয়োজনও হয়ে থাকে কিন্তু করোনা মাহামারীর কারণে এবার এ সমস্ত কাজগুলো ছাড়া সমাধান ৩দিনব্যাপী রাজপূণ্যাহ উদযাপিত হচ্ছে।

সভায় মং রাজা সাচিংপ্রু চৌধুরী বলেন, ‘রাজপূণ্যাহ’ অনুষ্ঠান এবার অত্যন্ত ছোট আকারে করতে হচ্ছে। এ মহামারীর কারণে বিগত বছর উৎসব করতে পারেনি। আশা করি ভবিষ্যতে এই বিশ্ব থেকে করোনা মহামারী নির্মূল হলে বড় আকারে করতে পারবো।

তিনি আরও বলেন, এবারের রাজপূণ্যাহর প্রত্যাশা পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথাগত ভূমি ব্যবস্থাপনাকে সমুন্নত রাখা, ১৯০০ সালের শাসনবিধি (হিলট্র্যাক্ট ম্যানুয়েল) অধিকতর কার্যকর করা, হেডম্যান-কার্বারিদের সম্মানী বৃদ্ধি, হেডম্যানদের কার্যালয় নির্মাণ। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দাদের জীবনমান উন্নয়নের বিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

কেএস

ManaratResponsive

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।

ksrm