s alam cement
আক্রান্ত
৭৬৩২৬
সুস্থ
৫৪১৬১
মৃত্যু
৮৯৭

চট্টগ্রামে ইলিশের পিছু ছোটার উৎসবে বাগড়া বসালো উত্তাল সাগর

টার্গেট এবার ৬ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ

0

চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর আনন্দবাজার ঘাট। দুই মাস পর সেই ঘাটে আবার জেগেছে জেলেদের প্রাণচাঞ্চল্য। জাল, বোট ও জেলেদের পদচারণায় আবারও ব্যস্ত হয়েছে ঘাটটি। ইলিশের বংশ বিস্তারের জন্য সরকার ঘোষিত দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে আবারও শুরু হল সাগরে ইলিশ ধরার যজ্ঞ। ১৯ মে থেকে ২৩ জুলাই মোট ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর শুক্রবার (২৩ জুলাই) মধ্যরাত থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলেও এবার নিষেধাজ্ঞা বসালো প্রকৃতি। সরকারের বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হলেও প্রকৃতি শান্ত না হওয়া পর্যন্ত সাগরমুখী হতে পারছেন না জেলেরা। সাগর উত্তাল থাকায় ঝুঁকি নিয়ে সাগরে যেতে সাহস পাচ্ছেন না জেলেরা।

সামুদ্রিক মৎস্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চলতি বছর ৬ লাখ টন ইলিশ আহরণের টার্গেট ঠিক করা হয়েছে। দুই মাসের বিধিনিষেধ জেলেরা ঠিকমতো পালন করায় এবার ইলিশের প্রজনন ও বিস্তার ভালোভাবে হয়েছে বলে তারা আশা করছে।

সরকারিভাবে সারা দেশে নিবন্ধিত ২ লাখ ৯৮ হাজার ৫৯৫ জন জেলে ও জেলে শ্রমিক রয়েছে। বাণিজ্যিক ট্রলার রয়েছে ৩০টি। যান্ত্রিক মৎস্য নৌযান রয়েছে ৩২ হাজার।

এদিকে মাছ ধরতে সাগরে যেতে না পারলেও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, উপকরণ এবং খাদ্যসামগ্রী ট্রলারে ওঠানো শুরু হয়েছে শুক্রবার থেকেই। কর্ণফুলী তীরের বিভিন্ন ঘাটে জাল ও ফিশিং ট্রলারের প্রস্তুতি নেওয়া প্রায় শেষ। ইতিমধ্যে অধিকাংশ ফিশিং ট্রলারই সাগরে মাছ ধরার প্রস্তুতি শেষ করেছে। তারা আশা করছেন, সাগরের অবস্থা শান্ত হলে পুরোদমে শুরু হবে মাছ ধরা। এবার ৬ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ ধরার টার্গেট নিয়েছেন সামুদ্রিক মৎস অধিদপ্তরের দায়িত্বশীলরা।

চট্টগ্রামে ইলিশের পিছু ছোটার উৎসবে বাগড়া বসালো উত্তাল সাগর 1

এদিকে আবহাওয়া অফিস থেকে জানানো হয়, আগামী মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) ও বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) মুষলধারে বৃষ্টিসহ চলতি সপ্তাহের পুরোটাই কাটবে বৃষ্টিতে। লঘুচাপের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় বায়ু চাপের তারতম্য ঘটেছে। যার কারণে গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি হয়েছে। লঘূচাপ বড়জোর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। নিম্নচাপে পরিণত হলে মুষলধারে বৃষ্টি ঝরিয়ে এটি দুর্বল হয়ে যাবে বলে আশা করা হয় আবহাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে।

Din Mohammed Convention Hall

হালিশহরের নিরঞ্জন জলদাস জানান, মাছ ধরা ও মাছ বিক্রির ওপর তার চার সদস্যের পরিবারটি সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। ৬৫ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞায় ধার দেনায় চালিয়েছেন সংসার। তিনি বললেন, ‘এখন আবার মাছ ধরতে পারবো। দুঃখ কমবে। তবে বেশি লাভের জন্য তো আর জীবনের ঝুঁকি নিতে পারি না। এতদিন যখন কষ্ট করছি, আরও দু চারদিন কষ্ট করব। সাগর শান্ত হলেই সাগরে যাবো।’

তবে সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের মধ্যে অনেককে সাগরের কাছাকাছি মাছ ধরতে দেখা যাচ্ছে। যদিও সেই সংখ্যাটি খুবই কম। সাগরের আশেপাশে ছোট ছোট বোট সাম্পান করে মাছ ধরতে দেখা যায় বেশ কয়েকজন জেলেকে। আকারে ছোট হলেও প্রচুর মাছ পাচ্ছেন বলে জানান কয়েকজন জেলে। এত ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল সাগরে মাছ ধরার কারণ জানতে চাইলে কাট্টলী রাণী রাসমনি ঘাটের জেলে জমির উদ্দিন বলেন, ‘পেটের ক্ষুধার চেয়ে আর ভয়ংকর আর কী হতে পারে? পেটে ভাত না পড়লে দুনিয়ার কোনো কিছুই আর ভয়ংকর মনে হয় না। দুই মাসের বেশি বেকার বসেছিলাম। এখন সাগরে যেতে পারবো তাই গেছি। মাছও পাইছি অনেক।’

সিপি

ManaratResponsive

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।

ksrm