চট্টগ্রামে এলপিজির বাজারে অসাধু চক্রের দৌরাত্ম্য, বাড়তি দামে হিমশিম ক্রেতা

চট্টগ্রামে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা বাড়তি গুণতে হচ্ছে ক্রেতাদের। এতে দুর্ভোগ বেড়েছে নিত্যপণ্যের বাড়তি দামে হিমশিম খাওয়া সাধারণ মানুষের। সরকারি তদারকি সংস্থাগুলোর পর্যাপ্ত তদারকির দেখা নেই।

অসাধু একটি চক্র নিয়ন্ত্রণ করছে ব্যবসায়ীদের, ফলে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না—এমন বক্তব্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

জানুয়ারির শুরুতে গ্রাহক পর্যায়ে ১২ কেজি এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৪৫৫ টাকা নির্ধারণ করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। এরপর মাসের মাঝামাঝিতে ১৪ জানুয়ারি আরও ৪ টাকা বাড়িয়ে ১২ কেজি এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৪৫৯ টাকা নির্ধারণ করে সরকারি সংস্থাটি। এদিন থেকেই চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নতুন দর কার্যকরের কথাও জানায় তারা।

চট্টগ্রাম নগরীর খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা বাড়তি দামে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছেন দোকানিরা। বিভিন্ন কোম্পানির ১২ কেজি এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে বসুন্ধরা, বেক্সিমকো, টোটালসহ নামি কোম্পানিগুলোর গ্যাস সিলিন্ডারের দাম অন্যগুলোর চেয়ে আরও কিছুটা বেশি।

ক্রেতারা বলছেন, প্রতি মাসে বাড়িয়ে বা কমিয়ে দাম নির্ধারণ করে দিয়েই দায় সারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে কোনো সংস্থাকেই তদারকিতে দেখা যায় না। ফলে অসাধু ব্যবসায়ীরা ফায়দা লুটতে পারছে। বিপাকে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকেই।

রেহেনা আক্তার নামে চকবাজার এলাকার এক ক্রেতা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘দিন দিন সব কিছু দাম বাড়ে। বছরের শুরুতে গ্যাসের দামও বাড়লো। তবে এর চেয়ে দুঃখজনক হলো, সরকারের নির্ধারণ করা বাড়তি দামের চেয়েও বেশি দিয়ে দোকান থেকে গ্যাস সিলিন্ডার কিনতে হচ্ছে। গ্যাস ছাড়া তো চলা সম্ভব না, রান্নাবান্না ছাড়া তো না খেয়ে মরতে পারি না। তাই বাধ্য হয়ে আমাদের বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে। এসব দেখার দায়িত্ব সরকারের। মধ্যবিত্তের কষ্ট সরকার বুঝবে কী?’

তবে দোকানিদের দাবি, সরকার দাম নির্ধারণ করে দিলেও বাজারে সরবরাহকারীরা বাড়তি দামেই খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করে। তাই তারাও গ্রাহকদের কাছে বাড়তি দামেই বিক্রি করেন।

নগরীর দক্ষিণ খুলশী এলাকার বিসমিল্লাহ সাপ্লায়ার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার রবিউল আলম বলেন, ‘ডিলাররা যে দামে আমাদের কাছে সিলিন্ডার দেয়, তার চেয়ে সামান্য বাড়িয়ে আমরা বিক্রি করি। অল্প মুনাফা তো করা লাগবেই। তবে আমরা পারলে কম দামেই বিক্রির চেষ্টা করি। কারণ দাম কম হলে তো বিক্রি বেশি হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক মো. ফয়েজ উল্যাহ বলেন, ‘আমাদের তদারকি চলছে। আমরা এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছি। সবাইকে একসঙ্গে তো আর ম্যানেজ করা সম্ভব না। তবে কোনো ভোক্তা যদি অভিযোগ করেন, তাহলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নিবো।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm