s alam cement
আক্রান্ত
১০২২৪৫
সুস্থ
৮৬৮৫৬
মৃত্যু
১৩২৫

চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির দাম ১১ বছরে বাড়ল ১০ বার, ঋণ শোধের দায় গ্রাহকের ঘাড়ে

0

আগামী ডিসেম্বর থেকে নতুন দাম অনুযায়ী পানির বিল পরিশোধ করতে হবে চট্টগ্রাম ওয়াসার গ্রাহকদের। আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের জন্য পানির দাম ৫% বাড়ানোর সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ড। চট্টগ্রাম ওয়াসার বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণের টাকা পরিশোধ করার অংশ হিসেবে পানির এই দাম বাড়ানো হয়েছে বলে জানা গেছে। এভাবে গত ১১ বছরে অন্তত ১০ বার বাড়ানো হল ওয়াসার পানির দাম।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আবাসিকে প্রতি ইউনিট (এক হাজার লিটার) পানির দাম ১২ টাকা ৪০ পয়সার পরিবর্তে ১৩ টাকা ২ পয়সা ও বাণিজ্যিকে ৩০ টাকা ৩০ পয়সার পরিবর্তে ৩১ টাকা ৮২ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) ওয়াসার বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওয়াসা বোর্ডের ৬৪তম সভায় পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাবটি অনুমোদন পায়।

বর্তমানে চট্টগ্রাম ওয়াসার মোট সংযোগ সংখ্যা ৭৭ হাজার ২৬৫টি। এর মধ্যে আবাসিক সংযোগ ৭১ হাজার ৯৯২টি ও অনাবাসিক ৫ হাজার ২৭৩টি। বর্তমানে আবাসিকে ৯৩% এবং অনাবাসিকে ৭% ওয়াসার পানি ব্যবহৃত হচ্ছে।

এর আগে ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম ওয়াসা আবাসিকে প্রতি ইউনিট পানির দাম ৯ টাকা ৯২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৬ টাকা এবং বাণিজ্যিক খাতে প্রতি ইউনিট ২৭ টাকা ৫৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকার প্রস্তাব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল। তবে মন্ত্রণালয় সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেয়।

পরে ওই বছরের ফেব্রুয়ারি পানির দাম ৫ শতাংশ বাড়ায় চট্টগ্রাম ওয়াসা।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম ওয়াসার বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণের টাকা পরিশোধ করার অংশ হিসেবে পানির এই দাম বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে কয়েক হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ চলছে ওয়াসার অধীনে। বিভিন্ন সময়ে এসব প্রকল্পে বড় ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তবে পানির দাম বাড়ানোর জন্য যেসব প্রকল্পের ঋণশোধের অজুহাত দেখানো হচ্ছে বারবার, নানা অজুহাতে সেই প্রকল্পগুলোর বাজেট বাড়ানো হয়েছে বারবার। এসব প্রকল্পের দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে বিভিন্ন সময়ে। শুধুমাত্র চট্টগ্রাম ওয়াসার ভান্ডালজুড়ি পানি শোধনাগার প্রকল্পেই সময়মতো কাজ শুরু করতে না পারায় ব্যয় বেড়ে গেছে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকার বেশি।

চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি বিদেশে অর্থপাচার ও নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহর বিরুদ্ধে কেন তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হবে না— জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। পরে এ নিয়ে আর কোনো অগ্রগতি জানা যায়নি।

২০২০ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম ওয়াসার গ্রাহক চট্টগ্রামের মোমিন রোডের বাসিন্দা মো. হাসান আলী দুদকের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক বরাবর ‘চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম ফজলুল্লাহ’র গুরুতর দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি প্রসঙ্গে অভিযোগ’ শীর্ষক একটি আবেদন দেন। এতে তিনি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবর-প্রতিবেদনও উদ্ধৃত করেন।

কিন্তু সেসব অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় দুদকের নিষ্ক্রিয়তা এবং ফজলুল্লাহর পুনঃনিয়োগের সুপারিশ চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট আবেদন করেন তিনি। এরপর আদালত তার শুনানি একমাস মুলতবি রেখে এই সময়ের মধ্যে দুদককে পদক্ষেপ জানাতে বলে। কিন্তু গত বছরের ১২ নভেম্বর রিটটি ফের শুনানির জন্য উঠলেও দুদক সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানায়নি।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।

ksrm