চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেটের সভা আহ্বান করার দাবিতে উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। চিঠিতে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে একটি এক্সট্রা অর্ডিনারি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত করতে বলা হয়।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) বিকেলে শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যরা উপাচার্যের কাছে চিঠিটি হস্তান্তর করেন।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এবিএম আবু নোমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, গত ১১ জুন অনুষ্ঠিত শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় বেশ কিছু দাবি দাওয়ার মধ্যে নিম্নোক্ত দুটি দাবির বিষয়ে জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আপনাকে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।
প্রথম দাবি হলো—দীর্ঘদিন যাবৎ সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত না হওয়ার কারণে অনেক শিক্ষকের পদোন্নতি আটকে আছে। এমনকি কিছু সংখ্যক শিক্ষকের স্থায়ী নিয়োগও আটকে আছে। এসব শিক্ষকের স্থায়ী নিয়োগ জুনের পরে হলে তাদেরকে সর্বজনীন পেনশন স্কিম (প্রত্যয় স্কিম) এ অন্তর্ভুক্ত করার সম্ভাবনা রয়েছে। এমতাবস্থায়, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে একটি এক্সট্রা অর্ডিনারি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এসব সমস্যা সমাধানের জোর দাবি জানাচ্ছি।
দ্বিতীয় দাবি হলো—শিক্ষকদের শিক্ষা ছুটির বিষয়ে ২০% বাধ্যবাধকতা থাকার কারণে অনেক শিক্ষকের শিক্ষা ছুটিতে যাওয়ার ব্যপারে অনিশ্চয়তা দেখা দিচ্ছে। অথচ অনেক শিক্ষক নিজ উদ্যোগে বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপের মাধ্যমে ভর্তি নিশ্চিত করেছেন এবং তাদের অনেকের এমএস/পিএইচডি প্রোগ্রাম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য যে, এই বাধ্যবাধকতা থাকা অবস্থায়ও এমন কোন রেকর্ড নেই যে, ইতোমধ্যে কোন শিক্ষককে শিক্ষা ছুটি প্রদান করা হয়নি।
এমতাবস্থায় ২০% বাধ্যবাধকতার বিধান রহিত করার দাবি জানাচ্ছি। এটি রহিত না করা পর্যন্ত শিক্ষা ছুটির আবেদনকারী শিক্ষকদের শিক্ষা ছুটি মঞ্জুর করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুর রহমান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় শিক্ষকেরা আমাদের কাছে বেশকিছু দাবি দাওয়া জানিয়েছেন। এর মধ্যে দুটি দাবি খুব গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। যার কারণে অনেক শিক্ষকের পদোন্নতি আটকে আছে। এমনকি কিছু সংখ্যক শিক্ষকের স্থায়ী নিয়োগও আটকে আছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা শুনেছি আগামী বৃহস্পতিবার সিন্ডিকেটের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হবে। তাই আমরা উপাচার্যকে চিঠি দিয়ে বলেছি যাতে জরুরি সভার পরিবর্তে এক্সট্রা অর্ডিনারি সভার আয়োজন করে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘শিক্ষক সমিতি তিনটা কি চারটার দিকে একটা চিঠি দিয়ে গেছে। আমি একটা মিটিংয়ে ছিলাম। তাদের দাবিগুলো পুরো পড়ে দেখি নাই। আগামীকাল দেখব।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার কার্যপরিচালনা বিধিতে স্বাভাবিক অবস্থায় সাধারণভাবে প্রতি মাসে একটি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা বলা আছে। এতে আরও বলা আছে, প্রতি পঞ্জিকা বছরে ন্যূনপক্ষে সিন্ডিকেটের দশটি সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে এবং দুই সভার মধ্যবর্তী সময়ের ব্যবধান ৪০ কার্যদিবসের বেশি হবে না। তবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সর্বশেষ সাধারণ সভা হয়েছিল গত বছর নভেম্বর মাসে।
এমআই