s alam cement
আক্রান্ত
১০১৫১৬
সুস্থ
৮৬৪১৯
মৃত্যু
১২৮৯

পটিয়ায় ভোটের মাঠে নৌকার টিকিট পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু, সম্ভাব্য প্রার্থী শতাধিক

0

নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা না হলেও আগামী ডিসেম্বর মাসকে টার্গেট করে দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়ার ১৭ ইউনিয়নে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগাম প্রস্তুতি হিসেবে স্ব স্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীক নৌকা পেতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা মরিয়া হয়ে উঠেছেন। চলছে লবিং তদবির ও দৌড়ঝাপ। ধর্না দিচ্ছেন স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের দ্বারে দ্বারে।

সম্ভাব্য অনেক প্রার্থী আবার ঢাকায় গিয়ে নিজ নিজ রাজনৈতিক গুরুদের সাথে দেখা করে প্রার্থী হওয়ার জানান দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। নিজের পক্ষে মনোনয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় সাংসদ হুইপ শামসুল হক চৌধুরীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নিজ এলাকায় ব্যানার, পোস্টার সহ নানা তদবির- সুপারিশও শুরু করেছেন।

এছাড়াও নিজেদেরকে যোগ্য প্রার্থী প্রমাণে মরিয়া নেতাকর্মীরা। টার্গেট একটিই— চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা নিশ্চিত করা। অনেকে মনোনয়ন বাগিয়ে নিতে নানা কৌশল নিয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। যেভাবেই হোক নৌকা প্রতীক চাই-ই চাই— এমনই মনোভাব সবার।

পটিয়া উপজেলায় আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ে ১৭ ইউনিয়নে শতাধিক প্রার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন— শোভনদন্ডী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের বর্তমান চেয়ারম্যান এহসানুল হক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন, বর্তমান পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ আলমগীর, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আবুল হাসান খোকন, জসিম উদ্দিন শিশু, মোহাম্মদ আব্দুল করিমের।

খরনা ইউনিয়নে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য মোহাম্মদ মুরাদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মতিন চৌধুরী, বর্তমান চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান, পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মনজুরুল আলম, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সদস্য আব্দুল হান্নান লিটনের।

কচুয়াই ইউনিয়নে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে বর্তমান চেয়ারম্যান ইনামুল হক জসিম উদ্দিন, সাবেক চেয়ারম্যান পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আব্দুল খালেক, ঋষি বিশ্বাস, পটিয়া উপজেলা যুবলীগ নেতা এনামুল হক মজুমদারের।

Din Mohammed Convention Hall

দক্ষিণ ভুর্ষি ইউনিয়ন পরিষদের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে বর্তমান চেয়ারম্যান ও পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম, সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ সৈয়দের।

আশিয়া ইউনিয়নের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান এম এ হাসেম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ইমরান উদ্দিন বশির, পটিয়া মানবাধিকার ফোরামের সাধারণ সম্পাদক হাজী আরিফুর রহমান শাহ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম বেলাল উদ্দিন।

জিরি ইউনিয়নের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কালাম ভোলা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিমুল হক, চম্পা স্টিল মিলের মালিক আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ ফরিদ সওদাগর, পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ আব্দুল্লাহ আল হারুন, জিরি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম টিপু, জিরি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিন বাবু।

কাশিয়াইশ ইউনিয়ন থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান এম এ কাসেম,ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ জহির উদ্দিন, নুরুল হুদা মনোনয়ন চাইছেন।

ছনহরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন চাইবেন মোহাম্মদ ওসমান আলমদার, জসিম উদ্দিন, আনোয়ার তালুকদার।

ধলঘাট ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন চাইবেন ব্যবসায়ী আবুল বশর, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট উপজেলার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিজ।

কেলিশহর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন চাইবেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বিজন চক্রবর্তী, সরোজ সেন নান্টু।

হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন চাইবেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ চৌধুরী, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও বিগত নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে পরাজিত প্রার্থী ফৌজুল কবির কুমার, যুবলীগ নেতা আজগর আলী বাহাদুর।

জঙ্গলখাইন ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন চাইবেন বর্তমান চেয়ারম্যান গাজী ইদ্রিস, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অসিত বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক মরতুজা কামাল মুন্সি, পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য লিটন বড়ুয়া।

কুসুমপুরা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন চাইবেন বর্তমান চেয়ারম্যান ইব্রাহীম বাচ্চু, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা জাকারিয়া ডালিম, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা এম এজাজ, আবু সুফিয়ান টিপু, কুসুম পুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হোসেন রানার নাম শোনা যাচ্ছে।

এদিকে বিএনপি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়ায় আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নকেই ভোটে জেতার নিশ্চয়তা বলে মনে করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তাই নির্বাচনের মাঠে ভোটের চেয়ে নৌকা প্রতীক পেতে দৌড়ঝাঁপ করেছেন প্রার্থীরা। তাদের বদ্ধমূল ধারণা, আওয়ামী লীগের টিকিট পেলেই ভোট না পেলেও জয় নিশ্চিত। এ কারণেই ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন পেতে এত তীব্র প্রতিযোগিতা।

এই প্রতিযোগিতায় আবার অনেক জায়গায় বাড়ছে বিভক্তি ও কোন্দল। নিজেদের দল ভারী করতে ঘটছে অনুপ্রবেশ। আর এই অনুপ্রবেশের সুযোগ নিচ্ছেন ব্যবসায়ী, প্রবাসীসহ বিএনপি-জামায়াত ও বিভিন্ন দল থেকে আসা সুবিধাভোগীরা। আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতারা নিজের গ্রুপ-বলয় শক্তিশালী করতে অনুপ্রবেশের সুযোগ করে দেওয়া বাড়ছে হাইব্রিডের সংখ্যাও।

আবার ইউপি সদস্য (মেম্বার) পদে নির্বাচন নির্দলীয় হওয়ায় তা নিয়ে পাড়ায়-মহল্লায় যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। মেম্বার প্রার্থীরাও নিজেদের দলের ত্যাগী নেতা দাবি করে জয় নিশ্চিত করতে জোর লবিং চালাচ্ছেন। তাই দলের আনুকূল্য পেতে প্রতি ইউনিয়নে চলছে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা। এ সুযোগে প্রাধান্য পাচ্ছে নিজ বলয়ের লোক। তাই দলে দীর্ঘদিনের ত্যাগীদের চেয়ে নিজের গ্রুপের লোক ও অর্থ-সম্পদ প্রাধান্য পাচ্ছে। ফলে দলের ত্যাগী নেতারা অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন, পাশাপাশি প্রার্থী হচ্ছেন নতুন অনুপ্রবেশকারী ও হাইব্রিডরা। এতে তৃণমূলে সহিংসতার শঙ্কাও তীব্র হচ্ছে।

তবে বিষয়টিকে ভালোভাবে দেখছেন না দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তাদের দাবি, তৃণমূলকে উপেক্ষা করে প্রার্থী চূড়ান্ত করলে তা হবে মারাত্মক ভুল সিদ্ধান্ত। এতে প্রতিটি ইউনিয়নে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী হবেন। আর তা হলে নির্বাচনে দলের বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এক্ষেত্রে দলের স্থানীয় উচ্চপর্যায়ের নেতাদের স্বেচ্ছাচারিতা আছে কি না সে বিষয়ে হুইপের নজর দেওয়া উচিত বলে মনে করে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তাদের দাবি, মনোনয়ন প্রদানে কঠোর নজরদারি না করলে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে সুযোগ নেবে হাইব্রিড ও অনুপ্রবেশকারীরা।

চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী কোলাগাঁও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মাহবুবুল হক চৌধুরী বলেন, হুইপের নির্দেশক্রমে আমি এলাকায় গত দশ বছর ধরে তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করে সাধারণ মানুষের পাশি ছিলাম এখনো আছি। করোনাকালীন সময়ে মানুষের পাশে ছিলাম, এখনও আছি।

আশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী আরিফুর রহমান শাহ বলেন, আমি ছাত্রজীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে এখনও পর্যন্ত দলের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং দুঃসময়েও দলের জন্য কাজ করেছি নিঃস্বার্থভাবে। আমি প্রবাসেও দলের জন্য কাজ করেছি।

জঙ্গলখাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মরতুজা কামাল মুন্সী বলেন, জঙ্গলখাইন ইউনিয়নবাসীর সুখে-দুঃখে পাশে ছিলাম ও আছি এবং ভবিষ্যতেও থেকে মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজ নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধির পক্ষে এসব কাজ করতে গেলে অনেকটা অনুকূল পরিবেশ পাওয়া যায় তাই চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছি।

এদিকে পটিয়া উপজেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা আরাফাত আল হোসাইনী বলেন, ২৯ সেপ্টেম্বর জানা যাবে দ্বিতীয় দফার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দিন তারিখ।

সিপি

ManaratResponsive

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।

ksrm