পূর্ব রেলের ৩ আরএনবি সদস্য ক্লোজডের দুদিন পর ফের বহাল

শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে আরএনবিতে

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রাম বিভাগের চাঁদপুরে সাংবাদিক ও রেলওয়ে পোর্টারকে পেটানোর ঘটনায় ক্লোজড হওয়ার দুইদিন পর ফের কাজে বহাল রাখা হয়েছে তিন আরএনবি সদস্যকে। দুই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও সেই কমিটির প্রতিবেদন দেওয়ার আগেই তাদের ডিউটিতে নিয়োগ দেওয়া হয়।

লোকবল সংকটের কারণে এমনটা করা হয়েছে বলে আরএনবির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানালেও রেলের আরেক কর্মকর্তা এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

তিন আরএনবি সদস্য হলেন—হাবিলদার ইমাম হোসেন, সিপাহী তরিকুল ইসলাম ও সিপাহী মো. আবুল কালাম। তাদের ২৩ জুন চিফ কমান্ড্যান্টের (পূর্ব) পক্ষে মোহাম্মদ রেজওয়ান-উর-রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশে ক্লোজড করে চট্টগ্রামের আরএনবির ট্রেনিং সেন্টারে পাঠানো হয়।

জানা গেছে, গত ২১ জুন টিকিট কালোবাজারির সংবাদ সংগ্রহে চাঁদপুর রেলস্টেশনে যান স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী হাসিনুল আকরাম। সেখানে গিয়ে তিনি আরএনবির সদস্য তরিকুল ইসলামের রোষানলের শিকার হন। এ সময় হাসিনুলকে মারধর করেন তরিকুল। এ ঘটনায় একটি ভিডিও বার্তায় হাসিনুল তার পা ভেঙে গেছে দাবি করে তরিকুলের বিচার চান।

এরপর ২৩ জুন রেল পোর্টার পারভেজকে টিকিট কালোবাজারির অজুহাতে মারধর করেন কালাম, তরিকুল ও ইমাম। মূলত ওই গণমাধ্যমকর্মীকে মারধরের ঘটনার পর ভিডিও ধারণ করায় তাকে মারধর করা হয়।

পরে পারভেজকে সীতাকুণ্ডের কুমিরা স্টেশনে বদলি করে আনা হয়।

দুই ঘটনায় কালাম, তরিকুল ও ইমামকে ক্লোজড করে আরএনবি। তাদের এই ঘটনার তদন্তে দুটি কমিটিও গঠন করা হয়। এর মধ্যে রেলের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয় সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মেহেদী হাসানকে। অপর তদন্ত কমিটি করা হয় আরএনবির পক্ষ থেকে।

আরও জানা গেছে, আরএনবির সিপাহী কালাম প্রায় ২০ বছর ধরে চাঁদপুর রেলস্টেশনে কর্মরত রয়েছে। এর মধ্যে তাকে কয়েকবার বদলি করা হলেও এক থেকে দু’মাসের মাথায় তিনি আবারও চাঁদপুরে চলে আসেন। টিকিট কালোবাজারি থেকে শুরু করে স্টেশনের দোকান থেকে চাঁদা তোলেন কালাম।

চাঁদপুরের সাবেক এক বুকিং সহকারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আরএনবির পক্ষে আবুল কালাম প্রতিদিন মেঘনা এক্সপ্রেসের ৫০টি ও ঈদ স্পেশালের ২৫টি টিকিট বিক্রির জন্য নেন।

এ বিষয়ে জানতে লাকসাম আরএনবি চৌকির সিআই সালামত উল্লাহর মুঠোফোনে কল দিলে রিসিভ করেন ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকা এসআই মঞ্জু। তিনি জানান, সালামত উল্লাহ চিকিৎসা নিতে ভারত গিয়েছেন।

ক্লোজড হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মো. আবুল কালাম প্রতিবেদকের সঙ্গে উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘আমি ২১ জুন থেকে ছুটিতে ছিলাম।’ পরে ইমাম হোসেনের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে প্রতিবেদকের মুঠোফোন নম্বরে তিনি হাতে লেখা একটি সমঝোতার কাগজ পাঠান।

তিনজনকে ক্লোজড করার পর আবারও ডিউটিতে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে জানতে চাইলে আরএনবি কমান্ড্যান্ট (পূর্ব) মো. রেজওয়ান-উর-রহমান বলেন, ‘লোকবল সংকটের কারণে তাদের লাকসাম চৌকিতে পুনরায় দায়িত্ব পালনে পাঠানো হয়েছে।’

তবে অভিযুক্ত তিনজনকে লাকসাম চৌকিতে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা তারেক মোহাম্মদ ইমরান বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘তদন্ত শেষে না হতে তাদের ডিউটিতে ফিরিয়ে আনার সুযোগ নেই। বিষয়টি আমি খোঁজ নেবো।’

জেএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!