চট্টগ্রামের চিড়িয়াখানায় বাঘের জন্য নির্মিত নতুন খাঁচা উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুহুল আমিন। তিনি এই চিড়িয়াখানা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব। খাঁচার বাইরে তিনি অবস্থান নিলে একটি বাঘ খুনসুটিতে লিপ্ত হয় তার সঙ্গে। একপর্যায়ে ইউএনওকে জড়িয়ে ধরতেও দেখা গেছে ওই বাঘকে।
বুধবার (২১ এপ্রিল) এই ছবি নিজের ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করেন ইউএনও রুহুল আমিন। এ সময় তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ।
জানা গেছে, গত বছরের ১৪ নভেম্বর তিনটি বাঘের ছানার জন্ম হয় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায়। মায়ের দুধ না পেয়ে রোগাক্রান্ত হয়ে দুইটি ছানা মারা। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের জো বাইডেনের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানাতে বেচে যাওয়া বাঘ শাবকের নাম রাখা হয় তার নামে।
জন্মের পর প্রায় মুমূর্ষু জো বাইডেনকে পরম যত্নে নিজের ঘরের সদস্যের মতই বড় করে তুলেন কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ। মা দুধ না দেওয়ায় ছাগলের দুধ সিদ্ধ করে তাকে খাওয়াতে তিনি। নিজের হাতেই খাওয়াতেন এ দুধ। জন্মের নয়দিন এই শাবক কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠে। তার জন্য আলাদা বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠে ডা. শুভ’র। প্রায় ছয় মাস পর বাঘটিতে বুধবার বাঘের জন্য নির্মিত নতুন খাঁচায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
নতুন বাঘ খাঁচায় ছাড়ার আগে এ খাঁচাটিকে প্রায় দ্বিগুণের বড় পরিসরে নির্মাণ করা হয়। আগে বাঘের খাচা ছিল প্রায় ৩ হাজার ২০০ বর্গফুট। সম্প্রসারণের বাঘের খাঁচার আয়তন হয় প্রায় ৭ হাজার ৫০০ বর্গফুট। এই খাঁচায় থাকবে মোট ছয়টি বাঘ।
এদিকে বুধবার বাঘ জো বাইডেনকে খাঁচায় ছাড়া আগমুহূর্তে কিউরেটর ডা. শাহাদাত ও চিড়িয়াখানা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব রুহুল আমিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বাঘটিকে কিছু সময়ের জন্য মুল খাঁচার বাইরে রাখা হয়। সেসময় তাকে রুহুল আমিনের সঙ্গে খুনসুটিতে লিপ্ত থাকতে দেখা যায়। এ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরালও হয়।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও হাটহাজারী ইউএনও রুহুল আমিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘মানুব শিশুর মতই পরম যত্নে এই বাঘ শাবককে লালনপালন করেছে চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ। দিনরাত তাকে খাওয়ানো থেকে শুরু করে তার মানসিক সমৃদ্ধির জন্যও কাজ করেছেন তিনি। বুধবার আমরা ছয় মাসের এই বাঘ শাবককে চিড়িয়াখানার অন্যান্য পাঁচটি বাঘের সাথে থাকার ব্যবস্থা করছি।’
তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশনায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে আগের বাঘের খাঁচা সম্প্রসারণ করে সাড়ে সাত হাজার বর্গফুট করা হয়েছে। এতে করে বাঘও ভাল পরিবেশ পাবে। দর্শনার্থীরা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার বাঘ দেখতে পারবে।’