বড় বড় দুর্নীতি ধরে চাকরিই হারালেন চট্টগ্রামের আলোচিত সেই দুদক কর্মকর্তা
চাকরি খাওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন কর্ণফুলী গ্যাসের দুই কর্মকর্তা
কারণ দর্শানোর নোটিশ ছাড়াই চট্টগ্রামের সাবেক আলোচিত কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করে দিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কক্সবাজার ও কর্ণফুলী গ্যাসের দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে আলোড়ন তুলেছিলেন তিনি। পরে তাকে হঠাৎ চট্টগ্রাম থেকে পটুয়াখালীতে বদলি করা হয়। গুঞ্জন রয়েছে, দুর্নীতিবাজদের চাপের মুখে মাথা নত করে দুর্নীতি দমন কমিশন এমন সিদ্ধান্ত নেয়। এবার তাকে চাকরি থেকেই করা হল অপসারণ। শরীফ উদ্দিন বর্তমানে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, পটুয়াখালীতে উপসহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে দুদক প্রধান কার্যালয়ের একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণের এই আদেশ দেওয়া হয়েছে। অথচ তাকে ইতিপূর্বে কোনো ধরনের কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে, চট্টগ্রামভিত্তিক কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুদক কমিশন কর্তৃক আনীত অভিযোগের প্রক্ষিতে তদন্ত প্রতিবেদন কমিশন বরাবরে দাখিল করার গত ৩০ জানুয়ারি দুদক কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিনের নিজ বাসার নিচে এসে জানে মেরে ফেলা সহ দুদক থেকে চাকরিচ্যূত করার হুমকি দেন কেজিডিসিএলের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং পেট্রোবাংলা পরিকল্পনা ও পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক মো. আইয়ুব খান চৌধুরী এবং কেজিডিসিএলের আরেক কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ মোরশেদ উল্লাহ। ওইদিনের ঘটনায় সাবেক ও বর্তমান দুই কর্মকর্তার হুমকি দেওয়ার ১৬ দিনের মাথায় দুদক চাকরি হারালেন দুদক কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিন।
বর্তমান কর্মস্থলে কর্মরত থাকা অবস্থায় কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ এক চিঠির মাধ্যমে দীর্ঘ চাকরি জীবন থেকে অপসারণ বিষয়ে দুদক কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘আমাকে ইতিপূর্বে কর্তৃপক্ষ থেকে অপসারণ করার বিষয়ে কোনো ধরনের কারণ দর্শানো নোটিশ করা হয়নি। এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অন্যায়। এভাবে হঠাৎ করে চাকরি থেকে অপসারণ করে আমার প্রতি কমিশন অবিচার করেছে। আমি কখনও কোনো অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করিনি বলে আজ আমার এই পরিণতি। আমি কর্তৃপক্ষের কাছে ন্যায়বিচার চাই।’
সরকারি চাকরি বিধিমালার নবম অধ্যায়ের ৫৪ (১) নম্বরে বলা হয়, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ প্রদর্শন না করে এবং এক মাসের নোটিশ প্রদান করে অথবা উক্ত নোটিশের পরিবর্তে এক মাসের বেতন প্রদান করে কোনো শিক্ষানবিসের চাকরি অবসান ঘটতে পারে এবং শিক্ষানবিশ তাহার চাকরি অবসানের কারণে কোনো প্রকার ক্ষতিপূরণ পাবে না। এছাড়া ৫৪ (২) নম্বর বলা হয়েছে, এই বিধিমালায় ভিন্নরুপ যা কোনো কিছুই থাকুন না কেন, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ না দর্শাইয়ে কোনো কর্মচারিকে নব্বই দিনের নোটিশ প্রদান করে অথবা নব্বই দিনের বেতন নগদ পরিশোধ করে তাকে চাকরি অপসারণ করতে পারে।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ৭ ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর দফতরে কর্মরত ছিলেন। সেখানে ৩ বছর ৭ মাস দায়িত্বপালনকালে রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে পাসপোর্ট ও এনআইডি প্রদান করার দায়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ২০টি মামলা দায়ের করা হয়। পেট্রোবাংলার অধীনে থাকা চট্টগ্রামভিত্তিক কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল), বাংলাদেশ রেলওয়েতে খালাসি নিয়োগের মামলা ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সম্পদের অনুসন্ধান দাখিলও করা হয়েছে।
একই সঙ্গে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী সাইফুল করিম ও মো. আমিনের বিরুদ্ধে সম্পদের মামলা, চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে মামলা ও একাধিক মামলার সুপারিশ, কর্ণফুলী গ্যাসে শিল্প গ্রাহক আবুল খায়ের গ্রুপ, ক্রাউন স্টিল, জাকির হোসেন রি-রোলিং মিলস লিমিটেড, বায়েজিদ স্টিল লিমিটেড, ইউনিটেক্স স্পিনিং মিলস লিমিটেড, আর এফ বিল্ডার্স সহ বড়বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা রুজু ও সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া একটি স্পর্শকাতর ও সরকারের মূল্যবান জ্বালানি সম্পদ প্রাকৃতিক গ্যাস চুরিসহ অন্যান্য বিষয়ে অনুসন্ধান করে তিনটি মামলা করা হয়।
২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর তারিখে কমিশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৪০ জনকে চার্জশিটভুক্ত ও ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা রজুর সুপারিশ করে তিনটি পৃথক সাক্ষ্য-স্মারক (তদন্ত-প্রতিবেদন) তদারককারী কর্মকর্তার কাছেও দাখিলও করা হয়েছে। চট্টগ্রামে স্বাস্থ্য খাতে চরম অনিয়ম নিয়ে মোট ৫টি মামলা করার সুপারিশ করা হয়েছে কমিশন বরাবরে। এছাড়া কমিশন বরাবরে আরও বিভিন্ন নথি দাখিল করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৬ জুন দুদক প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ আদেশে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ থেকে উপসহকারী পরিচালক হিসেবে মো. শরীফ উদ্দিনকে হঠাৎ পটুয়াখালীতে বদলি করা হয়।
এএম/সিপি
দেশটা যখন চোর আর দূর্ণীতিতে ভরপুর সেখানে সৎ ও দেশপ্রেমিক সেবকের রক্ষক হবে কে!!!!
দুর্নীতিবাজ সরকারের অধীনে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা থাকে অবশ্যই ভালো মানুষের রয়েছে আর যারা ভাল মানুষ তাদের অবস্থা ঠিক এই শরিফ উদ্দিনের মতই হয়
হে হে হে, দুর্নীতির ফাঁদে পড়লে দুদক নিজেও বিলুপ্ত হবে। দেখি এবারও প্রধানমন্ত্রী ছাড়া পরিত্রাণের ভরসা নাই।
দুধ দই কলা …ডিপার্টমেন্ট নিজেরাই করাপ্টেড ….বাকিদের অবস্থা হতেই পারে …তারপরেও এসব দায়িত্ববান রা নুন্নতম লজ্জাবোধ নাই
Dudok ashole dudok chalay na. Upor mohol theke notice ashe. Pm office and advisors r main corrupted.
Aps ferdous dudok chalay r take chalai…
চট্টগ্রামে দুর্নীতি বিরোধী লোকেরা বারবার মার খাচ্ছে দুর্নীতি বাজ চক্রের হাতে।এই জায়গা থেকে চট্টগ্রাম কে রক্ষা করা একান্ত প্রয়োজন।
বাংলাদেশে সততা,,ন্যায় নীতিবান,,এগুলো বহুকাল আগে মারা গিয়েছে,,,
দেশটা মগের মুল্লুকে পরিণত হয়েছে। অন্যায় অবিচারের প্রতিবাদ করার কেউ কি নাই?
দেশটা মগের মুল্লুকে পরিণত হয়েছে। অন্যায় অবিচারের প্রতিবাদ করার কেউ কি নাই?
শরিফ উদ্দিন আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন।