s alam cement
আক্রান্ত
৩৮৭৫৫
সুস্থ
৩৩৬৬৭
মৃত্যু
৩৮৪

‘সিট নেই’, করোনা সংক্রমণ বাড়তেই চট্টগ্রামের হাসপাতালে সেই পুরনো চিত্র

0

করোনা রোগীর চাপে আবারও হিমশিম খাচ্ছে চট্টগ্রামের হাসপাতালগুলো। দিন দিন প্রকট হচ্ছে শয্যা সংকট। প্রতিদিনই নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে আইসিইউ ও সাধারণ শয্যা সংকট। বাড়ছে রোগীদের হাহাকার, দুর্ভোগ ও চরম ভোগান্তি। ফের দেখা দিয়েছে এক বছর আগে রোগী নিয়ে ছোটাছুটির সেই করুণ চিত্র।

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার তৈলারদ্বীপ গ্রামের একজন রোগী করোনা উপসর্গ নিয়ে ভুগছিলেন কয়েকদিন ধরে। গত শনিবার রাতে মুমূর্ষু অবস্থা হলে চিকিৎসক আইসিইউতে ভর্তির পরামর্শ দেন। কিন্তু রাতে সরকারি-বেসরকারি কোনো হাসপাতালে মেলেনি আইসিইউ শয্যা। গত শনিবার দিনগত রাতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে মেলে আইসিইউ শয্যা। কিন্তু গত রবিবার ভোরেই তিনি মারা যান।

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জনের প্রতিদিনের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা শনাক্তের হার। গত ১৬ মার্চ শনাক্ত ছিল ৭ শতাংশ। পরের দিন সেটি বেড়ে গিয়ে হয় ৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এভাবে ক্রমবর্ধমান হারে বাড়তে থাকে শনাক্ত। ১৯ মার্চ শনাক্ত হয় ৯ শতাংশ, ২০ মার্চ শনাক্ত হয় ১১ শতাংশ এবং ২১ মার্চ শনাক্তের হার গিয়ে দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

আগেরদিন (২২ মার্চ) জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ‘করোনা ভাইরাস সংক্রমণজনিত উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সার্বিক কার্যক্রম সমন্বয় ও করণীয় নির্ধারণ’ সভায় চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন জানিয়েছিলেন, চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ২৫০টি সাধারণ ও ১০টি আইসিইউ শয্যা এবং চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ১৫০টি সাধারণ ও ১০টি আইসিইউ শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কিন্তু গত চারদিন ধরে জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউর ১০টি শয্যাতেই রোগী ভর্তি থাকছে। তাছাড়া বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউগুলোও এখন রোগীতে পূর্ণ।

চমেক হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. অজয় দেব বলেন, ‘সংক্রমণ বাড়ছে, সামনে আরও বাড়বে। শয্যা সংকট দেখা দেবে। আগে যেখানে দৈনিক সংক্রমণ ৪০০-তে নেমে এসেছিল, এখন তা বেড়ে ২ হাজার ৮০০ হয়েছে। ফলে সতর্ক হওয়ার কোনো বিকল্প নেই এখন থেকেই। না হয় গতবারের চেয়ে চরম মূল্য দিতে হবে।’

Din Mohammed Convention Hall

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. রাজদীপ বিশ্বাস বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে এ হাসপাতালের আইসিইউতে রোগী ১০ জনই ভর্তি থাকছে। এখন যা আক্রান্তের ফল দেখা যাচ্ছে তাতে কমপক্ষে গত দুই সপ্তাহ আগে পর্যন্ত যা হয়েছে তার প্রতিফলন। আর এখন যা চলছে তার ফল আসবে আরও দুই সপ্তাহ পর।’

সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘চট্টগ্রামে কয়েকদিন ধরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তাই এখন থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক-সচেতন করতে আমরা নানা কর্মসূচি পালন করছি।’

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আগেরদিন (২৩ মার্চ) এক দিনেই নতুন করে ২৭২ জন আক্রান্ত হয়। এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট আক্রান্ত হয় ৩৮ হাজার ২৩ জন। এদের মধ্যে মারা গেছেন ৩৮৩ জন। এর মধ্যে মহানগরের ২৮১ জন ও বিভিন্ন উপজেলার ১০২ জন।

করোনা সংক্রমণ রোধে জেলা প্রশাসক বলেছিলেন, ‘গণপরিবহনে যাত্রীদের মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে নগরীর তিনটি প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হবে। জেলা প্রশাসন ও বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ নিয়মিত সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। করোনা সংক্রমণ কমে না আসা পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’

এমএহক

ManaratResponsive

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।

ksrm