কেডিএস খলিলের ছেলেকে পুরো সাজাই খাটতে হবে, রিভিউ আবেদন খারিজ

চট্টগ্রামে ভারতীয় নাগরিক জিবরান তায়েবীকে খুনের দায়ে সাজা পাওয়া ইয়াছিন রহমান টিটুর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ বহাল রেখে রিভিউ (পুনর্বিবেচনার আবেদন) খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে পুরো সাজা না খেটে কারাগার থেকে বেরুনোর চেষ্টা বিফলে গেল টিটুর।

ইয়াছিন রহমান টিটু চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পগ্রুপ কেডিএসের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি খলিলুর রহমানের ছেলে।

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৭ সদস্যের আপিল বেঞ্চ উভয় পক্ষের শুনানি শেষে রিভিউ খারিজ করে দেন।

চট্টগ্রাম সেন্ট্রাল মেরিটাইম (বিডি) লিমিটেডের প্রিন্সিপাল রিপ্রেজেনটেটিভ হিসেবে কর্মরত থাকাকালে ১৯৯৯ সালের ৯ জুন অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে জিবরান তায়েবীকে আগ্রাবাদের শেখ মুজিব রোডের চুংকিং রেস্টুরেন্টের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়। জিবরানের বাবা ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের মহাপরিচালক। চাকরির সুবাদে জিবরান তার স্ত্রী তিতলী নন্দিনীকে নিয়ে চট্টগ্রামে বসবাস করতেন।

জিবরান খুনের পরদিন চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং থানায় জিবরানের সহকর্মী জেমস রায় একটি মামলা দায়ের করেন।

১৯৯৯ সালের ২২ নভেম্বর এ মামলার তদন্ত কর্মকতা আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। এই আটজন হলেন— ইয়াছিন রহমান টিটু, মো. ওসমান আলী, আলী আকবর ওরফে দিদারুল আলম, জিল্লুর রহমান, জাহিদ হোসেন ওরফে কিরণ, মো. সিদ্দিক, ওমর আলী ও আলমগীর।

Yakub Group

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত ২০০২ সালের ১২ এপ্রিল এ মামলায় পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে ইয়াছিন রহমান টিটু ছাড়াও ওমর আলী ও আলমগীরকে খালাস দিয়ে দেন।

কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০০৭ সালের ২৮ মার্চ হাইকোর্ট পলাতক টিটুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

একই সঙ্গে নিম্ন আদালতে খালাস পাওয়া ওমর আলী ও আলমগীরকেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। তবে নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন পাওয়া মো. সিদ্দিককে উচ্চ আদালতের রায়েও খালাস দেওয়া হয়।

হাইকোর্টের রায়ের পর ২০১১ সালের ১০ অক্টোবর বিদেশ থেকে এসে চট্টগ্রামের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন টিটু। ১৭ অক্টোবর কারাগারে থেকেই তিনি আপিলের আবেদন করেন।

পরের বছর ১ আগস্ট আপিল খারিজ হলে টিটুর যাবজ্জীবন সাজা বহাল থাকে। পরে ২০১৪ সালে সর্বোচ্চ আদালতের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন টিটু। ৯ বছর আগের সে আবেদনটিই বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) খারিজ করে দিলেন সর্বোচ্চ আদালত।

আদালতে ইয়াছিন রহমান টিটুর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী ও সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।

বছরখানেক আগে কেডিএস গ্রুপের কেওয়াই স্টিলের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মুনির হোসেন খান চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি শিল্পপতিপুত্র ইয়াসিন রহমান টিটুর বিরুদ্ধে কারাগারের ভেতরেই কেডিএস গ্রুপের প্রতিষ্ঠান কেওয়াই স্টিলের ব্যবসায়িক নীতিনির্ধারণী সভা করার অভিযোগ তুলে ওই সভা চলাকালে তাকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরেই মারধরের অভিযোগ তোলেন।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!