s alam cement
আক্রান্ত
১০২৪১৫
সুস্থ
৮৬৮৫৬
মৃত্যু
১৩৩১

খালেদার বিদেশ যেতে একমাত্র বাধা প্রধানমন্ত্রী

চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশে খন্দকার মোশাররফ

0

বিদেশ গিয়ে চিকিৎসা করতে না পারার যে শর্তে খালেদা জিয়াকে জামিন দেয়া হয়েছে সেই শর্তকে ‘মানবাধিকার বিরোধী শর্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এমন শর্ত দেয়া হয়েছে বলেও এসময় উল্লেখ করেন তিনি।

বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যেতে আইনে কোন বাধা নেই বলেও দাবি করেন তিনি। মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে বাকলিয়া থানার কালামিয়া বাজারের কে বি কনভেনশন হল মাঠে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন ড. মোশাররফ।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, আজকে তিনি (খালেদা জিয়া) বাড়িতে আছেন, তার সাজা অস্থায়ীভাবে স্থগিত করা হয়েছে। এই স্থগিত করার ব্যাপারেও দেশের প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে শর্ত দিয়ে দিয়েছে। কি শর্ত ? দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করতে পারবেন না। এই শর্ত মানবাধিকার বিরোধী শর্ত। এই শর্ত সংবিধান মোতাবেক একজন মানুষের মৌলিক অধিকারকে খর্ব করার শর্ত।

বেগম জিয়ার বিদেশ চিকিৎসা নিতে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীকে বাধা হিসেবে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘শেখ হাসিনা বলেছেন, বেগম জিয়াকে বাড়িতে থাকতে দিয়েছেন, এটাই নাকি উনি বেশি করেছেন। তার অর্থ হচ্ছে, একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং বেগম জিয়ার জনপ্রিয়তার কারণে আজকে একটি বানোয়াট মামলায় তারই নির্দেশে সাজা দেওয়া হয়েছে। এদেশের মানুষের দাবির চাপে বাধ্য হয়ে তিনি বেগম জিয়াকে সাময়িক কারাদণ্ড স্থগিত করে বাড়িতে থাকতে দিয়েছেন। আজকে তিনি হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। এর অর্থ সবকিছু আজকের প্রধানমন্ত্রীর ইঙ্গিতে হচ্ছে।’

খালেদার বিদেশ যেতে একমাত্র বাধা প্রধানমন্ত্রী 1

আইনি ভাবেই বেগম জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এক টাকা উত্তোলন না করেও কিভাবে এতিমের টাকা মেরে খেয়েছেন এমন প্রশ্ন করে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। আইনে বিনা শর্তে বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো সম্ভব। দেশের মানুষের দাবি বেগম জিয়াকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।’

বেগম খালেদা জিয়ার বিনা শর্তে মুক্তি দাবি জানিয়ে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী সরকার দেশকে ধ্বংসের শেষপ্রান্তে নিয়ে গেছে। সরকারকে একটি ধাক্কা দিতে পারলেই কোন ধরনের অস্তিত্ব থাকবে না। পুলিশকে থানায় রাখেন, মাঠে আওয়ামী লীগকে পাঠান। তখন মাঠে প্রমাণ করবো।’

ড. মোশাররফ বলেন, আজকের স্বতঃস্ফূর্ত এই সমাবেশ প্রমাণ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। এই সমাবেশ প্রমাণ করে দেশের ১৮ কোটি মানুষ চায় বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে দিয়ে উনাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেয়া হোক। সেই দাবিতেই আমরা চট্টগ্রামে এসেছি।

আজ বাংলাদেশের ৫০ বছর হয়েছে, আমরা স্বাধীন হয়েছি। আমরা সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, এই ৫০ বছর পরে এই স্বাধীন সার্বভৌম দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী আজ হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তাকে বিদেশে পাঠিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য সারা বাংলাদেশে আজ সমাবেশ করে আমাদের দাবি জানাতে হচ্ছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। যে কোনো মানুষের বাংলাদেশে মৌলিক, মানবিক অধিকার আছে, যে কোনো ব্যক্তি চিকিৎসার জন্য যে কোনো দেশে যেতে পারেন। আর আজকের সরকার প্রধান এই দেশনেত্রীর প্রতি প্রতিহিংসার কারণে একটি বানোয়াট মামলায় কারাগারে বন্দি করে রেখেছে।

তিনি বলেন, আজ আওয়ামী লীগের নেতা, মন্ত্রী-এমপিরা বলেন- বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে যান, এটা নাকি আইনে নাই। প্রেসিডেন্টের কাছে আবেদন করেন। প্রেসিডেন্টের কাছে আবেদনের জন্য আওয়ামী লীগের কোনো মন্ত্রীর আমাদের সবক দিতে হবে না। আবেদন করব কি করব না- সেটা বিএনপির একজন সাধারণ কর্মীও জানে। যদি কোনো ব্যক্তি সত্যিকারের দোষ করে সাজা পান, তাহলে তিনি দোষ স্বীকার করে প্রেসিডেন্টের কাছে আবেদন করে ক্ষমা চাইতে পারেন। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া কোনো দোষ করেনি। তিনি দোষী নন।

তাকে গায়ের জোরে সরকারের নির্দেশে একটি ভুয়া মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি নাকি এতিমের কোটি কোটি টাকা মেরে খেয়েছেন, অথচ ওই দুই কোটি টাকা এখনও ব্যাংকে। সেই টাকা এখন বেড়ে আট কোটি টাকার বেশি হয়েছে। যদি ব্যাংক থেকে একটি টাকাও উত্তোলন না হয়ে থাকে, তাহলে বেগম জিয়া কিভাবে এতিমের টাকা মেরে খেলেন? অর্থাৎ এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি দোষী না হয়েও দোষ স্বীকার করে প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন, সেই নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নন।

বেগম খালেদা জিয়া আপোষহীন নেত্রী। এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় তিনি সেটা প্রমাণ করেছেন। সেদিন আওয়ামী লীগ এরশাদের সাথে হাত মিলিয়ে নির্বাচনে গিয়েছিল, বেগম জিয়া আপসহীন ছিলেন। অথচ আজ তিনি আপস করবেন, কত বড় দুঃসাহস! আওয়ামী লীগের যেসব নেতা, মন্ত্রী-এমপিরা এসব কথা বলেন, তাদের বলছি- বেগম খালেদা জিয়া কোনো দোষ করেননি, প্রেসিডেন্টের কাছে দোষ স্বীকার করে আবেদন করার প্রশ্নই আসে না।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এদেশের একজন আপোষহীন নেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তাকে এসব কথায় কাজ হবে না। আমরা প্রেসিডেন্টের কাছে কোনোদিনও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আবেদন করব না। আইনি লড়াইয়ে আমরা আছি। তবে আজ বেগম খালেদা জিয়াকে যে আইনে সাময়িকভাবে সাজা থেকে স্থগিত রাখা হয়েছে, সেই আইনের মাধ্যমেই বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে সরকার অনুমতি দিতে পারে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য নানা শর্ত দিচ্ছেন। আজ বলছেন, তার কিছু করার নেই।

আমরা পরিস্কারভাবে বলতে চাই, বেগম জিয়াকে বিদেশে নিতে আইনের কোনো বাধা নেই। বাধা হচ্ছে- ভোট ডাকাতির প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীই একমাত্র বাধা, সরকারই একমাত্র বাধা। তাই সারা বাংলাদেশের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের নেত্রীর মুক্তি চায়। যে শর্তে বেগম জিয়ার সাজা অস্থায়ীভাবে স্থগিত করা হয়েছে, সেই শর্ত উঠিয়ে দিয়ে আমাদের নেত্রীকে যে কোনোসময় চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে বাধা দূর করতে পারেন। তাই বাধা একমাত্র সরকার, বাধা একমাত্র প্রধানমন্ত্রী।

এআরটি/কেএস

ManaratResponsive

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।

ksrm