সন্তানসম্ভবা হয়েও বারবার স্বামী আর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের চাপের মুখে ভ্রুণ নষ্ট করতে বাধ্য হন সাজু আক্তার নামে এক নারী। অবশেষে আর সহ্য করতে না পেরে ভ্রুণ হত্যার অভিযোগ এনে দুবাই প্রবাসী স্বামীসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ওই নারী।
অভিযুক্ত স্বামীর নাম সফিউল আলম। মামলার অপর আসামিরা হলেন সাজু আক্তারের শাশুড়ি, ও দুই ননদ।
বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম শফি উদ্দিনের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদী পক্ষের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বলেন, ২০১৬ সালে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার উত্তর পদুয়া পশ্চিম খুরুশিয়ার সাজু আক্তারের সাথে কাজী সফিউল আলমের বিয়ে হয়। সফিউল একই থানার খিলমোগল খামারিপাড়া হোসনাবাদ এলাকার বাসিন্দা। বিয়ের পর কয়েকবার শফিউল আলম দেশেও এসেছেন।
প্রথমবার ২০১৮ সালে সাজু আক্তার গর্ভবতী হলে তার শ্বশুরবাড়ির পাশের এক চিকিৎসকের কাছ থেকে এনে গর্ভপাতের ওষুধ খাওয়ান। সাজু আক্তারকে জানানো হয়, গর্ভধারণের জন্য তাকে ডাক্তার দেখিয়ে ভিটামিন ক্যাপসুল নেবেন। কিন্তু ওষুধ খাওয়ার পর দিন থেকে সাজু আক্তারের রক্তক্ষরণ শুরু হয়। গর্ভপাত হয়ে যায় সাজু আক্তারের।
২০২০ সালে আরেকবার গর্ভধারণ করলেও একই অবস্থার সৃষ্টি করেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। চলতি বছর আবারও সন্তানসম্ভবা হলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন সন্তানটিকে নষ্ট করতে মরিয়া হয়ে উঠেন। নানা ছুঁতোয় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া চেষ্টা করেন আবারও সাজু আক্তারের শাশুড়ি। কিন্তু ডাক্তারের কাছে না গিয়ে বুধবার আদালতে গিয়ে স্বামী শফিউল আলমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সাজু আক্তার।
বাদির বরাত দিয়ে আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বলেন, শফিউল আলম একই এলাকার এক মহিলার প্রেমে পড়েছেন। মহিলাটি তাকে বাড়ির ৮ গন্ডা জায়গা লিখে দিতে চায় বিয়ে করে বিদেশ নিয়ে যাওয়ার শর্তে। এজন্য শফিউল আলম তার স্ত্রী সাজু আক্তারের গর্ভধারণে আপত্তি তোলেন।

মুরাদ আরো বলেন, ভ্রুণ হত্যা একটি অমানবিক গুরুতর অপরাধ। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি একজন ভুক্তভোগী নারীর মাধ্যমে আদালতের নজরে আনা হয়েছে। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে চান্দগাঁও থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
আইএমই/কেএস








