তথ্য গোপন করে চট্টগ্রাম ওয়াসার কাজ করছে এফবিআইয়ে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান

0

চট্টগ্রাম ওয়াসার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) হাতে ধরা পড়া দক্ষিণ কোরিয়ার ‘কোলন গ্লোবাল কর্পোরেশন’ নামের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটিকে পরে ওয়াশিংটন ডিসির আদালত ৩৬০ মিলিয়ন ডলার জরিমানা করে। তথ্য গোপন রেখে দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ করছে এ প্রতিষ্ঠান। তাদের বিরুদ্ধে শ্রমিক মারধর, মালামাল চুরিসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা আছে রাঙ্গুনিয়া থানায়।

জানা গেছে, ২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার কোলন গ্লোবাল কর্পোরেশনের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান কোলন ইন্ডাস্ট্রিজ যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানির নিজস্ব প্যাটেন্টে ও মূল্যবান তথ্যচুরি করে এফবিআইয়ের হাতে ধরা পড়ে। পরে ওয়াশিংটন ডিসির অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল লেজলি কার্ডওয়েলের আদালত প্রতিষ্ঠানটিকে ৩৬০ মিলিয়ন ডলার জরিমানার পর কালো তালিকাভুক্ত করে।

এফবিআইয়ের ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে দীর্ঘ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কোলন ইন্ডাস্ট্রিজ আদালতে স্বীকার করেছে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মূল্যবান তথ্য চুরির কথা।

কোলন কর্পোরেশনের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ‘কোলন গ্লোবাল কর্পোরেশন’ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশে সরকারি প্রকল্পে কাজ করছে। এমনকি আরো বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ নিতেও চেষ্টা করছে তারা। এরমধ্যে রাঙ্গুনিয়ায় ওয়াসা কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্পের ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে তারা।

কিন্তু দরপত্রে বিভিন্ন তথ্য গোপনের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। একইভাবে সাব-কন্ট্রাক্টরদেরকে দিয়ে কাজ করিয়ে বিল পরিশোধ না করারও অভিযোগ রয়েছে কোলনের বিরুদ্ধে।

Yakub Group

এদিকে বিতর্কিত এ প্রতিষ্ঠানটি দেশের উন্নয়নের অংশীদার হওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং দেশের ভাবমূর্তি হুমকিতে পড়তে পারে। একইসঙ্গে দেশের মূল্যবান তথ্য পাচার হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন প্রকল্প বিশ্লেষকরা।

এছাড়া হাইকোর্টেও এ প্রতিষ্ঠানের নামে একাধিক রিট শুনানি চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।

কোলন কর্পোরেশন বাংলাদেশের প্রতিনিধি জেনারেল ম্যানেজার জি হু কিমের কাছে এ বিষয়ে জানতে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সাবেক প্রেসিডেন্ট খোরশেদ আলম বলেন, ‘এ ধরনের প্রজেক্ট আমাদের দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোই করতে সক্ষম। এসব ক্ষেত্রে বিদেশি কোম্পানি সম্পৃক্ত করার মানেই
দেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে চলে যাওয়া। যদি কোনো প্রতিষ্ঠান তথ্য গোপন করে কোনো কাজ নিয়ে থাকে তবে তাদের অর্থদণ্ডসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে কালো তালিকাভুক্ত করা উচিত। একইসঙ্গে বিদেশি কোম্পানিগুলো যেন দেশীয় ঠিকাদারদের পাওনা পরিশোধ না করে চলে যেতে না পারে, সে বিষয়েও সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর আইন প্রণয়ন করা উচিত।’

এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. ফয়জুল্লাহকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এমএ/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।

ksrm