চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার ওমান প্রবাসীর ২৬ ভরি স্বর্ণ লুট করেছে তিন ব্যক্তি। বাজার দরের চেয়ে ভরপ্রতি ৫ হাজার টাকা বেশি পাইয়ে দেওয়ার লোভে ফেলে ওই স্বর্ণগুলো নগরীতে আনিয়ে প্রবাসীর কাছ থেকে লুট করে তারা। অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়ে ওই তিন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) রাতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন পাঁচলাইশ থানার এসআই ইমাম হোসেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, রাউজান থানার কেউচটিয়া মাঝিপাড়া গ্রামের মো. ফারুকের ছেলে মো. রাসেল (২৫), একই থানার পশ্চিম ডাবুয়া গ্রামের মো. আলমগীরের ছেলে মোহাম্মদ হাসান (২২), নগরীর পাঁচলাইশ থানার বিবিরহাট বড় বাড়ির সালাউদ্দিনের ছেলে মো. তাজউদ্দীন (তাজু ২২)।
আসামীদের গ্রেফতার অভিযানে অংশ নেয়া এসআই ইমাম হোসেন মুঠোফোনে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘রাঙ্গুনিয়া থানার সৈয়দনগর এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে ওমান প্রবাসী আতিকুল্লাহ এনাম গত ২১ মার্চ দেশে আসেন। আসার সময় পরিবারের জন্য নিয়ে আসেন ২৬ ভরি স্বর্ণালংকার। কিন্তু স্বর্ণালংকার আনার খবর পেয়ে বর্তমান বাজার দরের চেয়ে ৫ হাজার টাকা বেশি দরে কেনার প্রস্তাব দেন একই থানার কেউটিয়া মাঝিপাড়া এলাকার মো. ফারুকের ছেলে মো. রাসেল। বেশি দামের লোভে পড়ে রাসেলের প্রস্তাবে রাজি হয় এনাম। গত ২৭ মার্চ সকাল সাড়ে এগারটার দিকে নগরীর সুন্নিয়া মাদ্রাসা রেলগেটের সামনে আসেন তিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেখানে দাঁড়িয়েই রাসেল এনামের কাছ থেকে ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকায় স্বর্ণগুলো কিনতে চুড়ান্ত দাম ঠিক করেন। স্বর্ণালংকার রাসেলের হাতে দিয়ে এনাম টাকাগুলো দিতে বলেন। রাসেল তখন জানান, সামনের একটি দোকানে গিয়ে তাকে টাকাগুলো দিবেন। একথা বলে রাসেল এনামকে তার সাথে সামনের একটি দোকানে আসতে বলেন। এ সুযোগে রাসেল পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি প্রাইভেটকারে এনামকে উঠিয়ে নেয়।
এসআই ইমাম হোসেন আরও বলেন, ‘গাড়িতে ছিলেন রাসেলের সহযোগী মো. হাসান ও তাজউদ্দিন তাজু। পরে গাড়িটি হামজারবাগ রেল বিটের কালভার্টের সামনে থামানো হয়। গাড়ি থামিয়ে রাসেল এনামকে জানায়, স্বর্ণ কেনার ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা তাৎক্ষনিক তিনি দিতে পারবেন না। দু-এক দিন পর এনামকে যোগাযোগ করতে বলেন রাসেল। কিন্তু এ ঘটনার দুইদিন পর রাসেল এনামকে ফোন করে জানায়, স্বর্ণের টাকা তিনি দিতে পারবেন না। টাকা চাইলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলবেন রাসেল। এরপর এনাম পাঁচলাইশ থানায় রাসেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।’
এদিকে এ অভিযোগ পেয়ে পাঁচলাইশ থানার এসআই ইমাম হোসেন, এসআই কামরুল আরেফিন, এএসআই শাহাদত হোসেন, এএসআই মিহির ভৌমিক অভিযানে নামেন এনামকে গ্রেফতারে।
চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী ও রাউজান থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এই তিনজনকে আটক করতে সক্ষম হন তারা। আটক তিনজনের কাছ থেকে প্রাইভেটকারসহ ২২ ভরি স্বর্ণালংকার এবং নগদ ২ লাখ ২৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
পরে আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। আসামীদের বুধবার (৩১ মার্চ) দুপুরে আদালতে চালান দেওয়া হবে বলে জানান এসআই ইমাম হোসেন।
এ বিষয়ে পাঁচলাইশ থানার ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়া চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েই আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে অভিযান পরিচালনা করি। রাত-দিন পরিশ্রম করে আমাদের টিম এই প্রতারক চক্রকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।’
আইএমই/এমএফও