s alam cement
আক্রান্ত
৮৬৪২৯
সুস্থ
৫৫৮২৪
মৃত্যু
১০১০

চট্টগ্রামে মাঝনদীতেই মারা গেলেন করোনারোগী, নিশ্চিত হতেই ফিরে গেল স্পিডবোট

0

তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে চট্টগ্রাম আসার পথে মাঝনদীতেই মারা গেলেন করোনা আক্রান্ত এক রোগী। আয়েশা বেগম (৬৫) নামে সন্দ্বীপের ওই বৃদ্ধাকে নিয়ে মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) দুপুরে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম রওনা দেন তার স্বজনেরা। কিন্তু মাঝনদীতেই তিনি মৃত্যুবরণ করলে তাকে আর চট্টগ্রাম না এনে স্পিডবোট ঘুরিয়ে সন্দ্বীপের দিকে আবার ফিরে যান স্বজনরা।

এর আগের দিন রাতে আয়েশা বেগমের মেয়ে সেলিনার (৩৮) শ্বাসকষ্ট হওয়ায় তাকে সিলিন্ডারের অক্সিজেন দিয়ে সেবা দেয় হিউম্যান টুয়েন্টিফোর নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। পরদিন সকালে তাকে চিকিৎসার জন্য শহরে আনা হয়। বর্তমানে সেলিনা সিএমএইচে আইসিইউ ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

হিউম্যান টুয়েন্টিফোরের অন্যতম উদ্যোক্তা হান্নান তারেক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘সোমবার (২ আগস্ট) রাতে বাউরিয়ার ৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে আমরা একটি কল পাই যে একজন রোগীর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তাদের অক্সিজেন লাগবে। সেলিনা নামের ওই রোগীর অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯০ ছিল। তার জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার দেওয়া হয়। পরে সকালে তিনি চট্টগ্রাম চলে যান।’

তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুরে হারামিয়া ২০ শয্যা হাসপাতাল থেকে আমাদের কাছে কল আসে এক বৃদ্ধা করোনা পজিটিভ। তার স্যাচুরেশন ৭০, অক্সিজেন সাপোর্ট লাগবে। তার জন্যও অক্সিজেন সিলিন্ডার পাঠানো হয়। ডাক্তাররা পরামর্শ দেন উনাকে দ্রুত চট্টগ্রামে নিয়ে যেতে। কিন্তু উনারা তখন চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না।’

‘পরে বাড়ি ফিরে প্রস্তুতি নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তার স্বজনরা। কিন্তু সন্দ্বীপ চ্যানেলের মাঝপথে তিনি মারা যান। উনাকে আর চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হয়নি। সেখান থেকেই স্পিড বোট ঘুরিয়ে উনাকে সন্দ্বীপ ফিরিয়ে আনা হয়’— স্বজনদের বরাত দিয়ে জানান হান্নান তারেক।

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত তিন দিনে এই উপজেলায় করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন ৭০ জন। তবে এর মধ্যে হাতেগোনা ২-৩ জন রোগী উপজেলা স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন। এই উপজেলায় ১০ শয্যার একটি আইসোলেশন ওয়ার্ড আছে বলে জানিয়েছেন উপজেলার আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. সাহেদুর রহমান।

Din Mohammed Convention Hall

তবে সেখানে খুব সীমিত অক্সিজেনের যোগান থাকায় রোগীদের খুব বেশি সেবা দেওয়া যাচ্ছে না বলেও জানান এই চিকিৎসক। তবুও কেউ কেউ সেখান থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন এমনটাই দাবি তার।

চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে তিনি বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে আজ ৪ জন রোগী ছিল। এর মধ্যে একজন আজ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বাকি ৩ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন।’

উপজেলায় এই মুহূর্তে কতগুলো অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের খুব সীমিত অক্সিজেন আছে। কতগুলো আছে তার সঠিক সংখ্যা আপনাকে বলতে পারছি না। তবে যা আছে সেগুলো ৫ লিটার করে ২-৩ জন রোগীকে দিতে গেলে ২ ঘণ্টায় শেষ হয়ে যায়। সন্দ্বীপে অক্সিজেন রিফিল করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা রোগীদের রেফার করে দিই।’

এই ১০ শয্যার আইসোলেশনের বাইরে এই উপজেলায় করোনার কোনো চিকিৎসা সুবিধা নেই। দুটি বেসরকারি হাসপাতাল থাকলেও সেসব হাসপাতালের সামনে বড় করে ‘এখানে করোনা রোগীর চিকিৎসা করানো হয় না’ শীর্ষক সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হান্নান তারেক।

ভৌগলিক কারণে বছরের এই সময়টাতে সন্দ্বীপ থেকে দেশের মূল ভূখন্ডে পৌঁছানোও বেশ দূরূহ ব্যাপার। এমন পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে রোগীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন স্বেচ্ছাসেবকরা।

এআরটি/কেএস/সিপি

ManaratResponsive

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।

ksrm