s alam cement
আক্রান্ত
১০২২৪৫
সুস্থ
৮৬৮৫৬
মৃত্যু
১৩২৫

চবিতে নেমেছে নানা প্রজাতির সাপ, এক সপ্তাহে কামড় খেল দুজন

শঙ্খিনী থেকে সবুজ বোড়া— সবই আছে

0

আবাসিক হল থেকে অনুষদ ভবন, বাসা-বাড়ি থেকে রাস্তা-ঘাট, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বত্রই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নানা প্রজাতির সাপ। এর মধ্যে গত এক সপ্তাহে আবাসিক হল ও রাস্তায় অন্তত দুজনকে দংশন করেছে সাপ। ফলে সাপের হঠাৎ উপদ্রবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানান তারা।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) রাতে দক্ষিণ ক্যাম্পাসের হতাশার মোড় থেকে গোলপুকুরপাড় সংলগ্ন রাস্তায় পথ চলতে গিয়ে বিষধর সবুজ বোড়া সাপের দংশনের শিকার হয়েছেন ফিশারিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেল রানা। পরবর্তীতে তাকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ও ভেনম রিসার্চ সেন্টারের শিক্ষানবিশ গবেষক রফিকুল ইসলাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, সোহেল রানাকে কামড় দেওয়া সাপটির নাম সবুজ বোড়া সাপ। ইংরেজিতে এটিকে Green Pit Viper সাপ বলে। এটি বিষধর, এর বিষে অনেক সময় ব্লাড সেল নষ্ট হয়ে যায় এবং রক্ত চলাচলে সমস্যা হয়। তাই সাপে কামড় দিলে শরীরে কোন প্রকার বাঁধ দিতে নিষেধ করা হয়। মৃত্যুঝুঁকি কম থাকলেও এই সাপের কামড়ে অঙ্গহানি ও অতিরিক্ত রক্তপাত ঘটতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ওই শিক্ষার্থী এখন সুস্থতার দিকে বলে জেনেছি। সবুজ বোড়া সাপের কোন নির্দিষ্ট এন্টিভ্যানম নেই। এর চিকিৎসা অন্য উপায়ে ডাক্তাররা করে থাকেন।

এর আগে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আব্দুর রব হলের ২৩৬ নম্বর রুম থেকে ঘরগিন্নি নামের একটি সাপ উদ্ধার করা হয়।

এর আগে রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাওল হলের ১১০ নম্বর কক্ষ পরিষ্কার করতে গিয়ে সাপের কামড়ে আহত হয়েছেন বাচ্চু মিয়া নামের প্রকৌশল দপ্তরের এক কর্মচারী। বেলা ১১টার দিকে তাকে সাপে কামড় দেয়। পরবর্তীতে তাকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এর আগে গত মঙ্গলবার একই হলের ১৩৩ নম্বর কক্ষ থেকে দাগি বেত আছড়া নামের আরেকটি সাপ উদ্ধার করেন রফিকুল ইসলাম।

আলাওল হলের প্রভোস্ট ড. নইম উদ্দিন হাছান আওরঙ্গজেব চৌধুরী বলেন, হলের দুটি কক্ষে সাপ পাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। হল থেকে সাপ তাড়াতে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষকদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।

এর আগে গত ২১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন দ্বিতীয় কলাভবনের একটি কক্ষ থেকে প্রাণঘাতী বিষধর শঙ্খিনী (Banded Krait) সাপ দেখতে পেয়ে নির্মাণ শ্রমিকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পরে সাপ উদ্ধারকারী একটি সংগঠনের সদস্যরা সেটি উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাচেলর শিক্ষক ডরমেটরি, শাহ আমানত হল, সোহরাওয়ার্দী হলের পাশের কলোনি থেকেও সম্প্রতি বেশ কিছু সাপ উদ্ধার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, এই সময়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় যে সাপটি বেশি দেখা যাচ্ছে তা হলো ঘরগিন্নি সাপ। এরা শীতকালে একটু উষ্ণতার জন্য ঘরের কোণে আশ্রয় নেয়৷ তবে এদের কোন বিষ নেই।

সাপের উপদ্রব কমাতে করণীয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সাপের প্রয়োজন আছে। লোকালয় থেকে সাপ তাড়াতে আবাসিক হল ও বাসা-বাড়ির আশে পাশের ঝোঁপ-ঝাড়, বন জঙ্গল পরিষ্কার রাখতে হবে। পাশাপাশি সেখানে গর্ত থাকলে তা ভরাট করে দিতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের ক্যাম্পাসে প্রচুর সাপের বিচরণ। এখন শীতকাল হওয়ায় হয়ত লোকালয়ে এদের বিচরণ বেড়ে গেছে। আমরা হল প্রশাসনকে বলবো সাপের উপদ্রব কমাতে যাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়।

এমআইটি/সিপি

ManaratResponsive

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।

ksrm