চারদিকে পাহাড়বেষ্টিত আয়তনে দেশের সর্ববৃহৎ বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার। ২১০০ একরের নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের মধ্যে অন্যতম হলো অপরূপা পাহাড়ি ঝরনা। এই ঝরনার সৌন্দর্য একদিকে যেমন সবাইকে বিমোহিত করে, অন্যদিকে ডাকে মৃত্যু হাতছানি দিয়েও।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঝরনা আয়তনে খুব একটা বড় নয়। তবুও এতে পড়লে বা নামলেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। গত সাত বছরে এই ঝরনায় প্রাণ গেছে চারজন শিক্ষার্থীর। তাই ঝরনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে নানা ধরনের কথা প্রচলিত আছে। অনেকে মনে করেন ঝরনাও অতিপ্রাকৃতিক কিছু আছে— ঝরনায় নামলে যা টেনে নিয়ে যায় গভীরে।
তবে শিক্ষার্থীদের এসব ধারণা উড়িয়ে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. অলক পাল বলেন, ‘এই ধরনের ধারণা সত্য না। ঝরনায় পড়ে মৃত্যুর অন্যতম কারণ হতে পারে ওপর থেকে লাফ দেওয়ার কারণে মাথায় আঘাতজনিত রক্তক্ষরণ। মাথায় আঘাত লাগলে খুব দ্রুত মৃত্যু হয়।’
একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ঝরনার যে দিকটাতে পানি পড়ে সেখানে একটা গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে। আর ঝরনার পানিগুলো খুব ভারী। সাঁতার কাটার উপযোগী না। যারা খাদের কাছাকাছি নামেন তারা পানির স্রোতে খাদের নিচে চলে যান। আর সেখানে পাথরে ও শ্যাওলার সাথে আটকে যান। আমরা ডুবুরিদের সাথে কথা বলে একই বিষয় জেনেছি।’
বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের চিফ মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মোহাম্মদ আবু তৈয়ব চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘গত ৭ বছরে আমি এই ঝরনায় চারজনকে মারা যেতে দেখেছি। আমার মনে হচ্ছে এই ঝরনায় পাথরজাতীয় কিছু একটা আছে, যেটা আটকে রাখে। ফলে উঠতে না পেরে তাদের মৃত্যু হয়।’
এটা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঝরনার চারপাশে কঠোরভাবে বেষ্টনী দিয়ে দিতে হবে। যাতে করে কেউ আর ঝরনায় যেতে না পারে।’
এমআইটি/সিপি