চান্দগাঁওয়ে অন্যের বাড়িতে তালা লাগিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগ কথিত ‘যুবলীগ নেতার’ বিরুদ্ধে

চট্টগ্রামের চান্দগাঁওয়ে জমি দখল করে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দোকান ও ভাড়া বাসায় হামলার অভিযোগ উঠেছে কথিত এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এমনকি জমির বদলে কোটি টাকা চাঁদা দাবির করেন বলেও জানান ভুক্তভোগীরা।

গত ৫ জুলাই হামলার ঘটনাটি ঘটেছে চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট এক কিলোমিটার মুহুরী বাড়িতে।

অভিযুক্ত কথিত যুবলীগ নেতার নাম জসিম উদ্দিন৷ তার সঙ্গে এই ঘটনার নেপথ্যে ছিলেন ৩৬ মামলার আসামি এসএম আসাদুজ্জামান ওরফে আসাদ ডাকাত।

s alam president – mobile

এ ঘটনায় ছয়জনের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।

অভিযুক্তরা হলেন ৬ নম্বর পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডের মোজাহের উল্লাহ মুহুরীর বাড়ির জামাল উদ্দিনের ছেলে বাহাদুর (৪৫), মৃত ফিরোজ বকতের ছেলে জসিম উদ্দিন (৬৫) ও তার মেয়ে নুসরাত তাসু, মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে মো. শাহজাহান (৪৭) ও তার ভাই মো. শাহিন (৪৫) এবং মৃত মো. শফিকের ছেলে এসএম মান্নান (৪২)।

ভুক্তভোগী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক উপ পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘১৯৫২ সালে আমার শ্বশুর এসএম আনোয়ারুর মতিন এই জমি ক্রয় করেন। পরে আমার স্ত্রী ফোজিয়া আনোয়ারাকে জমিটি দেন তিনি। কিন্তু এই জমিতে স্বত্ব দাবি করে সিরাজুল হক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করতে গেলে উপযুক্ত দলিল দেখাতে না পারায় তা খারিজ করেন আদালত।’

Yakub Group

সিরাজুল হকের ভাই ফিরোজ বখতের ওয়ারিশরা এলাকার ‘ভূমিদস্যু’ এসএম আসাদুজ্জামানকে সঙ্গে নিয়ে তাদের ওপর হামলা করেছে বলে জানান শহীদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘এই বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে জেনেও আসাদুজ্জামানের মিথ্যা প্রলোভনের আশ্বাসে জসিমসহ তার পরিবার আমাদের ওপর হামলা ও জমি দখলের চেষ্টা করছে। এছাড়া পারিবারিকভাবে সিরাজুল হকের ওয়ারিশরা তাদের জমি বুঝে পেলেও ফিরোজ বখতের ওয়ারিশ তাদের জমি পায়নি। শুধু তাই নয়, সিরাজুল হকের ওয়ারিশদের ন্যয্য সম্পদ প্রাপ্তিতে ভূমিকা রাখায় ফিরোজ বখতের ওয়ারিশ আমাদের ওপর ক্ষেপে আছে। এই বিষয়ে ফিরোজ বখতের ওয়ারিশদের কুপরামর্শ দিয়ে আসাদুজ্জামান বিরোধ সৃষ্টি করেছেন।’

জানা গেছে, গত ৫ জুলাই দুপুরে ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত অবৈধভাবে জমি দখলে হামলা চালান ফিরোজ বখতের ওয়ারিশ জসিম উদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন। সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করে সেখানে নিজের নামে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন। এই সময় তারা শহীদুল্লাহর ভাড়া দেওয়া দোকানে হামলা চালিয়ে নগদ টাকা ও মালামাল লুটপাট করে। পরে শহীদুল্লাহর ভাড়া দেওয়া ঘর থেকে ভাড়াটিয়া বের করে তালা ঝুলিয়ে দেন জসিম। ভাড়াটিয়া ফিরে আসলে তাদের হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়।

সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুরের আগের ফুটেজে দেখা গেছে, বেশ কিছু নারী সদস্যসহ জসিম উদ্দিন জমি দখলে আসেন। নারী সদস্যরা ভাঙচুর চালায়। ইট দিয়ে ঘরের দরজা ভাঙার চেষ্টা চালায়। তাদের মধ্যে একজন এসে সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করেন। জসিম এসে শহীদুল্লাহর বিল্ডিংয়ের গেটে তালা দেন। এছাড়া জসিমের উপস্থিতিতে দেয়ালে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী সাবেক দুদক কর্মকর্তা সৈয়দ মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ‘আমার স্ত্রী ফোজিয়া আনোয়ারার জমির অংশ থেকে জমি পাবে জানিয়ে জসিমসহ তার পরিবার আমাদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালাচ্ছে। এছাড়া জমির স্বত্ব দাবি করে ২০০৬ সালে একটি মামলা করলে উপযুক্ত কাগজপত্র দেখাতে না পারায় ২০১৩ সালে আদালত তা খারিজ করে দেন। এরপর আবারও জমি পাবে দাবি করছেন জসিম। জমি বা এক কোটি টাকা চাঁদা না দিলে তাদের এমন নির্যাতন সয়ে যেতে হবে বলে জানান জসিম।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে কথিত যুবলীগ নেতা জসিম উদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে তার নম্বরে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোনো জবাব দেননি।

আরএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!