বাংলাদেশ এখন আর ভারতের প্রেসক্রিপশনে চলবে না, চলবে জনগণের রায় ও জাতীয় স্বার্থে—চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে এক রাজনৈতিক পথসভায় এমন সাফ বার্তা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।
সোমবার (২৬ মে) বিকালে হাটহাজারী উপজেলা ডাকবাংলো চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে তিনি বলেন, এই দেশে আর জঙ্গি নাটকের নামে জনগণকে ধোঁকা দেওয়া যাবে না। বিগত সময়ে যেভাবে ধর্মকে ব্যবহার করে, জঙ্গি ইস্যু তৈরি করে জনগণকে ভীত-সন্ত্রস্ত রাখা হয়েছে, তা আর চলবে না।
তিনি বলেন, বিদেশি চাপ ও ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। কেউ চায় না বাংলাদেশ একটি স্বাধীন, স্বনির্ভর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়ে উঠুক। কিন্তু এই জাতি আর কাউকে নিজের কাঁধে ভর দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ দেবে না। এখন সময় জনগণের ভোটের মাধ্যমে পরিবর্তনের।
হিন্দু-মুসলমান নয়, আমরা সবাই বাংলাদেশি
ধর্মীয় সম্প্রীতির পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়ে হাসনাত বলেন, আমরা এমন একটি রাষ্ট্র চাই, যেখানে হিন্দু ভাইয়েরা ভয় না পেয়ে পূজা করবেন, মুসলমানরা নিশ্চিন্তে ঈদ করবেন এবং বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান নাগরিকরাও পূর্ণ নিরাপত্তায় থাকবেন। বাংলাদেশ কেবল একটি ধর্ম বা গোষ্ঠীর নয়—এটা আমাদের সবার।
তিনি আরও বলেন, উগ্রবাদ-সন্ত্রাসবাদ এই রাষ্ট্রের শত্রু। ঠিক তেমনি যারা এই ‘উগ্র’ তকমা ব্যবহার করে জনগণকে দমিয়ে রাখতে চায়, তারাও জনগণের শত্রু।
শাপলা, পিলখানা হত্যা—বিচার চাই এখনই
জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার পথে প্রতিবন্ধক হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন অতীতের কিছু দুঃসহ রাজনৈতিক অধ্যায়। তিনি বলেন, শাপলা চত্বরে যারা প্রাণ দিল, তাদের বিচার হয়নি। পিলখানায় যে হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল, তার রাজনৈতিক সত্য উন্মোচিত হয়নি। বৈষম্যের বিরুদ্ধে যারা কথা বলেছে, তাদের নিঃশব্দে গুম বা হত্যা করা হয়েছে। এসবের বিচার ছাড়া কোনো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অর্থবহ হবে না।
আওয়ামী বিধানে দেশ চলবে না
হাসনাত তার বক্তব্যের শেষাংশে বলেন, বর্তমান সংবিধান আসলে ‘আওয়ামী বিধান’। এটি একটি দলের প্রয়োজনে তৈরি। এটি জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। এখন সময় এসেছে একটি সর্বজনগ্রাহ্য সংবিধান ও অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার গঠনের, যার মাধ্যমে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনা যাবে।
জেজে/ডিজে