দেবের সিনেমার বিনিময়ে কলকাতায় গেল চট্টগ্রামের ভাষায় নির্মিত ছবি ‘ন ডরাই’
কলকাতায় প্রদর্শনের জন্য রপ্তানি করা হল চট্টগ্রামের ভাষায় নির্মিত দেশের প্রথম সার্ফিং বিষয়ক চলচ্চিত্র ‘ন ডরাই’। এর বিনিময়ে বাংলাদেশে আমদানি করা হয়েছে কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা দেবের নতুন সিনেমা ‘গোলন্দাজ’।
কলকাতার শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস প্রযোজিত সিনেমাটি সাফটা চুক্তির আওতায় দেশে আমদানি করেছে স্টার সিনেপ্লেক্স। তবে সিনেমাটি আমদানি হয়েছে শো মোশন লিমিটেডের ব্যানারে। বিনিময়ে কলকাতায় রপ্তানি করা হয়েছে ন ডরাই সিনেমাটি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ বিপণন কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ এবং সেন্সর বোর্ডের সচিব মোমিনুল হক।
মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘শো মোশন লিমিটেড সাফটা চুক্তির আওতায় গোলন্দাজ সিনেমাটি আমদানি করেছি এবং ন ডরাই সিনেমাটি রপ্তানি করেছি। আমরা আশা করছি আগামী সপ্তাহ থেকেই সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শন করতে পারব।’
ধ্রুব ব্যানার্জি পরিচালিত গোলন্দাজ সিনেমাটি মুক্তি পায় গত ১০ অক্টোবর। ভারতীয় ফুটবলের আদিপুরুষ নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারীর জীবন ও সে সময়ের ফুটবলচর্চা অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে এ সিনেমা। এর প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন দেব।
অন্যদিকে ন ডরাই সিনেমাটি স্টার সিনেপ্লেক্স প্রযোজিত সিনেমা। চট্টগ্রামের ভাষায় নির্মিত চলচ্চিত্র ‘ন ডরাই’ জিতে নেয় ২০১৯ সালের সেরা সিনেমার জাতীয় পুরস্কার। চলচ্চিত্রটি একইসঙ্গে অর্জন করে সেরা পরিচালক ছাড়াও সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কারও।
‘ন ডরাই’ সিনেমার জন্য সেরা পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তানিম রহমান অংশু। সিনেমাটি প্রযোজনা করেছেন মাহবুবুর রহমান রুহেল। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বাসিন্দা রুহেল সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের ছেলে।
‘ন ডরাই’— সার্ফিং নিয়ে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। তানিম রহমান অংশু পরিচালিত ছবিটির চিত্রনাট্য লিখেছেন কলকাতার শ্যামল সেনগুপ্ত। অভিনয় করেছেন শরিফুল রাজ, সুনেরাহ বিনতে কামাল, সাঈদ বাবু, জোসেফাইন লিন্ডেগার্ড প্রমুখ। একজন নারী সার্ফারের জীবন নিয়ে তৈরি ছবিটির গল্প গড়ে উঠেছে সত্য ঘটনা অবলম্বনে। এর প্রায় সব দৃশ্যধারণই হয়েছে কক্সবাজারে। প্রায় সব সংলাপই চট্টগ্রামের ভাষায়। তবে সেখানে এমনভাবে চট্টগ্রামের ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে সেটা বুঝতে সমস্যা হবে না দর্শকের।
শুরু থেকেই ছবিটি নিয়ে তর্ক-বিতর্কের শেষ ছিল না। শুরুতে ছবিটি দেখার পর সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা সন্তোষ প্রকাশ করলেও সংলাপ নিয়ে জানিয়েছিলেন আপত্তি। ‘ন ডরাই’ নামের সিনেমাটি তৈরি হয়েছে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায়। ‘আপত্তিকর’ আঞ্চলিক ভাষার সংলাপে সংশোধনী না আনলে ছবিটিকে সেন্সর সনদ দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছিল সেন্সর বোর্ড। শেষপর্যন্ত ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর ছাড়পত্র পায় ‘ন ডরাই’।
এরপর ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং অনৈতিকতার অভিযোগ তুলে ‘ন ডরাই’ সিনেমার সেন্সর বাতিল ও প্রদর্শনী বন্ধ করার জন্য আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী হুজ্জাতুল ইসলাম। এই ছবির মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং হযরত আয়শা (রা.) কে অপমান করায় নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানানো হয়। পরে অবশ্য বিষয়টি নিয়ে নোটিশদাতা আর এগোননি।
সিপি