প্রতিদিনের মতো সাতকানিয়া থেকে চকরিয়ায় নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছিলেন আব্দুল হান্নান। বাসে পাশের যাত্রী হান্নানের পায়ে অ্যালার্জি দেখে বলেন, তার কাছে এমন একটি ওষুধ আছে, যা খেলে সেরে যাবে এ্যালার্জি। সরল মনে সেই ওষুধ খাওয়ার পর অজ্ঞান হয়ে গেলে হান্নানের টাকা নিয়ে কেটে পড়ে অজ্ঞান পার্টির লোকজন। শেষ পর্যন্ত সেই সেই ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় এক সপ্তাহ পর প্রাণ হারান দুই সন্তানের জনক হান্নান।
গত ৩০ আগস্ট সাতকানিয়া-চকরিয়া সড়কে ঈগল পরিবহনের একটি গাড়িতে এমনই এক হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে। একসপ্তাহ আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থেকে মারা যান হান্নান।
নিহত হান্নান সাতকানিয়া উপজেলার চরপাড়ার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শামশুল আলমের ছেলে ৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ার পর অচেতন অবস্থায় হান্নানকে চকরিয়া বাসস্টপ থেকে উদ্ধার করেন বাসের হেলপার ও ড্রাইভার। অজ্ঞান পার্টির লোকেরা তার সঙ্গে থাকা ৫৬ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে গেলেও ভাগ্যক্রমে রেখে যায় হান্নানের বাটন ফোনটি। সেই ফোন থেকে কল করে হান্নানের পরিবারকে ঘটনাটি জানায় বাসের লোকজন।
জ্ঞান ফিরে আসার পর হান্নান তার পরিবারকে জানায়, পাশের সিটে বসা একজন হান্নানের পায়ের পুরোনো অ্যালার্জিটি দেখে এই বিষয়ে জানতে চান।। তখন ওই লোকটি বলেন, তার কাছে যে ওষুধ আছে, সেটি একবার খেলে চিরদিনের জন্য সেরে যাবে এই রোগ। বিশ্বাস করে সে ওষুধ খাওয়ার পরের ঘটনার কিছুই মনে নেই হান্নানের।
প্রথমে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হলেও অবস্থা বেগতিক দেখে হান্নানকে ৩০ আগস্ট ভর্তি করানো হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে। সেখান থেকে আইসিইউ সিটের জন্য পরের দিন পাঠানো হয় নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালে। সেখানে টানা এক সপ্তাহ আইসিইউতে থাকার পর মারা যান এই ব্যবসায়ী।
হান্নানের হত্যাকারীদের চিহ্নিত করা ও ঘটনার রহস্য উদঘাটনের দাবি জানান নিহতের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা।
বিএস/ডিজে