সিঙ্গাপুর থেকে ভিডিওকলে মায়ের মরদেহ দেখেই সান্ত্বনা খুঁজে নিয়েছেন দুই বছর আগে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করা চট্টগ্রামভিত্তিক বিতর্কিত শিল্পপতি সাইফুল আলম মাসুদ। মা চেমন আরা বেগমকে শেষ দেখা আর দেখতেন পারলেন না তার ছয় ছেলের কেউই।
রোববার (২০ অক্টোবর) ভোরে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান ৯২ বছর বয়সী চেমন আরা বেগম। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর বড় বোন।
চেমন আরার ছয় পুত্রসন্তানের মধ্যে সবার বড় মোরশেদুল আলম। তিনি ২০২০ সালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে মারা যান। সন্তানদের মধ্যে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ চতুর্থ। তার বাকি ছেলেরা হলেন রাশেদুল আলম খোরশেদ, শহীদুল আলম, আবদুস সামাদ লাবু, ওসমান গণি ও আবদুল্লাহ আহসান মুক্তা। চেমন আরা এছাড়া পাঁচ মেয়ের জননী।
রোববার (২০ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা থেকে চেমন আরা বেগমের লাশ নিয়ে আসা হয় চট্টগ্রামের পটিয়ায়। আসরের নামাজের পর পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয় জানাজা। জানাজায় বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম হলেও সাইফুল আলম মাসুদের হাতে নিয়োগ পাওয়া বিভিন্ন ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে হাতেগোনা কয়েকজনকে শুধু জানাজায় অংশ নিতে দেখা গেছে।
সন্ধ্যার আগে পটিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে এস আলম জামে মসজিদের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
সাইফুল আলম মাসুদ বর্তমানে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। তার ভাই আবদুস সামাদ লাবু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার আগেই সপরিবারে কানাডায় পালিয়ে যান। বাকি পাঁচ ভাইও বর্তমানে সিঙ্গাপুরে আছেন বলে জানা গেছে।
এস আলম পরিবারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভিডিওকলে মায়ের মুখ দেখেন সাইফুল আলম মাসুদসহ তার অন্য ভাইরা। তারা সেখান থেকে মায়ের মরদেহ দাফনের বিষয়েও বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন ঘনিষ্ঠদের। কানাডা থেকে মাসুদের ভাই আবদুস সালাম লাবু ভিডিওকলে যুক্ত হন। ইউনাইটেড হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসক হিসেবে যুক্ত রয়েছেন মাসুদের ভাগ্নে ডা. তানভীর আহমেদ।
পরে বিকেলে চট্টগ্রামের পটিয়ায় চেমন আরার মরদেহ নিয়ে আসার পর তার মরদেহ পটিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের এস আলম হাউসের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় সেখানে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। জানা গেছে, পটিয়ায় শেষ জানাজার আগে সেখানেও শেষবারের মতো মায়ের মুখ দেখতে ভিডিওকলে যুক্ত হন মাসুদ ও তার ভাইরা।
গত ২৫ আগস্ট এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলম মাসুদ, তার ছয় ভাই ও দুই ছেলেসহ পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্যের ব্যাংক হিসাবের সব ধরনের তথ্য তলব করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিআইএফইউ)। একই সঙ্গে তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংকে পরিচালিত হিসাব ও অন্যান্য তথ্যও চেয়ে পাঠানো হয়।
সিপি