চট্টগ্রামে পুলিশ সংস্কার নিয়ে ইপসার সংলাপ

চট্টগ্রামে পুলিশ সংস্কার নিয়ে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে কিভাবে নিরাপত্তা পরিষেবার মান আরও উন্নত করা যায়, পুলিশের সঙ্গে পারস্পরিক যোগাযোগ আরও সহজ করা যায়—সেসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) নগরীর একটি হোটেলে সংলাপের মাধ্যমে পুলিশ সংস্কারের পথে এসব পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বাস জানানো হয়। ‘পুলিশ সংস্কার বিষয়ে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর প্রত্যাশ্যা ও করণীয় শীর্ষক’ সংলাপটি আয়োজন করে ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল এ্যাকশান (ইপসা)। এতে কারিগরী সহায়তা প্রদান করে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)।

সংলাপে বক্তারা বলেন, পুলিশকে রাজনীতিমুক্ত রেখে নাগরিক সেবা প্রদানকারী সংস্থা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। পুলিশ হবে এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যা সামগ্রিকভাবে নাগরিকদের সেবা নিশ্চিত করবে। পুলিশ সংস্কারের মাধ্যমে পুলিশ যে জনগণের বন্ধু, তার বাস্তব প্রতিফলন নিশ্চিত করতে হবে। নিয়োগ বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য এবং মামলা বাণিজ্য বন্ধ করে শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত পুলিশ বাহিনী গঠন করতে হবে। থানাগুলোকে সংস্কার করে জনবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। পুলিশের বেতন কাঠামো সংস্কার করে দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।

বক্তারা পুলিশি ব্যবস্থার সংস্কারকে একটি সম্মিলিত প্রয়াস হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, যেখানে সাধারণ মানুষের মতামত ও অংশগ্রহণের গুরুত্ব অপরিসীম। এই সংলাপ যেন সেই জনমতেরই প্রতিচ্ছবি হয়।

সংলাপে কিভাবে জনগণের জন্য নিরাপত্তা পরিষেবার মান আরও উন্নত করা যায় এবং পুলিশের সঙ্গে তাদের পারস্পরিক যোগাযোগ আরও সহজ ও বন্ধুত্বপূর্ণ করা যায়—সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। অংশগ্রহণকারীরা তাদের নিজ নিজ অভিজ্ঞতা ও প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন। পুলিশের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার ওপর বিশেষ জোর দেন বক্তারা।

সংলাপে পুলিশ বাহিনীর সামনে থাকা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করেন এবং একটি আধুনিক ও জনমুখি পুলিশি কাঠামো তৈরির জন্য তাদের মূল্যবান সুপারিশ উত্থাপন করা হয়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক আমীর মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ’র পরিচালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন ইপসার পরিচালক (অর্থ) পলাশ চৌধুরী।

অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি নেসার উদ্দিন আহমেদ এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) শাকিলা সোলতানা।

বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর এবিএম আবু নোমান, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহ জালাল মিশুক, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রামের উপ- সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শ্রমিক নেতা তপন দত্ত, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. সাদিকা সুলতানা চৌধুরী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রিদুয়ান সিদ্দিকী, নীলা আফরোজ, আরিফ মঈনুদ্দীন, তাওহীদ আলিফ, সিটিজেন ফোরামের সহ-সভাপতি মো. আবু সাঈদ সেলিম, ইলমার প্রধান নির্বাহী জেসমিন সুলতানা পারু, অ্যাডভোকেট মিলি চৌধুরী।

আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারের ভিক্ষু ড. সুমন প্রিয়, রাষ্ট্রচিন্তা’র প্রতিনিধি সিয়াম আল জাকি, স্বপ্নীল ব্রাইট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আলী শিকদার, ব্র্যাকের বিভাগীয় ম্যানেজার নজরুল ইসলাম, ব্রাইট বাংলাদেশ ফোরামের প্রধান নির্বাহী উৎপল বড়ুয়া।

সংলাপের শেষে বক্তারা জানান, আলোচনার মাধ্যমে উঠে আসা সকল মতামত ও সুপারিশ একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন আকারে পুলিশ সংস্কার কমিশনের কাছে জমা দেওয়া হবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm