চট্টগ্রামে মাছচুরির মামলা ঘিরে রহস্য, সাম্পানে ১২ কেজি, মামলায় দেখানো ৩৬!
সাম্পান জব্দ, গ্রেপ্তার ৩ শ্রমিকের পরিবারে ক্ষোভ
চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে ৩৬ কেজি মাইয়া মাছ চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে তিন শ্রমিককে আটক করে পুলিশে দিয়েছে সী-রিসোর্সেস হোল্ডিংস লিমিটেড নামক কোম্পানির লোকজন। পরে কর্ণফুলী পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে মামলা পাঠিয়েছে নৌ–পুলিশে। ঘটনার পর পুরো বিষয়টি রহস্যে ঘেরা বলে অভিযোগ উঠেছে। সী-রিসোর্সেস হোল্ডিংস র্যাংগস গ্রুপের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিএমপি কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম ও নৌ পুলিশের ওসি মিজানুর রহমান।
জানা গেছে, মামলায় ৩৬ কেজি মাছ দেখানো হলেও গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে সাড়ে ১২ কেজির মতো মাছ উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি পরিবারগুলোর। এছাড়া এজাহারে বোট দেখানো হলেও জব্দ হয়েছে একটি ইঞ্জিন চালিত সাম্পান।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে কর্ণফুলীর ইছানগর এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—মো. আব্দুর রহমান (২৮), মো. সেলিম (২৯) এবং মো. আবু তাহের লিটন (২৮)।
ইছানগর সী-রিসোর্সেস হোল্ডিংস লিমিটেডের কোল্ড স্টোরেজ ও জেটি থেকে ৩৬ কেজি মাইয়া মাছ চুরির অভিযোগেই মামলাটি করা হয়। নৌ–পুলিশ জানায়, তাদের কাছ থেকে একটি সাম্পান জব্দ করা হয়েছে।
তবে পরিবারগুলোর দাবি ভিন্ন। তারা বলছে, তিনজনই দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে আসছেন। উদ্ধারকৃত মাছগুলো ছিল ‘বাতিল হওয়া পচা মাছ’, যার মূল্য সর্বোচ্চ ৩–৫ হাজার টাকা।
তাদের বিরুদ্ধে ‘ইন্ধনপ্রাপ্ত মহলের ষড়যন্ত্রে’ মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ পরিবারের। এমন কি সাম্পান মাঝিদের একটা জায়গা নিয়েও নানা ষড়যন্ত্র করছে ওই কোম্পানিটি। তবে তার সত্যতা যাচাই-বাছাই করা সম্ভব হয়নি।
কর্ণফুলী উপজেলা হস্তচালিত বড় সাম্পান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মোজ্জামেল বলেন, ‘গ্রেপ্তার তিনজন আমাদের সদস্য। কোম্পানি প্রভাব খাটিয়ে নিরীহ শ্রমিকদের গ্রেপ্তার করিয়েছে। সাম্পানে পাওয়া গেছে ১২–১৩ কেজি মাছ, আর মামলায় দেখানো হয়েছে ৩৬ কেজি। এভাবে শ্রমিকদের এলাকা থেকে তাড়ানোর চেষ্টা চলছে।’
এ বিষয়ে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘সী-রিসোর্সেস গ্রুপ লিমিটেড মাছ চুরির অভিযোগে মামলা করেছে। সেই মামলার ভিত্তিতেই গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।’
তবে সী-রিসোর্সেস গ্রুপ লিমিটেড কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে একাধিকবার কল করা হলেও কেউ ফোন রিসিভ করেনি। এমনকি এলাকার জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে খবর পৌঁছালেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।


