নতুন করে প্রশ্নের মুখে সিএমপির দক্ষিণ জোন: টানা ৫ আইসি বদলি, ফাঁড়িতে অস্থিরতা

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) দক্ষিণ জোনে ফাঁড়ি পর্যায়ে বদলির ধাক্কা একবারেই থামছে না। মাত্র এক সপ্তাহ আগে দক্ষিণ জোনের পাঁচ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (আইসি) বদলির পর নতুন আদেশে আবারও ওই পাঁচ আইসিসহ ১০ পুলিশ কর্মকর্তাকে বিভিন্ন ইউনিটে রদবদল করা হয়েছে।

৭ ডিসেম্বর সিএমপি কমিশনার স্বাক্ষরিত সর্বশেষ আদেশ অনুযায়ী পাঁচ ফাঁড়ির সদ্য বদল হওয়া আইসিসহ সার্জেন্ট, নিরস্ত্র ও স্বশস্ত্র এসআই মিলিয়ে ১০ কর্মকর্তাকে চট্টগ্রামের ৮টি ইউনিটে বদলি করা হয়।

ওই আদেশে বলা হয়েছে—সার্জেন্ট কনক কান্তি ভৌমিককে লাইনওআর থেকে ট্রাফিক পশ্চিমে, এসআই মো. আব্দুল মতিনকে লাইনওআর থেকে পিওএম, এসআই নাজিম উল হক ইমরানকে লাইনওআর থেকে দক্ষিণ বিভাগে, এনায়েত বাজার ফাঁড়ির আইসি এসআই মিজানুর রহমান চৌধুরীকে দক্ষিণ বিভাগ থেকে উত্তর বিভাগে, সিআরবি ফাঁড়ির আইসি এসআই মনিরুল আলম খোরশেদকে দক্ষিণ বিভাগ থেকে বন্দর বিভাগে, আসকারদীঘি ফাঁড়ির আইসি এসআই মো. রবিউল আলমকে দক্ষিণ থেকে পশ্চিম বিভাগে, পাথরঘাটা ফাঁড়ির আইসি এসআই মো. জসিম উদ্দিন ভূঁইয়াকে দক্ষিণ থেকে উত্তর বিভাগে, বক্সিরহাট ফাঁড়ির আইসি এসআই মো. আরিফুল ইসলামকে দক্ষিণ থেকে বন্দর বিভাগে এবং এসআই সতেজ বড়ুয়াকে ডিবি দক্ষিণ থেকে ডিবি উত্তর, এসআই রাজিব কান্তি দেকে বন্দর বিভাগ থেকে প্রসিকিউশন পার্ট–২ জোনে বদলি করা হয়েছে বলে সিএমপি সূত্রে জানানো হয়েছে।

এর আগে ২ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম প্রতিদিনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়—৫ আগস্টের পর দীর্ঘদিন একই জোনে দায়িত্ব পালন করা তিনজন আইসিসহ পাঁচ ফাঁড়ির ইনচার্জকে আচমকা বদলি করা হয়েছিল। সেই সময় ডিসি দক্ষিণ মো. আলমগীর হোসেনের স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়, জনস্বার্থ ও কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বিবেচনায় এই বদলি করা হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন একই এলাকায় থাকা আইসিদের সঙ্গে কিছু অপরাধী চক্রের ঘনিষ্ঠতা তৈরি হওয়ার কারণে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এমন পরিস্থিতি কয়েকটি মামলার তদন্তেও প্রভাব ফেলছে বলে দাবি করা হচ্ছে। ২৭ নভেম্বর কোতোয়ালী থানার ২০০ গজ দূরে জেলা পরিষদ ভবনের সামনে চা–বিক্রেতা ইসমাইলকে ছুরিকাঘাতে হত্যা মামলার সিসিটিভি ফুটেজ থাকা সত্ত্বেও এখনও কোনো গ্রেপ্তার হয়নি।

বৈষম্যবিরোধী আইনের ক্ষেত্রেও চট্টগ্রামে অগ্রগতি ধীর। সারাদেশে ১ হাজার ৭৮৫টি মামলা চললেও চট্টগ্রামে মাত্র দুটি চার্জশিট দেওয়া হয়েছে—খুলশী ও চাঁন্দগাঁও থানায়। এছাড়া কোতোয়ালীসহ কিছু থানায় চার্জশিট অসম্পূর্ণ থাকায় অতিরিক্ত সময় লেগেছে, খুলশী থানার চার্জশিটে নারাজি থাকায় ডিবি মামলা, চাঁন্দগাঁও থানার চার্জশিট সম্পূরক করতে হয়েছে।

টানা বদলি, তদন্তে ধীরগতি এবং জোনভিত্তিক স্থায়িত্ব—সব মিলিয়ে সিএমপির ফাঁড়ি পর্যায়ে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তৈরি করছে।

ksrm