নাবিকের মদ-বিয়ার চলে যাচ্ছে ক্লাব-বারে, চট্টগ্রামের ৫ শিপ স্টোর এনবিআরের নজরদারিতে

0

নাবিকদের জন্য এনে খোলাবাজারে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে বিপুল টাকার মদ-বিয়ার— এমন অভিযোগ পেয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের পাঁচটি শিপ স্টোরকে নজরদারিতে নিয়ে আসার কাজ শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এসব শিপ স্টোরে সমুদ্রগামী জাহাজের নাবিক ও ক্রুরা নিজেদের ব্যবহার্য সামগ্রী কিনতে পারেন।

শুল্ক না থাকার সুযোগে গত অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দরের এই পাঁচ শিপ স্টোরের চারটিই মদ-বিয়ার-সিগারেটসহ ১৯ লাখ ৮০ হাজার ডলারের পণ্য চট্টগ্রামে আমদানি করেছে বিদেশ থেকে। ধারণা করা হচ্ছে, এসব পণ্যের বেশিরভাগই চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের ক্লাব ও বারে বিক্রি করা হয়েছে অবৈধভাবে।

বর্তমানে দেশে মোট ছয়টি শিপ স্টোর রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটিই চট্টগ্রাম বন্দরে এবং বেলাজিও লিমিটেড নামে অপর একটিই শুধু মোংলা বন্দরে। চট্টগ্রাম বন্দরভিত্তিক পাঁচটি শিপ স্টোর হচ্ছে— বেলাজিও লিমিটেড, পোর্টল্যান্ড সার্ভিসেস, সি ওয়েজ বন্ডেড ওয়্যারহাউজ, পোর্টল্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল এবং হারবার্ট সন্স (বিডি)। এই শিপ স্টোরগুলোতে সমুদ্রগামী জাহাজের নাবিক ও ক্রুদের জন্য মদ-বিয়ার-সিগারেট ছাড়াও ওষুধ, জাহাজের যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ, পেইন্ট, বার্নিশ, কেমিক্যাল, জ্বালানি, লুব্রিকেন্ট ইত্যাদি বিক্রি হয়ে থাকে।

গত অর্থবছরেও চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরে এসেছে ৫ হাজার ৫৪২টি জাহাজ। এসব জাহাজের বিপুলসংখ্যক নাবিক ও ক্রু শুল্কমুক্ত শিপ স্টোরগুলোতে কেনাকাটা করে থাকে।

জানা গেছে, দেশে বৈধভাবে মদ-বিয়ার আমদানি করা হলে শুল্ক ধরা হয় উচ্চহারে। এ কারণে বিভিন্ন ক্লাব ও বারের কাছে মদ-বিয়ার আমদানির অনুমতিপত্র থাকলেও তাদের বেশিরভাগই সেদিকে না গিয়ে ভিন্নপথে এসব সংগ্রহ করে। ধারণা করা হয়, এক্ষেত্রে ক্লাব ও বারগুলোতে মদ-বিয়ারের চাহিদা মেটে মূলত চট্টগ্রাম বন্দরভিত্তিক এসব শিপ স্টোর থেকে। নাবিকদের জন্য আনা মদ-বিয়ার অবৈধভাবে শুধু চট্টগ্রাম-ঢাকাতেই নয়, চলে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তেও।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যাপারে কিছু কিছু তথ্য থাকলেও বিষয়টি নিয়ে খুব একটা উচ্চবাচ্য হয়নি। তবে সম্প্রতি এনবিআর এ নিয়ে তৎপর হয়ে ওঠেছে। গত ৩১ জানুয়ারি শিপ স্টোরগুলোর কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য সভা আহ্বান করে এনবিআর। সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় শিপ স্টোরস পরিচালনা ও লাইসেন্স প্রদান নীতিমালার খসড়া নিয়ে আলোচনা হয়। শিপ স্টোরগুলোকে মনিটরিং করার জন্য বিশেষায়িত সফটওয়্যার তৈরি করার নির্দেশও দেওয়া হয় এ সভায়।

এনবিআরের এ সংক্রান্ত খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, বন্দরে আগত বা বহির্গামী আন্তর্জাতিক জাহাজের একজন ক্যাপ্টেন বা ক্রু একক আগমন বা বহির্গমনে সর্বোচ্চ ৫০০ ডলারের পণ্য কিনতে পারবেন। তবে একদিনে আড়াইশ ডলারের বেশি পণ্য কিনতে পারবে না। বন্দর ত্যাগের সময় দেশি-বিদেশি নাবিক বা ক্রুরা ২ হাজার ডলারের পণ্য কিনতে পারবে।

খসড়া নীতিমালায় প্রস্তাব করা হয়েছে, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা পর্যায়ের একজন বন্ড অফিসার শিপ স্টোরের সামগ্রিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবে। এজন্য শিপ স্টোরে রাখতে হবে অফিস কক্ষও।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।

ksrm